কড়েয়া-কাণ্ড
‘অভিযোগকারী’ জেলে, জামিন ‘অভিযুক্তদের’
বেআইনি অস্ত্র কারবারের একাধিক অভিযোগ ঝুলে আছে তাদের নামে। সঙ্গে যোগ হয়েছে কড়েয়ায় এক যুবককে চপারের ঘায়ে জখম করার সাম্প্রতিক অভিযোগ। আলিপুর কোর্ট-চত্বরে বৃহস্পতিবার দুপুরে এই চার জনকে দিব্যি খোশমেজাজে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেল। তাদের নিয়ে আসতে পুলিশ ভ্যানের দরকার পড়েনি। ধারে-কাছে কোনও রক্ষীও নেই। মোবাইলে খোশগল্পের সুরে যুবকদের এক জন কাকে বলছিলেন, পুলিশ কোর্টে হাজিরা দিতে বলেছে। তাই একটু এসেছি। ঘণ্টাখানেক বাদে বিচারকের নির্দেশে জামিন পেয়ে যেতে হাসতে হাসতেই তারা বেরিয়ে গেল।
বুধবার সকালে সামসুল হুদা রোডে ফৈয়াজ আহমেদ খান নামে এক যুবককে ছুরি মারার ঘটনাতেই এই চার জনের প্রতি পুলিশের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তেরা হল আবিদ হোসেন, ইমরান হোসেন, মহম্মদ আহমেদ ও শেখ তনবির (তন্নু)। কলকাতা পুলিশের ডিসি (সাউথ-ইস্ট) দেবব্রত দাস এ দিন বলেন, “ওই চার জনের বিষয়ে কিছু বলব না।”
ওই চার যুবকের বিরুদ্ধে বেআইনি অস্ত্র কারবারের জামিন-অযোগ্য অভিযোগ থাকলেও কেন তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না, লালবাজারের কর্তাদের কাছে তার কোনও সদুত্তর মেলেনি। অথচ, এই পুলিশের একচোখোমির হাতে-গরম নমুনা রয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই। যেমন, ফৈয়াজ আক্রান্ত হওয়ার পরে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়ে উল্টে নিজেই গ্রেফতার হয়ে গিয়েছেন তাঁর দাদা আরমান। ডিসি-র বক্তব্য, “আরমানের বিরুদ্ধে মারপিট ছাড়াও মহিলাদের সঙ্গে অভব্যতার অভিযোগ রয়েছে।” এ দিনই আরমানকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় কোর্ট।
স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন, আরমানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ঝুলে থাকলে আগে কেন তাঁকে ‘ছাড়’ দিয়েছিল পুলিশ? অন্য একটি অভিযোগ জানাতে থানায় যাওয়ায় তাঁকে গ্রেফতার হতে হল কেন?
আরমানের আইনজীবী মহম্মদ আফতাব আলমের এ দিন দাবি, “আরমান-ফৈয়াজরা অনেক দিন ধরেই কড়েয়ার কাশিয়াবাগান লেনে একটি বেআইনি নির্মাণের প্রতিবাদ করতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের তোপের মুখে পড়েছে। পুলিশ ধারাবাহিক ভাবে ওই দুষ্কৃতীদেরই মদত দিয়ে চলেছে।” ডিসি পুলিশের বিরুদ্ধে এই অভিযোগও মানতে নারাজ। তিনি বলেন, “ওখানে পুরনো একটি নির্মাণ নিয়ে আদালতের রায় রয়েছে। দু’পক্ষকেই আদালতের কাগজপত্র আনতে বলেছি।”
কড়েয়ার প্রতিবাদী যুবক আমিনুল ইসলামের অপমৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই পুলিশের বিরুদ্ধে এলাকার দুষ্কৃতীদের একাংশের প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে। অভ্যন্তরীণ তদন্তে সেই অভিযোগ কার্যত মেনেও নিয়েছেন লালবাজারের কর্তারা। থানার তিন পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ডও করা হয়েছে। আরমান-ফৈয়াজদের অবস্থার সঙ্গে এখন আমিনুলের পরিবারের সঙ্কটের কিছুটা মিল পাচ্ছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আবিদ-ইমরানদের চাপে ফৈয়াজদের পরিবার এখন ঘরছাড়া। ফৈয়াজরা ছ’ভাই সপরিবার রীতিমতো নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন। পুলিশ অবশ্য এই ধরনের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেছে, যা হয়েছে তা আইন মেনেই।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.