পুরপ্রধান নির্বাচন নিয়ে সিপিএম এবং কংগ্রেসের মধ্যে রাজনৈতিক কাজিয়ায় দু’মাস ধরে অচলাবস্থা চলছে ধুলিয়ান পুরসভায়। সিপিএম পুরপ্রধান হিসেবে দাবি করেছে মহম্মদ ইসাহাক আলির নাম। কংগ্রেসের দাবি, ধুলিয়ানের পুরপ্রধান তাঁদের মনসুর আলি। গত দু’দিন ধরে এই দু’টি নামকেই সামনে রেখে দু’দলই পুরসভা তাঁরাই চালাচ্ছেন বলে দাবি করছেন। এর ফলে পুরকর্মীরা পড়েছেন বিপাকে।
পুরসভায় এই ডামাডোল চলায় শহরের পরিষেবা কার্যত শিকেয় উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার পুরসভায় যান জেলার দুই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। তবে তাঁরা এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) রবীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “মঙ্গলবার রঘুনাথগঞ্জে দু’টি দলের কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলা হয়। কিন্তু জটিলতা কাটেনি। দু’পক্ষই পৃথক ভাবে সভা করে তাঁদের সিদ্ধান্ত মতো ব্যক্তিই পুরপ্রধান বলে দাবি করেছেন। |
ধুলিয়ান পুরসভার বাইরে পুলিশি প্রহরা। —নিজস্ব চিত্র। |
ঘটনার তদন্তের জন্য দুই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে পাঠানো হয়েছিল ওই পুরসভায়। তাঁদের রিপোর্ট পেলেই বোঝা যাবে সত্যিই কে বৈধ পুরপ্রধান। তারপরে তাঁর শপথের ব্যবস্থা করা হবে।” কিন্তু তত দিন এই পুরসভার ডামাডোল কাটবে কী করে? পুরসভায় জেলা প্রশাসনের ওই তদন্তকারী দলের সঙ্গে ছিলেন সামশেরগঞ্জের বিডিও প্রলয়কুমার সরকার। তিনি বলেন, “যতদিন এই জটিলতার অবসান না হবে, তত দিন উপপুরপ্রধানকে কাজ চালাতে বলা হয়েছে। তবে তিনি পুরসভার দৈনন্দিন কাজ চালালেও আর্থিক লেনদেন ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না।” ধুলিয়ান পুরসভার শেষ নির্বাচন হয় ২০১০ সালের মে মাসে। ১৯ সদস্যের এই পুরসভার নির্বাচনে ১০টি আসন পেয়ে ক্ষমতা দখল করে বামফ্রন্ট। পুরপ্রধান হন সুন্দর ঘোষ। এক বছর পার হতেই পালাবদল ঘটে যায় ক্ষমতার। গরিষ্ঠতা পেয়ে যায় কংগ্রেস। পুরপ্রধান হন কংগ্রেসের মেহবুব আলম। এক বছর কাটতেই ২০১২ সালের ৩০ নভেম্বর পুরসভায় এ বার অনাস্থা আনেন বামেরা। ৩১ ডিসেম্বর সেই অনাস্থার তলবী সভায় ১০-০ ভোটে অপসারিত হন মেহবুব আলম। অন্য দিকে, অনাস্থা আনার আগেই পুরপ্রধানের পদ থেকে মেহবুব ইস্তফা দিয়েছেন দাবি করে ১৯ নভেম্বর পাল্টা সভা করেন কংগ্রেস কাউন্সিলেরা। |