বর্ধিত ভাড়া নিয়ে যাত্রী ও কন্ডাক্টরের বচসার জেরে চারদিন ধরে পুরোপুরি বন্ধ দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘি-ডায়মন্ড হারবার এম-১০ রুটের মিনিবাস। স্বাভাবিক ভাবে চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন ওই রুটের যাত্রীরা। চারদিন ধরে এই অবস্থা চলেও জেলা পরিবহণ দফতরের পক্ষ থেকে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়দিঘি থেকে ডায়মন্ড হারবার পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার এম-১০ রুটের ৩৫টি মিনিবাস চলে। গত ৩১ অক্টোবর থেকে রাজ্য সরকারের বর্ধিত বাসভাড়া চালু হয়েছে। নতুন তালিকায় রায়দিঘি থেকে ডায়মন্ড হারবার পর্যন্ত ভাড়া ঠিক হয় ৩১ টাকা। পুরনো ভাড়া ছিল ১৬। একধাপে এতটা ভাড়া বাড়ায় তা নিয়ে নিত্যযাত্রীদের সঙ্গে কন্ডাক্টরদের অশান্তি লেগেই ছিল। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এলে ২০ নভেম্বর ফের সরকারি ভাবে সংশোধিত বাড়ার তালিকা প্রকাশ করা হয়। তাতে ওই দূরত্বের ভাড়া দাঁড়ায় ২৮টাকা। এই নতুন ভাড়াই দিচ্ছিলেন যাত্রীরা। কিন্তু ফের গত ৩ জানুয়ারি পরিবহণ দফতর থেকে হঠাত্ ভাড়ার তালিকা পাঠানো হয়। ওই তালিকা অনুযায়ী ভাড়া দাঁড়ায় ১৮ টাকা ৫৫ পয়সা। কিন্তু এ বার বাসমালিকেরা এই ভাড়ায় আপত্তি জানান। তাঁরা আগের ২৮টাকা ভাড়াতেই অনড় থাকেন। এর ফলে ফের যাত্রী ও বাস কন্ডাক্টরদের মধ্যে গোলমাল বাধে। গত ৪ জানুয়ারি এই ভাড়া নিয়ে গোলমালের জেরেই রায়দিঘি থানার মোড়ে জনা কয়েক যাত্রী ও অটোচালকদের একাংশ মিনিবাস চলাচল বন্ধ করে দেন। এ ব্যাপারে রায়দিঘি অটোরিকশা ইউনিয়নের আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি অনিল হালদার বলেন, “ওরা নির্ধারিত ভাড়া নিচ্ছে না বলে যাত্রীরাই মিনিবাস বন্ধ করে দিয়েছেন।” তিনি আরও বলেন, “ভাড়া নিয়ে অশান্তি থামাতে থানার উদ্যোগে আয়োজিত এক সভায় বাসমালিকদের ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা আসেননি।” যদিও বাসমালিক ইউনিয়নের সম্পাদক রইচউদ্দিন মোল্লা বলেন, “ওরা মিথ্যা বলছে। ওই নেতার মদতেই বাস আটকে রাখা হয়েছিল। বরঞ্চ আমরা সভা ডাকলেও থানায় ওরা কেউ আসেনি।” বাসমালিকদের পাল্টা দাবি, ওই রুটে বেআইনি অটোর দৌরাত্ম্যে তাঁরা অতিষ্ঠ। এতে তাঁদের ব্যবসার প্রভূত ক্ষতি হচ্ছে। অথচ প্রশাসনকে বার বার জানালেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। মথুরাপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কংসমোহন কয়াল বলেন, “সমস্যার সমাধানে বাসমালিকদের সঙ্গে নিয়ে সভা ডাকার ব্যবস্থা হচ্ছে।”
জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের আধিকারিক (আরটিও) চপল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে মিটিংয়ে ব্যস্ত। পরে কথা বলব।” |