রবিবার রাতে পরপর চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটল কোচবিহারে। ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে কোতোয়ালি থানার গুড়িয়াহাটি এলাকার পাশাপাশি দু’টি বাড়িতে। ডাকাত দলের হামলায় এক মহিলা জখম হন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই বাড়ি থেকে দুষ্কৃতীরা তিন লক্ষাধিক টাকার সামগ্রী হাতিয়ে চম্পট দেয়। লুঠপাটের ঘটনা ঘটে রাজারহাট এলাকার একটি ব্যাঙ্কে ও সোনার দোকানে। দুষ্কৃতীরা ব্যাঙ্কের ভল্ট ভেঙে টাকা লুঠ করে। গয়নার দোকানে হানা দিয়ে লক্ষাধিক টাকার সামগ্রী হাতিয়ে নেয়। এ দিন বিকেল পর্যন্ত ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ চুরি যাওয়া টাকার পরিমাণ জানাতে পারেনি।
পুলিশ সুপার অনুপ জয়সওয়াল বলেন, “দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” সেই সঙ্গে চুরি ডাকাতি বন্ধে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও এগিয়ে আসতে অনুরোধ করেন তিনি। আরজি পার্টি তৈরি করে রাতপাহারার ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন। পুলিশ কর্তার বক্তব্য শুনে বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে শহর ও সংলগ্ন এলাকায় পরপর চুরি ডাকাতি বেড়ে চললেও পুলিশ দুষ্কৃতীদের ধরতে পারছে না। উল্টে বাসিন্দাদের রাতপাহারা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কোচবিহার চেম্বার অব কমার্স সম্পাদক রাজেন বৈদ্য বলেন, “এর আগেও পুলিশ ব্যবসায়ীদের দোকানে সিসি ক্যামেরা বসাতে পরামর্শ দেয়। এখন রাতপাহারা দিতে বলা হচ্ছে। তা হলে পুলিশের কী দরকার?”
রবিবার রাতে শহরের ব্যাঙচাতরা রোড লাগোয়া গুড়িয়াহাটির তরণী সেন সরণি এলাকায় প্রতিবেশী দুই বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তাঁদের মধ্যে এক গৃহকর্তা রতন পাল পেশায় বেসরকারি সংস্থার কর্তা। অন্য জন নির্মল ভাদুড়ি ব্যাঙ্ক কর্মী। রতনবাবু জানান, রবিবার রাত দুটো নাগাদ দুষ্কৃতীরা তাঁর ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে। আগ্নেয়াস্ত্র, ভোজালি দেখিয়ে ঘর তছনছ করে। ১০-১২ জনের ডাকাতদলটি প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে লুঠপাট চালায়। রতনবাবু বলেন, “সোনার অলঙ্কার, মোবাইল ফোন, ঘড়ি, নগদ টাকা-সহ লক্ষাধিক টাকার সামগ্রী ছিনিয়ে নিয়েছে দুষ্কৃতীরা।” এর পরে দুষ্কৃতীরা গ্রিলের তালা কেটে দরজা ভেঙে নির্মল ভাদুড়ির ঘরে ঢোকে। নির্মলবাবুর মেয়ে ইমন বলেন, “মুখ ঢাকা অবস্থায় ডাকাতরা ঘরে ঢুরে বন্দুক দেখিয়ে কয়েক ভরি সোনার অলঙ্কার, নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।” ডাকাতদলের হামলার সময় শব্দ পেয়ে পারুল সূত্রধর নামে প্রতিবেশী এক মহিলা রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। ওই সময় ডাকাতরা তাঁকে মারধর করে। পারুলদেবীর হাতে ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়। পারুলদেবী বলেন, “শব্দ শুনে বাড়ি থেকে বের হতেই দু’জন ধেয়ে আসে। একজন হাতে ভারি কিছু দিয়ে আঘাত করে।” একই রাতে উত্তরবঙ্গ ক্ষেত্রীয় গ্রামীণ ব্যাঙ্কে রাজারহাট শাখায় দরজা ভেঙে দুষ্কৃতীরা ভিতরে ঢোকে। ভল্ট কেটে নগদ টাকা চুরি করে পালায়। উত্তরবঙ্গ গ্রামীণ ব্যাঙ্কের জেনারেল ম্যানেজার অরুণ শর্মা এ দিন বলেন, “পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। হিসাব করা যায়নি। তাই কত টাকা চুরি হয়েছে এখনই বলা সম্ভব নয়।” ওই ব্যাঙ্কের কাছে একটি গয়নার দোকানে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে দুষ্কৃতীরা।
|
এ ক ন জ রে |
চুরি-ডাকাতি |
৩-১২-১২ |
কোতোয়ালি থানার ঝিনাইডাঙা এলাকার এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি। প্রায় সাড়ে তিন লক্ষাধিক টাকার সামগ্রী লুঠ। তার আগে ডাউয়াগুড়িতে আরও তিনটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। |
১৯-১২-১২ |
বাণেশ্বরে তিনটি দোকানে চুরি। |
২৫-১২-১২ |
ফের তিনটি দোকানে চুরি বাণেশ্বরে। |
২৭-১২-১২ |
বক্সিরহাট থানার জোড়াইয়ে উত্তরবঙ্গ ক্ষেত্রীয় গ্রামীণ ব্যাঙ্কে ভল্ট কেটে চার লক্ষাধিক টাকা চুরি। মেখলিগঞ্জ ও বাণেশ্বর শাখায় চুরির চেষ্টা। |
২৯-১২-১২ |
কোচবিহার শহরে দেওয়াল কেটে আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির দোকানে চুরি। ১০টি বন্দুক ও প্রচুর কার্তুজ উধাও। চুরি যায় ১০ টি এয়ার গানও। ৬-১-১৩ গুড়িয়হাটিতে দুই বাড়িতে ডাকাতি। রাজারহাটে উত্তরবঙ্গ ক্ষেত্রীয় ব্যাঙ্ক ও একটি গয়নার দোকানে চুরি। |
|