নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
দশম শ্রেণির ছাত্র দীপঙ্কর সরকারকে অপহরণ ও খুনের অভিযোগে তার দুই বন্ধুকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বুধবার দুপুরে মাটিগাড়া থানার তুম্বাজোত থেকে ওই দু’জনকে প্রথমে আটক করা হয়েছিল তাদের। জেরার পরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম সুধন সরকার ও মনোজ সরকার। পুলিশের দাবি, মনোজের বাড়ি থেকে দীপঙ্করের মোবাইল ফোনটি উদ্ধার হয়েছে। ধৃতরা দু’জনেই দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার বলেন, “দীপঙ্কর নিজেই সুধন ও মনোজের সঙ্গে ওই চা বাগানে গিয়েছিল। সেখানেই দীপঙ্করকে খুন করা হয়। তারপরে ওই দু’জন দীপঙ্করের বাবাকে ফোন করে টাকা দাবি করে। ধৃত দু’জন খুনের কথা স্বীকার করেছে। তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, দীপঙ্করের এক খুড়তুতো ভাইয়ের সূত্রেই ওই দু’জনের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় দীপঙ্করের। এ দিন সন্ধ্যায় পুলিশ কমিশনার দাবি করেন, সম্প্রতি একটি জমি বিক্রি করে ৬০ লক্ষ টাকা পান দীপঙ্করের বাবা গোপাল সরকার। তা থেকে ২০ লক্ষ টাকা নেওয়ার জন্য দীপঙ্কর নিজে অপহরণের গল্প তৈরির ছক কষেছিল বলে কমিশনারের দাবি। সেই মতো সুধন ও মনোজকে নিয়ে ছক কষে ৪ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ দীপঙ্কর বাড়ি থেকে বের হয়। মাটিগাড়ায় গিয়ে সে ওই দুই বন্ধুর সঙ্গে দেখা করে। সেখান থেকে মদ ও কিছু খাবার কিনে তাঁরা তিনধারিয়ার কাছে সিপাইধুরা চা বাগানে যায়। সেখানে গিয়ে মদ খাইয়ে দীপঙ্করকে বেহুঁশ করে খুন করা হয় বলে পুলিশের সন্দেহ। এর পর দীপঙ্করেরই মোবাইল থেকে ফোন করে গোপালবাবুর কাছে ২০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। কিন্তু দীপঙ্কর নিজে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ছক করেছিলেন, তা তাঁর পরিবারের লোকজন মানতে নারাজ। গোপালবাবু বলেন, “দীপঙ্কর খুব সরল। আমার কাছে যখন যা চেয়েছে তা-ই দিয়েছি। সে টাকার জন্য এমন করবে, তা হতে পারে না। পুলিশের ভূমিকা সন্দেহজনক। আমি সিবিআই তদন্তের দাবি করছি।”
পুলিশ সূত্রের খবর, যে দিন দীপঙ্কর অপহৃত হয়, ওই দিন সুধনের মোবাইল ফোন থেকে বেশ কয়েক বার কথা হয় দীপঙ্করের মোবাইলে। ঘটনার তদন্তে দীপঙ্করের কল রেকর্ড থেকে পুলিশ তা জানতে পারে। সুধনকে আটক করে পুলিশ জেরা শুরু করলে সে ভেঙে পড়ে। তখন মনোজের নাম জানায় সে। মনোজের বাড়ি থেকে দীপঙ্করের মোবাইলটি উদ্ধারের পরে পুলিশের সন্দেহ দৃঢ় হয়। দীপঙ্করের কাকা সাধু সরকার বলেন, “আমরা থানায় অভিযোগ জানানোর পরে পুলিশ গুরুত্ব দেয়নি। পুলিশের একাংশ দীপঙ্কর কোনও মেয়ের সঙ্গে পালিয়েছে বলে বিষয়টি উড়িয়ে দিতে চেয়েছে। আমরা নিজেরা খুঁজে তার দেহ উদ্ধার করেছি। |