বিহারে ছাত্র খুন-অপহরণে যুক্ত ধৃত বালিতে
বিহারের বাঁকা শহরের দশম শ্রেণির স্কুলছাত্র আশিসকুমার সিংহকে (১৪) অপহরণ করে হত্যার ঘটনায় অন্যতম মূল অভিযুক্তকে পুলিশ হাওড়ার বালি থেকে গ্রেফতার করল। গত ৭ ডিসেম্বর জামুই জেলার বাতিয়া পাহাড়ের জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয় বাঁকার সেন্ট যোশেফ স্কুলের ওই ছাত্রের মৃতদেহ। ২০১২ সালের ২৯ নভেম্বর থেকে সে নিখোঁজ ছিল।
পুলিশ জানায়, খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত মুকেশকুমার পন্ডিত জামুই জেলার সাদগামার বাসিন্দা। গত ৭ জানুয়ারি, সোমবার রাতে বালির আশুতোষ মুখার্জি রোডের একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে বালি ও বাঁকা থানার পুলিশ। মুকেশের বাবা বালির একটি জুটমিলের শ্রমিক। পুলিশের অভিযোগ, ওই ছাত্রকে খুন করার পরে মুকেশ বালিতে পালিয়ে এসে তার বাবার কাছে আশ্রয় নেয়। উল্লেখ্য, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মুকেশ ছাড়া আরও ছ’জনকে বিহার পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাদের নাম মনু কুমার, নীতীশ কুমার, সিকান্দার দাস, শশীভূষণ যাদব, প্রমোদ মুর্মু এবং পিটার। অন্য এক অভিযুক্ত দেবী যাদব এখনও ফেরার। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে।
কী ভাবে অপহরণ করা হয় আশিসকে? পুলিশের অভিযোগ, অন্য এক অপহরণে অভিযুক্ত, জামুই জেলে বন্দি নন্দন যাদব জেলে বসেই আশিসকে অপহরণের পরিকল্পনা করে। জামুইয়ের বাসিন্দা মুকেশ, দেবী, পিটার ও প্রমোদের সঙ্গে নন্দনের আগে থেকে পরিচয় ছিল। তাদের সে তার আত্মীয় শশীভূষণের সঙ্গে দেখা করতে বলে। আশিসের প্রতিবেশী মনু, নীতীশ এবং সিকান্দার, বান্ধবীর সঙ্গে আশিসের দেখা করিয়ে দেওয়ার অছিলায় ২০১২ সালের ২৯ নভেম্বর সকালে তাকে বাড়ি থেকে বের করে আনে। এর পরে তাকে তুলে দেওয়া হয় মুকেশ, দেবী, প্রমোদ ও পিটারের হাতে। এই চার যুবক আশিসকে নিয়ে যায় বাতিয়ার জঙ্গলে। পুলিশের দাবি, জেরায় পিটার জানিয়েছে, অপহৃত হয়েছে বুঝতে পেরে ওই ছাত্র চেঁচামেচি করতে থাকে। তাকে জঙ্গলের মধ্যে রাখা হয়। কিন্তু আশিসকে আটকে রাখা ক্রমশই তাদের পক্ষে শক্ত হয়ে উঠছিল। বিপদ বুঝে ১ ডিসেম্বর সকালে আশিসকে শ্বাসরোধ করে খুন করে বাতিয়া পাহাড়েই দেহ ফেলে অপহরণকারীরা পালিয়ে যায়।
আশিসের বাবা-মা, দু’জনেই স্কুল শিক্ষক। পুলিশ জানায়, ছেলের খোঁজ না পেয়ে আশিসের বাবা জয়জয়রাম সিংহ বাঁকা থানায় আগেই নিখোঁজের ডায়েরি করেন। ১ ডিসেম্বর রাতে অপহরণকারীরা তাঁকে ফোন করে জানায়, আশিসকে অপহরণ করা হয়েছে। মুক্তিপণ হিসেবে দুষ্কৃতীরা ৫০ লক্ষ টাকাও চায়। স্কুলশিক্ষক এবং তাঁর স্ত্রী ছেলের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়ার জন্য অপহরণকারীদের অনুরোধ করেন। কিন্তু ততক্ষণে আশিসকে মেরে ফেলেছে দুষ্কৃতীরা।
তদন্তকারী দলের দাবি, আশিসের মোবাইল টেলিফোনের কল ডিটেলস ঘেঁটে দেখা যায়, গত ২৯ নভেম্বর অপহৃত হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগেও তার সঙ্গে মনু কুমারের কথাবার্তা হয়েছে। জেরার মুখে ভেঙে পড়ে মনু স্বীকার করে অপহরণের কথা। কারা অপহরণে যুক্ত, তা-ও সে জানিয়ে দেয়। একে একে ধরা পড়ে প্রমোদ, পিটার। তারা পুলিশকে জানায়, খুন করার পরে আশিসের মৃতদেহ পাহাড়ের কোথায় তারা ফেলে দিয়ে এসেছিল। সেই সূত্রেই উদ্ধার হয় দেহ। পরে অন্যদের গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, জেলবন্দি নন্দন যাদবও আশিস অপহরণে অভিযুক্ত। তার বিরুদ্ধেও অপহরণের মামলা দায়ের করা হয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.