নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে নৈশ প্রহরীদের মারধর করে হাত-পা বেঁধে রেখে মাথায় রিভলবার ধরে সোনার দোকানে লুঠপাট চালিয়ে পালাল দুষ্কৃতীরা। বুধবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া থানার অনতিদূরে কদমতলা বাজারে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। দিন তিনেকের ভিতরে একের পর এক সোনার দোকানে ডাকাতিতে সন্ত্রস্ত ব্যবসায়ীরা পুলিশের উপরে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। আগের দু’টি ডাকাতির ঘটনায় দুষ্কৃতীরা এখনও গ্রেফতার না হওয়ায় এবং লুঠের মালপত্র উদ্ধার না হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।
বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তিনটি ডাকাতির ঘটনায় লুঠপাটের ধরন দেখে মনে হচ্ছে একটি দলই জড়িত। দুষ্কৃতীদের ধরতে জোর তল্লাশি চলছে।”
প্রসঙ্গত, গত সোমবার হাড়োয়ায় তিনটি দোকানে ও বুধবার ভোররাতে বাদুড়িয়ায় পর পর দু’টি দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই দু’টি ক্ষেত্রে পুলিশের তদন্ত চলার মধ্যেই ফের ডাকাতির ঘটনা ঘটল বাদুড়িয়ায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, খোলাপোতা-মসলন্দপুর রোডে বাদুড়িয়া থানার অদূরে কদমতলা বাজারে সোনার দোকান রাধেশ্যাম দত্ত ও সুবীর সিংহের। রাত তখন ১টা হবে। নৈশপ্রহরী সুধীর গাইন ও অশোক দত্ত রাতপাহারা দিচ্ছিলেন। সুধীরবাবুর কথায়, “হঠাত্ দেখি অন্ধকারে দু’জন এগিয়ে আসছে। এগিয়ে গিয়ে টর্চের আলো ফেলতেই নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে কাছে ডাকে। ওদের কথা শুনে কাছে যেতেই স্বমূর্তি ধরে দুষ্কৃতীরা। ততক্ষণে দুষ্কৃতীদের আরও কয়েকজন জড়ো হয়েছে। আমাদের দু’জনকে প্রচণ্ড মারধর করে, হাত-পা বেঁধে মুখে লিউকোপ্লাস্ট লাগিয়ে একটা ঘরে বন্ধ করে দেওয়া হয়।” সোনার দোকানের পাশেই ছিল তেলকল। ডাকাতির সুবিধার জন্য দুষ্কৃতীরা রাজু মণ্ডল ও দিলীপ দেবনাথ নামে তেলকলের দুই কর্মীরও হাত-পা বেঁধে একই ঘরে ফেলে রাখে। এর পরে গ্যাসকাটার দিয়ে সাটার ভেঙে দোকানে ঢুকে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে লুঠপাট চালিয়ে পালিয়ে যায়। তারা চলে যাওয়ার পর কোওরকমে বাঁধন খুলে নৈশপ্রহরীরা থানায় খবর দেন। পুলিশকে তাঁরা জানিয়েছেন দুষ্কৃতীরা দলে ১২-১৪ জন ছিল।
তিনদিনের মধ্যে বার বার সোনার দোকানে ডাকাতিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। বাদুড়িয়া ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক স্বপন ঘোষ বলেন, “এলাকায় চুরি-ডাকাতি লেগেই রয়েছে। অথচ বার বার বলা সত্ত্বেও প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। উল্টে পুলিশ বলছে লোকের অভাব, গাড়ির অভাব। এই অবস্থায় আমরা ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।” |