অকাল নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই।
নতুন বছরের ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহেই রেজিনগর বিধানসভার ভোট ধরে নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি আসরে নেমে পড়েছে। নির্বাচনের প্রস্তুতিতে বুথ কমিটি, অঞ্চল কমিটি, ব্লক কমিটি গঠন-সহ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বও নেতৃবৃন্দের মধ্যে ভাগ করা শুরু হয়েছে। ছোট ছোট কর্মী-সভা, পাড়ায় বৈঠক-সহ অঞ্চল ভিত্তিক প্রচারও শুরু হয়েছে।
২০০১ সালেই রেজিনগর বিধানসভার প্রথম ভোট হয়। নির্বাচন হয়েছিল দ্বিমুখী। ২০১৩ সালে অবশ্য ত্রিমুখী। গত বিধানসভায় রেজিনগর প্রথম বার দখল করেছিল কংগ্রেস। ২১ নভেম্বর নির্বাচিত বিধায়ক হুমায়ুন কবীর কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়ে রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য হন। তারপরেই ফের অকাল ভোটে মেতে উঠেছে রাজনৈতিক দলগুলি।
প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের প্রতিমন্ত্রী হুমায়ুন কবীর এ বার তৃণমূল প্রার্থী। লড়াইয়ে কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের আরএসপি। তবে ১৪টি পঞ্চায়েতের সমষ্টির নতুন বিধানসভা রেজিনগরে তৃণমূলের টিকিটে কেউ জেতেননি। দু’লক্ষের কিছু বেশি ভোটারের এই বিধানসভায় ১৪টি পঞ্চায়েতের ৮টিতে কংগ্রেস জয়ী হয়েছিল ৬টি গিয়েছিল বামফ্রন্টের দখলে।
২০১১-র নির্বাচনে কংগ্রেসের হুমায়ুন কবীর ৮৭৪১ ভোটে আর এস পি-র সিরাজুল ইসলামকে পরাজিত করেন। গত পাঁচ মাসে ৫টি বিদ্যালয়ে পরিচালন সমিতির নির্বাচন হয়। তাতে বামফ্রন্ট ভাল ফল করেছে। কংগ্রেস দ্বিতীয় ও তৃণমূল তৃতীয় স্থান পায়। ৪টি-তে বামফ্রন্ট জয়ী হয়েছে।
জনাদেশ তৃণমূলের বিপক্ষে যাওয়ার পরও এলাকার মন্ত্রী এলাকায় উন্নয়নের জোয়ার এনে বিধানসভা ভোটে জয়লাভ করতে চাইছেন। ৪ জানুয়ারি শক্তিপুর থানার উদ্বোধন করেছেন। আগামী দিনে এলাকায় একটি কলেজ গড়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে ভোট হবে তা মেনেই এগোচ্ছেন এঁরা। তৃণমূলের বেলডাঙা-২ ব্লকের আহ্বায়ক সুনির্মল ঘোষাল বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি, মোটামুটি ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহেই ভোট হবে। আমরা বুথ কমিটি, অঞ্চল কমিটি, ছোট পাড়া বৈঠক, কর্মী বৈঠক শুরু করেছি।”
সিপিএমের সোমপাড়া লোকাল কমিটির সম্পাদক তাজারুল হক বলেন, “যা শোনা যাচ্ছে তাতে ফেব্রুয়ারিতে ভোট হবে বলেই মনে হচ্ছে।” তিনি বলেন, “মন্ত্রী সরকারি বেসরকারি সব সভাকেই ভোট প্রচারের মঞ্চে পরিণত করছেন। সরকারি মঞ্চ ব্যবহার করেও উন্নয়নের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। মানুষ সব বোঝেন।” কংগ্রেসের বেলডাঙা-২ ব্লক পূর্ব কার্যকরী সভাপতি মিন্টু সিংহ বলেন, “রাজনৈতিক মহলে শোনা যাচ্ছে ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে। ফলে আমরা বুথ কমিটি, অঞ্চল কমিটি, কর্মী সম্মেলন এবং বিভিন্ন বিধায়কদের পর্যবেক্ষক নিয়োগ শুরু করেছি।”
কংগ্রেসের প্রার্থী কে হবেন? এই নিয়ে বেশ কয়েকটি নাম এলাকায় শোনা গেলেও জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র অশোক দাস বলেন, “সময় মতো জেলা সভাপতি অধীর চৌধুরী নাম ঘোষণা করবেন।” বামফ্রন্টের পক্ষে সিরাজুল ইসলামকেই সম্ভবত প্রার্থী করা হতে পারে। কারণ, তাঁর সঙ্গেই হুমায়ুন কবীরের লড়াই হয়েছিল। তিনি মাত্র ৮ হাজারের কিছু বেশি ভোটে পরাজিত হন। ফলে তৃণমূল ও কংগ্রেসের ভোট কাটাকাটিতে জেতার সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছে বামেরা।
হুমায়ুন বলেন, “এলাকায় উন্নয়নের যে জোয়ার এসেছে তাতেই ঠিক হয়ে গিয়েছে এই বিধানসভা কারা দখল করবে। এই জোয়ারকে অন্য রাজনৈতিক দল ভয় পাচ্ছে, তাই তারা অপ্রাসঙ্গিক ও মিথ্যা অভিযোগ আনছে।” |