নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
অপহরণের পরে দীপঙ্কর সরকার নামে এক ছাত্রকে খুনের ঘটনার জেরে পুলিশি গাফিলতির অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে উঠল শিলিগুড়ির মাটিগাড়া। বুধবার পতিরামজোতের বাসিন্দারা মাটিগাড়া থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁরা থানায় ঢুকে ওসির সামনেই তাঁর কড়া সমালোচনা করেন। অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের শাস্তির দাবিতে সরব হন বাসিন্দারা। ১২টা নাগাদ স্থানীয় বাসিন্দারা খাপরাইল মোড়ে গিয়ে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। টায়ার জ্বালিয়ে আধ ঘণ্টারও বেশি সময় অবরোধ করে রাখা হয়। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন, “প্রথম দিন থেকেই ওই ঘটনাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। হালকা করে দেখার অভিযোগ ঠিক নয়।”
|
নিহতের মাকে সান্ত্বনা অশোক ভট্টাচার্যের। |
কিন্তু পরিবার ও প্রতিবেশীরা কমিশনারের দাবি মানতে নারাজ। দীপঙ্করের এক কাকিমা শান্তি সরকার বলেন, “দীপঙ্কর অপহরণের দিন থেকে আমরা কয়েকবার মাটিগাড়া থানায় যাই। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে কোনও আগ্রহ দেখাতেন না। দীপঙ্কর পালিয়ে গিয়ে বাড়ির সঙ্গে মজা করছে বলে পুলিশ দাবি করে। আমরা খোঁজার আর্জি জানালে কোথায় যেতে হবে তা তাঁরা আমাদের কাছ থেকেই জানতে চান।” তিনি অভিযোগ করেন, তাদের গাড়িতে তেল নেই বলেও পুলিশ দাবি করেছিল। গোপালবাবু নিজের গাড়িতে করে এক পুলিশ অফিসারকে তদন্তের জন্য নিয়ে যান। এদিন সিপিএমের পক্ষ থেকে পতিরামজোতে মিছিল করা হয়। আজ, বৃহস্পতিবার এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে কমিশনারেটে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাবে সিপিএম। কংগ্রেসের মাটিগাড়া পঞ্চায়েত সমিতির শিশু ও নারী কর্মাধ্যক্ষ অঞ্জলি দে সরকারও বলেন, “পুলিশ বিষয়টিকে হালকা করে নিয়েছে। তার জন্যই এমন ঘটনা হয়েছে। আমরা দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করছি।”
বেলা ১২টা নাগাদ দীপঙ্করের ছবি হাতে খাপরাইল মোড়ে গিয়ে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন বাসিন্দারা। প্রতিবেশী মহিলা ঝুনু মণ্ডল, কিরণ সরকাররা বলেন, “এ ভাবে একটি ফুটফুটে ছেলের মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি। তাই বাড়ির কাজ ফেলে দিয়ে অবরোধে সামিল হয়েছি। যত দিন খুনিদের শাস্তি না হবে, আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।” |
বিকালে দীপঙ্করের বাড়িতে যান তৃণমূলের মহাসচিব কৃষ্ণ পাল সহ নেতারা। কৃষ্ণবাবু বলেন, “আমরা দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি করছি। পরিবারের পাশে রয়েছি। অনেকে বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে। সেটা হওয়া উচিত নয়।” পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ব্যপারে তিনি বলেন, “সে ব্যপারে পুলিশ কর্তারা বলবেন।”
দার্জিলিং জেলা লিগাল এইড ফোরামের সম্পাদক অমিত সরকার এদিন দীপঙ্করের বাড়িতে যান। তিনি বলেন, “যারা খুন করেছে তাদের কড়া শাস্তির জন্য আমরা দীপঙ্করের পরিবারের পাশে থাকব। কেন পুলিশ অফিসাররা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখলে না তা সে ব্যপারে যাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া তার জন্য কমিশনারের কাছে আর্জি জানাব।” |
ছবি দু’টি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক। |