|
|
|
|
স্থিতাবস্থা জারি কোর্টের |
বিজ্ঞাপনের বরাত দিয়ে টাকাও নিল, তবু কাজ দিল না মেট্রো |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
কলকাতা মেট্রোর ট্রেনে-ট্রেনে দু’বছর ধরে বিজ্ঞাপন লাগানোর বরাত পেয়েছিল তারা। দরপত্রের মাধ্যমেই তাদের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবু কলকাতারই এক বিজ্ঞাপন সংস্থাকে কাজটি করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। সংস্থাটির মালিক এ বার মেট্রো-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছেন। তাঁর অভিযোগ: সর্বোচ্চ দর দেওয়ার পরে প্রায় তিন কোটি টাকা জমা করা সত্ত্বেও মেট্রো তাঁদের ট্রেনে বিজ্ঞাপন লাগাতে তো দেয়ইনি, উল্টে বরাত খারিজের নোটিস দিয়েছে!
অভিযোগের ভিত্তিতে হাইকোর্ট মেট্রো-কর্তৃপক্ষকে পরবর্তী নির্দেশ পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে। অর্থাৎ, এর মধ্যে কাউকে বিজ্ঞাপন লাগাতে দেওয়া যাবে না। বিচারপতি প্রণব চট্টোপাধ্যায় ও বিচারপতি তরুণ দাসের ডিভিশন বেঞ্চে আগামী ১৫ জানুয়ারি মামলাটির ফের শুনানি হবে। হাইকোর্টের নির্দেশ শুনে রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী বলেন, “আদালত যা করেছে, ঠিক করেছে। আমার সময়ে এমন দুর্নীতি হতে দেব না।” উল্লেখ্য, ঘটনার সময়ে প্রথমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পরে বেশ কিছু দিন মুকুল রায় রেলমন্ত্রী ছিলেন। তৃণমূলের সর্বভারতীয়
সাধারণ সম্পাদক মুকুলবাবু এ
প্রসঙ্গে মুখ খুলতে চাননি। “আগে আদালতের নির্দেশ দেখি!” মন্তব্য তাঁর।
আদালত-সূত্রের খবর: মেট্রোর ১৭টি রেকে ভিতরে-বাইরে বিজ্ঞাপনের সত্ত্ব দিতে টেন্ডার ডাকা হয়েছিল ২০১১-র ২১ জানুয়ারি। উল্লিখিত সংস্থাটিকে মার্চে সফল দরদাতা ঘোষণা করা হয়। ১৭ ডিসেম্বর তাদের সঙ্গে বিজ্ঞাপন-চুক্তিও সেরে ফেলে মেট্রো। সংস্থার তরফে প্রথমে ৬০ হাজার টাকা ‘সিকিউরিটি মানি’ জমা দেওয়া হয়েছিল। পরে চুক্তি মোতাবেক দু’দফায় ১ কোটি ৩৮ লক্ষ ও ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁদের কাজ শুরুই করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বিজ্ঞাপন সংস্থাটির মালিক সুতনু মোহান্তি। কারণ কী?
সুতনুবাবুর দাবি: চুক্তি হওয়ার পরেও মেট্রো-কর্তৃপক্ষ তাঁদের নানা অছিলায় কাজে নামতে বাধা দিয়েছেন। যেমন প্রথমে তাঁকে জানানো হয়েছিল, রেকগুলো নিয়মিত চলছে বলে তাতে বিজ্ঞাপন বসানো সম্ভব নয়। শেষমেশ ২০১২-র ৮ অক্টোবর তাঁদের বরাতই খারিজ করা হয়। তাঁর কৌঁসুলি সুব্রত মুখোপাধ্যায় বিচারপতিদের কাছে নথিপত্র পেশ করে বলেন, কেন রেক দেওয়া যাচ্ছে না, কোথায় প্রশাসনিক সমস্যা হচ্ছে, মেট্রো-কর্তৃপক্ষ এ সবের কোনও ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। সুব্রতবাবুর বক্তব্য: রেলের সর্বোচ্চ মহলের চাপেই সর্বোচ্চ দরদাতাকে বঞ্চিত করে অন্য কোনও সংস্থা বা ব্যক্তিকে বিজ্ঞাপনের বরাতটি ‘পাইয়ে দেওয়ার’ চেষ্টা চলছিল, ঠিক যে ভাবে হলদিয়া বন্দরে এবিজি-কে সরানো হয়েছে।
মেট্রো-কর্তৃপক্ষ কী বলছেন? মেট্রো রেলের আইনজীবী সুব্রত তালুকদার বলেন, এ ক্ষেত্রে সালিশির সুযোগ রয়েছে, যার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা যেতে পারে। যদিও অভিযোগকারীর বক্তব্য: টাকা জমার পরেও দু’বছর কাজ করতে না-পারায় সংস্থার বিস্তর আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তাই সালিশির আর অবকাশ নেই। হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, মামলার রায় ঘোষণার আগে মেট্রোর রেকে বিজ্ঞাপন বসানোর দায়িত্ব অন্য সংস্থাকে দেওয়া যাবে না। মেট্রো রেলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার তথা জনসংযোগ আধিকারিক প্রত্যুষ ঘোষ অবশ্য বলেন, “হাইকোর্টের নির্দেশ এখনও হাতে পাইনি। পাওয়ার পরে কিছু বলা সম্ভব।” |
|
|
|
|
|