কর্মসমিতির সদস্যই বিদ্রোহী
বাগানে এ বার ‘গৃহযুদ্ধ’
কেয়া অর্থ পেয়ে যাবেন, কর্তারা এই প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় ঘোষণামতো বৃহস্পতিবার অনশনে বসেননি ওকোরি চিমা।
চিমা-কাঁটা কোনওক্রমে সামাল দিলেও বৃহস্পতিবার মোহনবাগানের প্রধান কর্তাদের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিলেন কর্মসমিতিরই এক সদস্যকলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ। যাঁদের প্যানেলে জিতে কমিটিতে এসেছেন সেই টুটু-অঞ্জন-সৃঞ্জয়দের কার্যত পদত্যাগ দাবি করে ‘গৃহযুদ্ধে’-র পরিস্থিতি তৈরি করে দিলেন অতীন। সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে বলে দিলেন, “ঐতিহ্যের এবং লাখ লাখ সদস্য-সমর্থকের কথা ভেবে ফেডারেশনের উচিত নিবার্সন তুলে নেওয়া। ডার্বি ম্যাচে দল তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে কর্তারা, ফেডারেশন মনে করলে সেই কর্তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিক।” এই দাবিতে উত্তর কলকাতায় ক্লাবের ধাত্রীগৃহ মোহনবাগান লেনে আজ শুক্রবার সকাল থেকে স্বাক্ষর অভিযান চালাবেন অতীনবাবু। যেখানে ১৯১১-র আই এফ এ শিল্ড জয়ের এগারো যোদ্ধার আবক্ষ মূর্তি আছে তার সামনেই হবে ক্লাবকে বাঁচানোর আবেদনের স্বাক্ষর সংগ্রহ। শোনা যাচ্ছে গত শতাব্দীর সাত ও আটের দশকে মোহনবাগানের ‘ঘরের ছেলে’ তকমাধারী বেশ কয়েক জন প্রাক্তনও তাতে হাজির থাকছেন।
শূন্য সে বেঞ্চ। বুধসন্ধ্যায় কল্লোলহীন বাগান তাঁবু। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
এ বার কর্মসমিতির সদস্য হয়ে এলেও বরাবরই ক্লাবের নানা কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকেন পুরপিতা অতীন। মোহনবাগান দিবসে বড় মিছিল করেন। সেই কট্টর মোহনবাগানী বললেন, “ডার্বি ম্যাচে দল তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তের সময় আমাদের সঙ্গে কোনও কথাই বলা হয়নি। দু’চারজন কর্তা মিলে এত বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এঁদের জন্য স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে জুড়ে থাকা আমাদের শতবর্ষের ক্লাব শাস্তি পাবে কেন? মোহনবাগান অন্য আর-পাঁচটা ক্লাব নয়। সেটা আমরা লিখে পাঠাচ্ছি ফেডারেশন কর্মসমিতির সব সদস্যের কাছে। আবেদন করব ১৫ জানুয়ারি ক্লাবকে যেন দ্বিতীয় ডিভিশনে নামিয়ে না দেওয়া হয়।”
শাসক গোষ্ঠীর প্যানেলে জিতে আসা এক সদস্য আপনাদের পদত্যাগ দাবি করছেন, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন? তীব্র চাপে থাকা মোহনবাগান সচিব অঞ্জন মিত্র বললেন, “একশোটা সিদ্ধান্তের মধ্যে কেউ একটা বিষয়ে সহমত নাই হতে পারেন। তা বলে সে আমাদের শত্রু নয়। তবে কর্মসমিতির সভা ডেকে আমরা পুরো ব্যাপারটা বলেছিলাম। সেখানে অতীনবাবু ছিলেন না। পরে ওকে সব বুঝিয়ে বলা হয়েছিল।”
ঘরের ঝগড়া বাড়ার ভয়ে অতীনের বিরুদ্ধে পালটা তোপ না দাগলেও ফেসবুকে চিমার পোস্টে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ মোহনবাগান কর্তারা। তাঁদের ক্ষোভ গিয়ে পড়েছে চিমার ক্লায়েন্ট ওডাফা ওকোলির উপরও। মোহন-সচিব বলে দিলেন, “ওডাফা অন্য কিছু না ভেবে নিজের খেলায় মন দিক। সেটা ও করছে না।” এ দিনই দুর্গাপুরে ক্লাবেরই অ্যাকাডেমি টিমের সঙ্গে খেলা ছিল করিম বেঞ্চারিফার টিমের। করিমের টিম জেতে ২-০ গোলে। তিরিশ মিনিট খেলেও ওডাফা-টোলগে জুটি গোল করতে পারেননি। গোল করেন দীপেন্দু বিশ্বাস ও মণীশ ভার্গব।
মোহনবাগান আই লিগের দ্বিতীয় ডিভিশনে নেমে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় সোশ্যাল নেটওয়ার্কে তীব্র ক্ষোভ আছড়ে পড়ছে প্রতিদিন। তাঁবুতে কর্তাদের পদত্যাগ দাবি করে কয়েক দিন মিছিল-সভা হওয়ার পর এখন ব্যাপারটা কার্যত পাড়ায় পাড়ায় ছড়িয়ে পড়ছে। গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে সুব্রত ভট্টাচার্য তোপ দাগছেন তো পুরসভায় বসে কর্মসমিতির সদস্য অতীন। তাঁবুতে জমাট অন্ধকার। ছড়িয়ে ছিটিয়ে কয়েক জন মাত্র। বিক্ষোভের ভয়ে নিয়ম করে বিকেলে দু’চারজন পুলিশ প্রধান গেটে বসে থাকছেন। ঝামেলার ভয়ে ওডাফাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে দুর্গাপুরে। সেখানে তাঁরা নৌকোবিহার করছেন ঠিকই কিন্তু মন পড়ে কলকাতায়। নবিদের ফুটবল জীবনটাই যে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছেন ক্লাব কর্তারা। এ দিনই ফেডারেশনের ১৫ জানুয়ারির বৈঠকে হাজির হওয়ার জন্য সরকারি ভাবে চিঠি এল বাগান তাঁবুতে। তার আগেই গৃহযুদ্ধে বেসামাল ক্লাব।

অপেক্ষায় আইএফএ
বাগান নিয়ে ১৫ জানুয়ারি ফেডারেশনের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আইএফএ-ও! আই লিগে নথিভুক্তরা সন্তোষ ট্রফিতে খেলতে পারেন না। তবে মোহনবাগানের শাস্তি বহাল থাকলে বাংলার হয়ে খেলতে সমস্যা থাকবে না রহিম নবিদের। এমনিতে ৪৬ জনের প্রাথমিক দল বাছা হয়েছে। ১৪ জানুয়ারি থেকে সাইতে এক সপ্তাহের ট্রায়াল শুরু হতে পারে। সেখান থেকে বাছা হবে ২৫-২৬ জনকে। এর পর ৮-৯ দিনের আবাসিক শিবির। কোচির উদ্দেশে ১৪ ফেব্রুয়ারি দল রওনা দেবে। বাংলার প্রথম ম্যাচ ১৭ ফেব্রুয়ারি। কোচ মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য। এ দিন তাঁর সহকারী করা হল সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.