নিজস্ব সংবাদদাতা • শামুকতলা |
চারদিকে ছড়িয়ে আছে থার্মোকলের থালা। প্লাস্টিকের গ্লাস। নেই পানীয় জলের ব্যবস্থা। ভরসা ডলোমাইট গোলা পাহাড়ি নদীর জল। বেহাল রাস্তা। আলিপুরদুয়ার-২ এবং কুমারগ্রাম ব্লকের পিকনিক স্পটগুলির এমন বেহাল দশায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে বিভিন্ন মহলে। পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে গড়ে ওঠা কয়েকটি পিকনিক স্পট ইতিমধ্যে বন্ধ হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে উদাসীনতার। পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তারা অবশ্য জানান, পরিকল্পনা নেওয়া হলেও আর্থিক সমস্যার জন্য পিকনিক স্পটগুলি উন্নয়নে কোনও কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে ২০০৫ সাল থেকে ওই দুই ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় পিকনিক স্পটগুলি গড়ে তোলা হয়। সেগুলি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং বন সুরক্ষা কমিটিগুলিকে। অভিযোগ, প্রথম দিকে সহযোগিতা করা হলেও পরে মুখ ফিরিয়ে নেন পঞ্চায়েত কর্তারা। বেহাল হতে শুরু করে পরিষেবা। ফাঁসখোয়া পিকনিক স্পটের রক্ষনাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সম্পাদক বিনয় মিন্জ বলেন, “শামুকতলা থেকে ফাঁসখোয়ার দুরত্ব ২০ কিমি। গোটা রাস্তা বেহাল। শীতে নদীতে জল থাকে না। কিন্তু বিকল্প জলের ব্যবস্থাও নেই। সমস্যার কথা পঞ্চায়েত কর্তাদের কয়েকবার জানিয়ে লাভ হয়নি। কে এখানে পিকনিক করতে আসবে!” |
শামুকতলার একটি পিকনিক স্পট। রাজু সাহার তোলা ছবি। |
একই অবস্থা কুমারগ্রামের রায়ডাক ও সংকোশ নদীর ধারে টিয়ামারি, নিউল্যান্ড এলাকার পিকনিক স্পটের। আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকের পরো এবং সিকিয়াঝোরা পিকনিক স্পট দু’বছর চলার পরে বন্ধ হয়েছে। শামুকতলার কাছে লালপুল এলাকায় স্থানীয় দুটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী পিকনিক স্পট চালু করে। সেটাও বন্ধ হয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বনির্ভর করার জন্য হইচই করে পিকনিক স্পটগুলি চালু করা হয়। কিন্তু পরে আর নজর দেওয়া হয়নি। অথচ পঞ্চায়েতের তরফে নজরদারি ঠিক মতো থাকলে শুধু যে স্থানীয় বাসিন্দারা রোজগারের সুযোগ পেত সেটাই নয়, পঞ্চায়েতের রাজস্ব বাড়ত। আলিপুরদুয়ার ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অর্চনা দাস উদাসীনতার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “পিকনিক স্পটগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নে বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হয়ে যাবে।” পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বাসন্তি কেরকাট্টা বলেন, “পিকনিক স্পটগুলি উন্নয়নে কিছু পরিকল্পনা হয়েছে। টাকার সমস্যার জন্য কাজ করা যাচ্ছে না।” কুমারগ্রামের বিধায়ক দশরথ তিরকে জানান, পঞ্চায়েত কর্তারা চাইলে বিধায়ক তহবিল থেকে সাহায্য করা যেতে পারে। তিনি বলেন, “প্রকল্প তৈরি করে পাঠালে অর্থ বরাদ্দ করা যেতে পারে। কিন্তু কেউ তো কিছু বলছেন না।” |