|
|
|
|
মামলা বিচ্ছেদের |
মাছ-ডিম খাওয়ায় প্রায় অচ্ছুত বধূ |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
স্বামী নিরামিষাশী, স্ত্রী আমিষ খান। এই ফারাক থেকেই সম্পর্কে ফাটল। এবং বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলা।
পণ নেওয়া, বধূ-নির্যাতন, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক এমন অনেক বিষয় নিয়ে বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলার কথা আকছার শোনা যায়। বিষয়সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে স্বামী ও স্ত্রীর ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার দৃষ্টান্ত ভূরি ভূরি। মানসিক ভারসাম্যহীনতা অথবা যৌন অক্ষমতা নিয়েও বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলা হয় প্রচুর। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিরা অনেক ক্ষেত্রেই স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে, কিছু দিন বেড়াতে পাঠিয়ে তাঁদের ফের সাংসারিক জীবনে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু এটা একেবারে আমিষ-নিরামিষ কাজিয়া। বিচারপতি তপন দত্ত বৃহস্পতিবার ওই দম্পতির সঙ্গে কথা বলেন। বোঝানোর চেষ্টা করেন, আমিষ-নিরামিষ খুব বড় ব্যাপার নয়। এর জন্য সংসার ভাঙবেন কেন? কত বিষয়েই তো মতবিরোধ থাকে! তার পরেও জীবন চলে।
মোনালিসা ও আশুতোষ গায়েনের বিয়ে হয় ২০১০ সালে। ছ’মাস তাঁরা একসঙ্গে ছিলেন। স্বামী সল্টলেকে ইলেকট্রনিক কমপ্লেক্সে কাজ করেন। মোনালিসা গোপালনগর বিদ্যালয়ের পার্শ্বশিক্ষিকা। আদালতে নিজের আবেদনে মোনালিসা জানিয়েছেন, বিয়ের পরে তিনি জানতে পারেন, স্বামীর পরিবার বৈষ্ণব। তাঁরা আমিষ খান না। মাছ, ডিম বা মাংস কিছুই চলে না। কিন্তু মোনালিসা আমিষভোজী। বিয়ের পর থেকে তাঁকে রান্নাঘরে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। টেবিলে বসে খাওয়ার অনুমতিও নেই তাঁর। প্রায় অচ্ছুতের মতো ব্যবহার করা হয়। স্বামীর কাছ থেকেও তিনি একই রকম ব্যবহার পেয়েছেন।
এত কিছুর পরেও মোনালিসা একসঙ্গে থাকতে রাজি। তবে বিবাহিত জীবনে নিজের পছন্দের খাওয়াদাওয়া বা নিজের মতো করে জীবনযাপনের অবকাশ না-থাকাটা তিনি মানতে পারেন না। স্বামী-স্ত্রী অনেক মতবিরোধ নিয়েও সংসার করে। তিনিও চান। কিন্তু নিজের সম্মানের সঙ্গে আপস করে নয়। মামলাটি এ দিন শেষ হয়নি। বিচারপতি ওই দম্পতিকে বিষয়টি ভেবে দেখার সময় দিয়েছেন। ফেব্রুয়ারিতে ফের শুনানি হবে। |
|
|
|
|
|