রাজ্য থেকে পাঠানো চতুর্থ শ্রেণির কর্মী পদে নিয়োগের প্যানেল নিয়ে সঙ্কটে জেলা সেচ দফতর। গত সপ্তাহেই জেলা সেচ দফতরে রাজ্য থেকে পাঠানো প্যানেল জেলায় এসে পৌঁছেছে। ৬০টি কর্মী পদে কাদের নিয়োগ করা হবে তাদের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর লেখা রয়েছে। চলতি মাসে নিয়োগ প্রক্রিয়া সেরে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্যানেলের কথা জানাজানি হতেই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে অবৈধ বলে ঘোষণা করে ঘেরাও আন্দোলন শুরু করেছে বাম ও কংগ্রেস। প্যানেল ধরে নিয়োগ পত্র দেওয়া শুরু হলেই লাগাতার দফতর অবরোধ করার হুমকি দিয়েছে যুব কংগ্রেস। বিরোধীদের দাবি কোনও লিখিত বা মৌখিক পরীক্ষা না নিয়ে যে প্যানেল তৈরি হয়েছে তা অবৈধ। এই পরিস্থিতিতে প্রতিদিন রাজনৈতিক দলের স্মারকলিপি এবং ঘেরাওয়ে জেরবার জেলা সেচ দফতর থেকে রাজ্যের কাছে কী করণীয় জানতে চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে বলে দফতর সূত্রের খবর। তবে সরকারি ভাবে সেচ দফতর সূত্রে কিছু জানানো হয়নি। দফতরের অধীক্ষক বাস্তুকার গৌতম দত্ত বলেন, “এ বিষয়ে কিছু বলার জন্য আমি দায়িত্বপ্রাপ্ত নই।”
আজ বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের জলপাইগুড়িতে পৌঁছনোর কথা। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার ৬০টি কর্মী পদে নিয়োগের জন্য সম্প্রতি রাজ্য দফতর থেকে গত শুক্রবার একটি প্যানেল এসেছে। সেই অনুয়ায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। প্রায় সাড়ে ৬ হাজার টাকা মাসিক বেতনের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী পদে নিয়োগের জন্য রাজ্য দফতর থেকে একটি প্যানেল জেলায় এসে পৌঁছেছে।
রাজ্য দফতরের নির্দেশে বলা হয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমোদিত এই প্যানেলের ভিত্তিতে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া সারতে হবে। এই প্যানেল এবং নির্দেশটি গোপনীয় বলেও উল্লেখ্য করেছে রাজ্য সেচ দফতর। রাজ্যের সেচ সচিবের দফতর থেকেই নির্দেশটি এসেছে বলে জানা গিয়েছে। যুব কংগ্রেসের অভিযোগ, প্যানেলে যাদের নাম রয়েছে তাঁরা সকলেই শাসক দল তৃণমূল কর্মী অথবা তৃণমূল নেতাদের আত্মীয়। জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সভাপতি শুভ্রজিত কর বলেন, “তৃণমূল যাঁরা করেন, তাঁরা অনেক ত্যাগ করেই দলটা করেন। কে চাকরি পেল আর কে পেল না, সেটা দেখা তাদের কাজ নয়। এটা সরকারের বিষয়। তবে এতটুকু বলতে পারি বাম জামানায় বহু অবৈধ নিয়োগে কংগ্রেসের নেতা কর্মীদের চাকরিও পেছন দরজা দিয়ে কিন্তু হয়েছে। তবে তৃণমূল সরকারে আমলে একটাও অবৈধ নিয়োগ হচ্ছে না। হবেও না।”
প্যানেল বাতিলের দাবিতে গত মঙ্গলবারই প্রায় দেড় ঘণ্টা ঘেরাও বিক্ষোভ করে যুব কংগ্রেস। দলের জলপাইগুড়ি লোকসভা কমিটির সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কোনও পরীক্ষা হল না। বাছাই হল না। কিন্তু নিয়োগ হয়ে গেল! তা হলে রাজ্যে পরিবর্তন আর কোথায় হল? যে ভাবেই হোক এই নিয়োগ রোখা হবে।” ডিওয়াইএফের জেলা কমিটির সদস্য দীপশুভ্র সান্যাল জানিয়েছেন, প্যানেল বাতিলের দাবিতে সেচ দফতরে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। যতদিন না বাতিল হবে লাগাতার আন্দোলন চলবে বলে তিনি হুমকি দেন। |