|
|
|
|
কোন্দল সামলাতে টাস্ক ফোর্স তৃণমূলে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
জেলায় গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার শাসকদল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তা থামাতে না পারলে দলেরই ক্ষতি। সত্যিটা বুঝেই পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূলের টাস্ক ফোর্স তৈরি করা হল। ১৫ সদস্যের এই টাস্ক ফোর্স নিয়মিত জেলা, ব্লক থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরের রাজনৈতিক কর্মসূচি খতিয়ে দেখবে। ভাবে সরকারের উন্নয়নের বার্তা জেলা জুড়ে প্রচার করা যাবে তা নিয়ে ব্লক নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকও করবে। প্রয়োজনে পথসভা থেকে জনসভায় হাজির থাকবেন টাস্ক ফোর্সের সদস্যরাও।
গত শুক্রবার মেদিনীপুরে এসে এই টাস্ক ফোর্স তৈরি করে দিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। সেদিন জেলার সব বিধায়ক, ব্লক সভাপতি ও জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন নেত্রী। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমেই দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের কাছ থেকে জেলার রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক পরিস্থিতি জেনে নেন তিনি। বিধায়ক তথা জেলার দলের চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতির কাছেও জানতে চান সাংগঠনিক পরিস্থিতির কথা। দুই নেতার কাছে সাংগঠনিক পর্যালোচনা শোনার পরে দলনেত্রীর মনে আশঙ্কা দেখা দেয়। কারণ তিনি আগে থেকেই জেনে গিয়েছিলেন যে, পশ্চিম মেদিনীপুরে দল নানা শিবিরে বিভক্ত। তাদের মধ্যে কোন্দল লেগেই আছে। সংগঠনের সার্বিক উন্নতি নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। তারপর মমতা নিজেই টাস্ক ফোর্স গঠন করেন। এর ফলে বিধায়ক, জেলা নেতা এবং ব্লক স্তরের আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত উঠে আসবে। দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় অবশ্য এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি শুধু বলেন, “বর্তমান সরকার উন্নয়নের জোয়ার এনে দিয়েছে। সন্ত্রাসের বাতাবরণ সরিয়ে শান্তি ফিরিয়েছে। এটা তো সকলেই দেখতে পাচ্ছেন। সেটাই মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উপর জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী। তারই সঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যাপারে এখন থেকেই সাংগঠনিক দিক দিয়ে তৎপরতা শুরু করার কথাও জানিয়েছেন।” ইতিমধ্যেই ব্লক নেতৃত্বকে চাঙ্গা করার কাজও শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। রবিবারই বেলদা গিয়েছিলেন দীনেনবাবু। নারায়ণগড় ব্লক কমিটির সঙ্গে বৈঠকও করেন।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সিপিএমের ‘দুর্গ’ ছিল। যে জেলার বেশিরভাগ আসনেই গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী দিতে পারেনি বিরোধীরা। দাসপুর, ডেবরা, পিংলা, সবং, দাঁতন, খড়্গপুর ২ ব্লকের মতো কয়েকটি জায়গায় হাতে গোনা কয়েকটি আসন পেয়েছিল বিরোধীরা। বেশিরভাগ জায়গাতেই পঞ্চায়েত স্তরে তেমন সংগঠনও নেই। যেটুকু সংগঠন গড়ে উঠেছে তাও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, নিজেদের মধ্যে কোনও রকম দ্বন্দ্ব চলবে না। আর মানুষের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করতে হবে। এতদিন শাখা সংগঠনগুলিরও তেমন কোনও অস্তিত্ব ছিল না। এ বার শাখা সংগঠনগুলিকেও গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তাই শাখা সংগঠনের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদেরও রাখা রয়েছে টাস্কফোর্সে।
এ বার আবার পুনর্বিন্যাসের ফলে পঞ্চায়েতে আসন বেড়েছে। জেলা পরিষদে ৬২টি থেকে বেড়ে আসন হয়েছে ৬৭টি। পঞ্চায়েত সমিতির আসন ৭৫০টি থেকে বেড়ে ৭৯৮টি। আর গ্রাম পঞ্চায়েতে ৩৩০৯টি আসন বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৮৪৬টি আসন। স্বাভাবিক ভাবেই প্রার্থী নির্বাচন একটি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশেষত, সরকারে ক্ষমতায় আসার পরেও যেহেতু জেলার প্রতিটি প্রান্তে এখনও সংগঠনকে সেভাবে মজবুত করতে পারেনি তৃণমূল। উল্টে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার থেকেছে বেশিরভাগ সময়। এই সমস্যা মিটিয়ে নির্বাচনে ভাল ফল পেতেই টাস্ক ফোর্স গঠন। |
|
|
|
|
|