|
|
|
|
পূজারার ওয়ান ডে অভিষেকের স্বপ্ন দেখাচ্ছে রঞ্জি ধামাকা |
প্রিয়দর্শিনী রক্ষিত • রাজকোট |
দেশের মাঠে পিঠোপিঠি সিরিজ হারের তেতো স্বাদ এখনও কাটেনি। ‘টিম ইন্ডিয়ার হেভিওয়েটদের গর্দান নাও’দেশজোড়া গর্জন কিছুটা কমলেও থিতিয়ে যায়নি এখনও। এই আবহে ঘাড়ের উপর আবার নতুন একটা সিরিজ। আবার ইংল্যান্ড। তবে এ বার পাঁচ দিন নয়, লড়াই পঞ্চাশ ওভারের। আর এই সিরিজ নিয়ে কতটুকু আগ্রহ থাকতে পারে ভারতের আম-ক্রিকেটপ্রেমীর?
সহজ উত্তর খুবই কম। অথচ এই উত্তরটাকেই ভুল প্রমাণ করার যাবতীয় রসদ নিয়ে হাজির বুধবারের রাজকোট। রবিবার কোটলায় যখন পাকিস্তানের কাছে খোয়ানো সম্মান কিছুটা ছিনিয়ে নিচ্ছেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, তার ঘণ্টাখানেক আগে নরেন্দ্র মোদীর হাতে আনুষ্ঠানিক ভাবে ভূমিষ্ঠ পঁচাত্তর কোটি টাকা খরচ করে তৈরি সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম। আসছে শুক্রবার রাজকোট-জামনগর হাইওয়ের ধারের যে মাঠে সাতাশ হাজার চেয়ারের একটাও ফাঁকা থাকবে না বলে দাবি করছেন এসসিএ-র এক শীর্ষকর্তা।
ছোট মাঠ। তায় ডিসেম্বর ২০০৯-এর পর আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দেখার সুযোগ পাচ্ছে রাজকোট। কিন্তু তাই বলে একেবারে হাউসফুল? তা-ও কি না শনি-রবি নয়, শুক্রবার। টিম ইন্ডিয়ার ধারাবাহিক বিপর্যয়ের পরেও এত আগ্রহ থাকবে এই সিরিজ নিয়ে? |
|
এসসিএ কর্তার দাবি-র শিকড় কিন্তু অবাস্তব প্রত্যাশা নয়, রয়েছে ঘোর বাস্তবেই। যে বাস্তবের নাম চেতেশ্বর পূজারা।
ওয়ান ডে স্কোয়াডে যাঁর নাম দেখার পর থেকেই ফুটছে শহর। এসসিএ কর্তাদের চিন্তাভাবনায় ঘুরছে সংবর্ধনার রূপরেখা। উন্মাদনার পারদ বাড়িয়ে দিয়েছেন পূজারা স্বয়ং। এ দিন কর্নাটকের বিরুদ্ধে ২৭৫ বলে আসা অপরাজিত ২৬১-এর কথা জানে না, ছোটখাটো শহরে এমন একজনকেও খুঁজে পাওয়া কঠিন। রঞ্জিতে পরপর দুটো ডাবল সেঞ্চুরি পূজারার কাছে নতুন কিছু নয়। টুইটারের ভাষায় বলতে গেলে, লিওনেল মেসির টানা দু’ম্যাচে গোল করার মতোই স্বাভাবিক। উত্তেজনার কারণটা অন্য জায়গায়।
এত দিন যে টেস্ট প্লেয়ারের তকমাটা গায়ে সেঁটে ছিল, এ দিন যেন সেটাকে তাঁর নিখুঁত কভার ড্রাইভের মতোই বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছেন পূজারা। ২৭৫ বলের ইনিংসে রয়েছে কুড়ি-বাইশটা নয়, চল্লিশটা বাউন্ডারি! যা দেখার পর পূজারার কোচ দেবু মিত্র বলে ফেলছেন, “এর পরেও বলবেন ও শুধু টেস্ট ক্রিকেটার? আজকে পূজারা যে ইনিংসটা খেলল, সেটা দেখার পর যার মাথায় সামান্য ক্রিকেটবুদ্ধি আছে, সে-ই বলবে যে ও সব ফর্ম্যাটের জন্য তৈরি।” সৌরাষ্ট্র বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে যাঁরা পূজারার ইনিংসটা দেখলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন অন্যতম জাতীয় নির্বাচক রাজিন্দর হংস-ও। যে খবরটা চাউর হয়ে যাওয়ায় শুক্রবার ঘরের মাঠে ঘরের ছেলের অভিষেক দেখার ইচ্ছে স্বপ্নের দুনিয়া ছেড়ে অনেকটাই বাস্তবের মাটিতে।
আর পূজারার কোচ যেন এই মুহূর্তে গোটা রাজ্যের সেই সুখস্বপ্নের প্রতীক। শুক্রবার পূজারার খেলা নিয়ে বিন্দুমাত্র যদি-কিন্তু-হয়তো নেই তাঁর মনে। দেবু মিত্রের কথায়, “আলবাত পূজারা খেলবে। এর পরেও কোনও সন্দেহ থাকতে পারে?” গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে অজিঙ্ক রাহানে ওপেন করলে তিন বা চারে নামুন পূজারা সেটাও বলে দিচ্ছেন সৌরাষ্ট্র কোচ।পূজারার শহর অবশ্য অত ক্রিকেটীয় বিশ্লেষণে যেতে চায় না। তার আর্তি একটাই রাজকোটে রাজ্যাভিষেক। |
|
|
|
|
|