|
|
|
|
ক্লাব অনুদানের টাকা বিলির ক্ষেত্রেও দলবাজির অভিযোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
ক্লাবগুলোকে অনুদানের অর্থ দেওয়া নিয়েও দলবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠল। আজ, শুক্রবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এই অনুদানের অর্থ দেওয়া হবে। যে সব ক্লাব প্রথম অনুদানের অর্থ পাবে, তাদের দু’লক্ষ টাকা করে, আর যে সব ক্লাব গত বছর অনুদানের অর্থ পেয়েছে, তাদের ফের এক লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। অভিযোগ, পশ্চিম মেদিনীপুরে বিরোধী বিধায়কদের এলাকা থেকে ক্লাব বাছার ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখা হয়নি। জঙ্গলমহলের বাম বিধায়কদের এলাকা থেকে কয়েকটি ক্লাব বাছা হলেও জেলার অন্য এলাকার বাম বিধায়করা মূলত ব্রাত্য থেকে গিয়েছিলেন। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের নির্বাচনী এলাকা নারায়ণগড়ের একটিও ক্লাব অনুদান তালিকায় ঠাঁই পায়নি। অথচ ডেবরা বাদে জেলার বাকি সব তৃণমূল বিধায়কের নির্বাচনী এলাকা থেকে ক্লাবের নাম তালিকায় রয়েছে।
কেশপুরের সিপিএম বিধায়ক রামেশ্বর দোলুই বলেন, “কারা টাকা পাচ্ছে, কী জন্য পাচ্ছে, কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার নির্বাচনী এলাকার একটি ক্লাবকেও অনুদানের অর্থ দেওয়া হচ্ছে না। সরকারের পক্ষ থেকে কেউ কোনও তালিকাও চাননি।” তৃণমূলের মতে, রাজ্য সরকার সকলকে নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছে। দলবাজি করলে কোনও বিরোধী বিধায়কদের নির্বাচনী এলাকা থেকেই ক্লাব বাছা হত না। পশ্চিম মেদিনীপুরের মোট ৬৯টি ক্লাব এ বার অনুদান পাচ্ছে। এরমধ্যে নয়াগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক দুলাল মুর্মুর নির্বাচনী এলাকার ১০টি, মন্ত্রী তথা ঝাড়গ্রামের তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার হাঁসদার নির্বাচনী এলাকার তিনটি, ঘাটালের তৃণমূল বিধায়ক শঙ্কর দোলুইয়ের নির্বাচনী এলাকার ১০টি, শালবনির তৃণমূল বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোর নির্বাচনী এলাকার ১০টি, মেদিনীপুরের তৃণমূল বিধায়ক মৃগেন মাইতির নির্বাচনী এলাকার ১০টি, দাসপুরের তৃণমূল বিধায়ক মমতা ভুঁইয়ার নির্বাচনী এলাকার ১০টি, বিনপুরের সিপিএম বিধায়ক দিবাকর হাঁসদার নির্বাচনী এলাকার ৭টি, চন্দ্রকোনার সিপিএম বিধায়ক ছায়া দোলুইয়ের নির্বাচনী এলাকার ৪টি, পিংলার বাম বিধায়ক প্রবোধচন্দ্র সিংহের নির্বাচনী এলাকার ১টি, কেশিয়াড়ির সিপিএম বিধায়ক বিরাম মাণ্ডিনর্বাচনী এলাকার ১টি, দাঁতনের সিপিআই বিধায়ক অরুণ মহাপাত্রের নির্বাচনী এলাকার একটি, সবংয়ের কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার নির্বাচনী এলাকার দু’টি ক্লাব রয়েছে।
যে সব ক্লাব এ বার প্রথম অনুদানের অর্থ পাচ্ছে, সেই তালিকায় নাম নেই একমাত্র ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক রাধাকান্ত মাইতির নির্বাচনী এলাকার কোনও ক্লাবের। তবে গত বছর এই এলাকার ছ’টি ক্লাবকে ২ লক্ষ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছে। এ বার ওই ছ’টি ক্লাব আরও ১ লক্ষ টাকা করে পাচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, গত বছর অনুদান পেয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুরের এমন ২৭টি ক্লাব এ বার আরও এক লক্ষ টাকা করে পাবে। তবে এই দুই তালিকায় নাম নেই নারায়ণগড়, কেশপুর, গড়বেতা, খড়্গপুর, খড়্গপুর (সদর) প্রভৃতি এলাকার। এর প্রত্যেকটিতেই রয়েছেন বিরোধী দলের বিধায়কেরা। নারায়ণগড় বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের নির্বাচনী এলাকা। কেশপুর, গড়বেতা, খড়্গপুরের বিধায়কেরাও সিপিএমের প্রতীকে নির্বাচিত। অন্য দিকে, খড়্গপুর (সদর) প্রবীণ কংগ্রেস বিধায়ক জ্ঞানসিংহ সোহন পালের নির্বাচনী এলাকা। সেখানকার কোনও ক্লাবও তালিকায় জায়গা পায়নি। যে সিপিএম বিধায়কের নির্বাচনী এলাকার ক্লাব অনুদান পাচ্ছে, বিনপুরের সেই দিবাকর হাঁসদাও বিষয়টি নিয়ে নিজের অসন্তোষ গোপন করছেন না। তাঁর কথায়, “গত বছর আমার কাছ থেকে একটি তালিকা চাওয়া হয়েছিল। ক’দিন আগে জানতে পারলাম, সেই তালিকার কয়েকটি ক্লাব এ বার অনুদানের অর্থ পাবে। এ বার নতুন করে আমাকে কিছু জানানো হয়নি।” |
|
|
|
|
|