ধর্ষণের পর অগ্নিদগ্ধ
জখম তরুণীকে পাঠানো হতে পারে কলকাতায়
র্ষণের পর পুড়িয়ে মারার চেষ্টায় গুরুতর জখম তরুণীর চিকিৎসা চলছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। উন্নত চিকিৎসার জন্য বাগডোগরার ভুজিয়াপানির ওই তরুণীকে কলকাতার পিজি হাসপাতালে রেফার করার কথা ভাবছেন কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তরুণীর মুখ-সহ দেহের উপরের অংশ ঝলসে গিয়েছে। গত ১৪ ডিসেম্বর ভোরে আগুনে দগ্ধ অবস্থায় ২৬ বছরের ওই তরুণীকে প্রতিবেশী এবং বাড়ির লোকেরা এলাকারই একটি চালা ঘর থেকে উদ্ধার করেন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই পরিস্থিতি থেকে এখন অনেকটা ভাল থাকলেও তাঁর মুখ, বুক এবং হাতের অংশ যে ভাবে ঝলসে গিয়েছে, তাতে স্বাভাবিক অবস্থায় আনতে প্লাস্টিক সার্জারি প্রয়োজন। তাই তাঁকে কলকাতার পিজি হাসপাতালে রেফার করার কথা ভেবেছেন কর্তৃপক্ষ। তরুণীর বাবা সামান্য ভ্যানচালক। পরবর্তী চিকিৎসা খরচও তাই হাসপাতালের তরফেই করার কথা ভাবা হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব মৌখিক ভাবে দেওয়া হয়েছে পুলিশের তরফেও। এ দিন রাজ্য মহিলা কমিশনের তরফেও ওই তরুণীর উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে তাঁকে পি জি হাসপাতালে রেফার করার বিষয়টি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। মহিলা কমিশনের সদস্য জোৎস্না অগ্রবাল জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি মহিলা কমিশনের বৈঠকে জানানো হয়েছে। ওই তরুণীকে পুরোপুরি সুস্থ করতে সাহায্যের জন্য স্বাস্থ্য দফতরে আবেদন করা হবে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী দাস বলেন, “ওই তরুণীকে যে পরিস্থিতিতে ভর্তি করানো হয়েছিল, এখন তিনি তার চেয়ে অনেকটাই সুস্থ। তিনি অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন, এ ধরনের রোগীদের যে কোনও সময় সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। সেই পরিস্থিতিও অনেকটা কেটেছে।” তিনি জানান, হাতের পুড়ে যাওয়া অংশ আরও একটু ভাল হলে কলকাতায় পি জি হাসপাতালে রেফার করা হবে। হাসপাতালের তরফেই ওই তরুণীর চিকিৎসা করানো হবে। প্রয়োজনে হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গেও এ ব্যাপারে তাঁরা কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। পুলিশের তরফে নার্সিংহোমে তরুণীকে নিয়ে যাওয়ার কোনও প্রস্তাব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এখনও পাননি। তবে সুপার মনে করেন, এখন যা পরিস্থিতি তাতে প্লাস্টিক সার্জারি হতে পারে এমন কোনও জায়গায় পরিবারের লোকেরা নিয়ে যেতে পারেন। অন্যথায় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যে পরিষেবা মিলছে, তাতে অন্য জায়গায় নেওয়ার প্রয়োজন নেই। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার বলেন, “মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা ঠিক মতো হচ্ছে বলেই জেনেছি। তবে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে কলকাতায় নিয়ে যেতে হলে সব রকম সাহায্য করা হবে।”
পুলিশ তরফে ওই তরুণীর চিকিৎসার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তাঁরা নিয়মিত খোঁজ নিচ্ছেন। এ দিন জখম তরুণীর বাবাকেও পুলিশের তরফে নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার মৌখিক প্রস্তাব দেওয়া হয়। তরুণীর বাবা বলেন, ‘‘হাসপাতালের চিকিৎসায় ক্রমেই সুস্থ হচ্ছে মেয়ে। এই অবস্থায় নার্সিংহোমে নেওয়ার যে প্রস্তাব পুলিশের তরফে দেওয়া হয়েছে তা ভেবে দেখব। শুরুতে মেয়ের পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক ছিল। সে সময় নার্সিংহোমে নিলে ভালই হত।” এখন সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠছে দেখে তাঁরা এখানকার চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে আস্থাশীল বলে জানান। তবে পরবর্তী চিকিৎসার জন্য বা প্লাস্টিক সার্জারির জন্য অন্যত্র নেওয়ার আর্থিক অবস্থায় তাঁদের নেই। সে ক্ষেত্রে হাসপাতাল বা পুলিশের তরফে সাহায্য তাঁরা আশা করছেন। উল্লেখ্য, গত ১৪ ডিসেম্বর রাতে প্রতিবেশীর বাড়িতে কীর্তন শুনতে গিয়েছিলেন ভুজিয়াপানির ওই তরুণী। রাতে বাড়ি ফিরছে দেখে পরিবারের লোকেরা তাঁর খোঁজ করেন। তরুণীর বাবা জানান, পরদিন ভোরে প্রতিবেশীদের চিৎকারে তাঁদের ঘুম ভেঙে যায়। তাঁর মেয়ে একটি ঘরে অগ্নিদগ্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে জেনে সেখান থেকে উদ্ধার করেন। বাগডোগরা হাসপাতালে নিয়ে যান। তরুণীদের একটি বাড়ি পরেই ওই যুবকরা বাড়ি তৈরি করছেন। সেখানেই টিনের চালা ঘরে ওই তরুণীকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
হাসপাতালে তরুণী বলেন, “কীর্তন থেকে ফেরার পথে রাত ৮টা নাগাদ অভিযুক্ত যুবক আমাকে ধরে। আগে এলাকায় দেখলেও তার সঙ্গে কোনও দিন কথা হয়নি। আমার মুখে কিছু চেপে ধরলে সংজ্ঞা হারাই। জ্ঞান ফিরতেই দেখি একটা ঘরে রয়েছি। আমার সঙ্গে যে অন্যায় করেছে তার প্রতিবাদ করাতে আগুন লাগিয়ে ওই যুবক পালিয়ে যায়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.