বিদ্রোহী বনাম প্রশাসন। ভারতীয় টেনিসে বুধবার রাত পর্যন্ত লড়াইটা যে জায়গায় দাঁড়িয়ে, তাতে স্কোরলাইনটা নিশ্চিন্তে বলা যায় ১-১। রাউন্ড ওয়ান যদি মহেশ ভূপতিদের হয়ে থাকে, তা হলে দ্বিতীয় রাউন্ডটা নির্ঘাত এআইটিএ-র কর্তাদের।
মহেশদের বিদ্রোহ দেখার পর ফেডারেশনের কর্তারা চেষ্টা করেছিলেন প্রকাশ অমৃতরাজকে ভারতীয় ডেভিস কাপ দলে রাখতে। যে চেষ্টা ফলপ্রসু হয়নি। সরকারি আইনেই আটকে গিয়েছে প্রকাশকে খেলানোর উদ্যোগ।
কারণ হিসাবে বলা হচ্ছে, প্রকাশের ভারতীয় পাসপোর্ট নেই। তিনি মার্কিন পাসপোর্টের অধিকারী। তাই ভারতের হয়ে কোর্টে নামতে পারবেন না প্রকাশ। এ কথা ক্রীড়া মন্ত্রকই জানিয়ে দিয়েছে।
তবে ব্যাপারটা যতটা সোজা দেখাচ্ছে, ততটা সম্ভবত নয়। টেনিস কর্তাদের অনেকেরই ধারণা, প্রকাশকে খেলানোর উদ্যোগ নষ্ট করার পিছনে বিদ্রোহী খেলোয়াড়দের কারও কারও হাত রয়েছে। কোনও ভাবে উঁচু মহলকে প্রভাবিত করে নিয়মের বেড়াজালে আটকে দেওয়া হয়েছে প্রকাশকে। |
এই পরিস্থিতি টেনিস কর্তারা চুপ করে বসে না থেকে পাল্টা চাল দিয়েছেন। বিদ্রোহীদের একটা অংশকে তাঁদের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের মাধ্যমে প্রভাবিত করার চেষ্টা হচ্ছে। বিশেষ করে যে সব প্লেয়ারের বয়স কম। তাঁদের বোঝানো হচ্ছে, ভারতের হয়ে ডেভিস কাপে না খেললে তাঁদের জন্য যে সরকারি আর্থিক অনুদান বরাদ্দ থাকে, তা তাঁরা নাও পেতে পারেন। মহেশের মতো বড় নাম বাদ দিলে তরুণদের অনেকেই নানা সরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। তাই সরকারি অনুদান বন্ধের পাশাপাশি এমনও ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে, ভবিষ্যতে চাকুরি ক্ষেত্রেও না সমস্যায় পড়ে যান তাঁরা।
শুক্রবার দুপুর বারোটায় ডেভিস কাপের টিম বাছা হবে। কর্তারা ঠিক করে রেখেছেন, বেলা এগারোটার সময়ও কেউ যদি জানিয়ে দেন, খেলতে রাজি, তা হলে তাঁর জন্য দরজা খোলা থাকবে। পাশাপাশি টেনিস কর্তাদের এটাও আশা, আট বিদ্রোহীর মধ্যে কয়েক জন অন্তত দেশের হয়ে খেলতে রাজি হয়ে যাবেন।
এআইটিএ-র সিইও হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায় এ দিন রাতে বলেন, “আমরা দল বাছাইয়ের আগের মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে রাজি। যাদের বোধোদয় হবে, তারা আশা করি ওই সময়ের মধ্যেই সম্মতি জানিয়ে দেবে।”
লিয়েন্ডার অবশ্য কাকে পাশে পাচ্ছেন আর কাকে নয়, তা নিয়ে ভাবতে রাজি নন। এআইটিএ-র কর্তাদের লি জানিয়ে দিয়েছেন, দলে যে-ই থাকুন, তিনি খেলতে তৈরি।
লি খেললেও তাঁকে দলনেতা করার কোনও পরিকল্পনা নেই। কোরিয়ার বিরুদ্ধে টাইয়ে এস পি মিশ্র-ই নন প্লেইং ক্যাপ্টেন। কোচ জিশান আলি। কর্তারা আরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রফাসূত্র অনুযায়ী, তাঁরা যে ভাবে পুরস্কার অর্থের বন্টন করবেন ঠিক করেছিলেন, সেই ফর্মুলা কোরিয়া টাই থেকেই চালু করবেন।
বিদ্রোহী বনাম প্রশাসন ম্যাচে টেনিস কর্তাদের স্ট্র্যাটেজি এখন একটাই। অপেক্ষা করে দেখা জল কোন দিকে গড়ায়। |