প্রথমে গুলি চালিয়ে, পরে ব্যাঙ্কের ক্যাশিয়ারের মাথায় বন্দুকের বাট দিয়ে মেরে ২০ লক্ষ টাকা ভর্তি ব্যাগ ছিনতাই করে পালাল ছ’জন দুষ্কৃতী। সোমবার দুপুর সওয়া দু’টো নাগাদ মানিকচক থানার ভুতনি চরের শঙ্করীটোলা ঘাটের কাছে ঘটনাটি ঘটেছে। ওই ঘটনার পরে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পুলিশ। পাশাপাশি, ব্যাঙ্কের কর্মচারী ও অফিসার সংগঠনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার দাবি তোলা হয়েছে। পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজারকে ডেকে আমি নিজে সতর্ক করেছিলাম, কোনও প্রত্যন্ত গ্রামের শাখায় মোটা টাকা আদানপ্রদানের সময়ে নিকটবর্তী থানার পুলিশকে জানাবেন। পুলিশ তাদের সমস্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। যদি নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করতে পারে তবে মোবাইলে নজরদারি করা হবে। কিন্তু বহুবার সর্তক করার পরেও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ মালদহ থেকে ২০ লক্ষ টাকা নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে পুলিশকে কিছু জানাননি।” পুলিশ সুপার বলেন, “এলাকার দুষ্কৃতীদের যোগসাজশে ঘটনাটি ঘটেছে বলে তদন্তে মনে হচ্ছে।”
এ ব্যাপারে ব্যাঙ্কের আঞ্চলিক ম্যানেজার রনজিৎ কুমার রায় জানান, ব্যাঙ্কের নিয়ম অনুযায়ী ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কোনও নিরাপত্তা নেওয়া হয় না। তিনি বলেন, “এর জন্য বিমা করা আছে। সেই কারণে নিরাপত্তারক্ষী ছাড়াই ভুতনি শাখার ক্যাশিয়ার জেনারেটর চালককে সঙ্গে নিয়ে মালদহ থেকে ২০ লক্ষ টাকা নিয়ে ফিরছিলেন। তখনই এই বিপত্তি ঘটছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভুতনি ইউবিআইয়ের শাখাটি তিন দিকে গঙ্গা ও এক দিকে ফুলহার নদী দিয়ে ঘেরা। ফুলহার নদী পেরিয়ে ব্যাঙ্কের কর্মী-অফিসারদের ওই শাখায় যাতায়াত করতে হয়। সোমবার ভুতনি শাখার ক্যাশিয়ার রাজেশ সাহা ওই শাখার জেনারেটার চালক পরিচয় মণ্ডলকে সঙ্গে নিয়ে মালদহে প্রধান শাখায় যান। মালদহ প্রধান শাখা থেকে ২০ লক্ষ টাকা তুলে দু’জন ভুতনি শাখায় ফিরছিলেন। ফুলহার নদী পেরিয়ে বাইকে চেপে শাখায় যাওয়ার সময় দুটি মোটর সাইকেলে ছয়জন দুষ্কৃতী তাদের রাস্তা আটকে দেয়। কজন দুষ্কৃতী পরিচয়কে লক্ষ করে গুলি চালায়। অল্পের জন্য গুলি কানের কাছ দিয়ে বেরিয়ে যায়। দুষ্কৃতীরা মোটর সাইকেল থামিয়ে চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে। রাজেশ সাহার মাথায় বন্দুকের বাঁট দিয়ে মেরে ২০ লক্ষ টাকা ভর্তি ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। জখম ওই ব্যাঙ্ককর্মীকে মানিকচক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোয়িয়েশনের জেলা সম্পাদক বরুণ চক্রবর্তী বলেন, “ব্যাঙ্কের নিরাপত্তা রক্ষী রাখার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানাচ্ছি। নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী থাকলে এই ঘটনা ঘটত না।” |