|
|
|
|
|
রক্ষক যখন ভক্ষক |
‘ধর্ষণকারী’ পুলিশকে হাতেনাতে ধরল জনতা
নিজস্ব সংবাদদাতা |
|
কুড়ি বছর আগে এক ধর্ষণের অভিযোগে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য। নেহারবানু ধর্ষণের ওই মামলায় পরে ফুলবাগান থানার কনস্টেবল নীলকমল ঘোষের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। এ বার বেনিয়াপুকুরের এক মানসিক প্রতিবন্ধীকে ধর্ষণের অভিযোগে এলাকার মানুষের হাতে ধরা পড়লেন কলকাতা পুলিশের এক অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর। পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ জানায়, হেয়ার স্ট্রিট থানার ওই অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টরের বিরুদ্ধে বুধবার বছর চল্লিশ বয়সী মানসিক প্রতিবন্ধী এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়েছে বেনিয়াপুকুর থানায়। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) জাভেদ শামিম বলেন, “অভিযুক্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টরের নাম প্রকাশ থাপা (৪৫)। হেয়ার স্ট্রিট থানায় তিনি কর্মরত। তিনি কড়েয়া রোডে ছোট একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। পাশের ঘরের প্রতিবেশী এক মহিলাকে ওই অফিসার এ দিন বিকেলে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। তাঁকে সাসপেন্ড করা হবে। মহিলাকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।”
পুলিশ ও এলাকা সূত্রের খবর, এ দিন বিকেল চারটে নাগাদ এলাকায় খবর রটে যায় যে, বছর চল্লিশের ওই মহিলার ঘরে কলকাতা পুলিশের এক অফিসার জোর করে ঢুকে পড়েছেন। খবর পেতেই ওই বাড়ির সামনে জড়ো হন প্রতিবেশীরা। তাঁরাই ওই অফিসারকে পাকড়াও করে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ পৌঁছলে তাঁরা পুলিশকে জানান, ওই অফিসার হাতেনাতে ধরা পড়েছেন।
ওই মহিলা তাঁর বাবার সঙ্গে থাকেন। এ দিন বিকেলের ওই সময়ে মহিলার বাবা ঘরে ছিলেন না। সেই সুযোগে প্রকাশ তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ প্রকাশকে থানায় নিয়ে যায়। তত ক্ষণে বেনিয়াপুকুর থানার সামনে এলাকার বেশ কিছু যুবক জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে বেনিয়াপুকুর থানায় পৌঁছে যান কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অর্গানাইজেশন) আর ত্রিপুরারি এবং ডেপুটি কমিশনার (ইএসডি) সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।
পুলিশকর্তারা ওই মহিলাকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাঠান। সেখানকার চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মহিলাকে পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষার রিপোর্ট পুলিশকে জানানো হবে।
বেনিয়াপুকুর এলাকার একটি বহুতলের একতলার একটি ঘুপচি ঘরে বাবার সঙ্গে থাকেন ওই মহিলা। তাঁর বাবা এলাকায় একটি মাংসের দোকানে কাজ করেন। এ দিন সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনে প্রতিবেশীদের জটলা। খবর পেয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে এসেছেন ওই মহিলার বোন। তিনি জানান, বিকেলে তাঁর দিদির শরীর খারাপের খবর পেয়ে তিনি চলে আসেন। এসে বিষয়টি জানতে পারেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এর আগেও দিদির সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছে ওই অফিসার। ধর্ষণও করেছে। আজ বাবা বাড়িতে না-থাকার সুযোগে ঘরে ঢুকে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।”
ওই মহিলার ঘরের পাশেই প্রকাশের ঘর। তাঁর স্ত্রী ও একটি ছেলে রয়েছে। প্রতিবেশীরা জানান, গতকাল দার্জিলিংয়ে বাপের বাড়িতে গিয়েছেন প্রকাশের স্ত্রী। অন্য দিকে, ঘটনার খবর জানাজানি হওয়ার পর থেকেই ওই পুলিশকর্মীর ছেলে বেপাত্তা। প্রতিবেশীদের কথায়, “এর আগে প্রকাশের বিরুদ্ধে এমন কোনও অভিযোগ শোনা যায়নি। তবে এ দিনের ঘটনাটি শুনে অবাক লাগছে।” |
|
|
|
|
|