নেতাইয়ের ক্ষত সারেনি, ক্ষোভ বাড়ছে আহতদের
পুরনো ‘ক্ষত’ সারছে না নেতাইয়ে। কর্মক্ষমতা হারিয়ে সংসার টানতে হিমশিম খাচ্ছেন ২০১১-র ৭ জানুয়ারিতে গুলিচালনার ঘটনায় আহতেরা। তাঁদের ক্ষোভ, যেটুকু ক্ষতিপূরণ মিলেছিল, চিকিৎসাতেই খরচ হয়েছে। সরকার বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করায় অভাব জেঁকে বসছে ক্রমশ।
গুলিতে বাঁ চোখ নষ্ট হয়ে
যায় সব্জি চাষি দিলীপ
সেনের। —নিজস্ব চিত্র
চাপা এই ক্ষোভের অস্তিত্ব জানা রয়েছে বলে কি না স্পষ্ট নয়, তবে সোমবার নেতাই গ্রামে তৃণমূলের ‘নেতাই দিবস’-এর অনুষ্ঠানে নেতা-মন্ত্রীরা বারবার এলাকাবাসীকে বলে গেলেন, “ধৈর্য ধরুন। পাশে থাকুন।”
তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, “আহতদের কথাও নেত্রী (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) নিশ্চয় ভাববেন, আমরাও ভাবব। আপনারা আমাদের পাশে থাকুন।”
লালগড়ের নেতাই গ্রামে সশস্ত্র শিবির থেকে গুলিচালনার ঘটনায় ৪ মহিলা-সহ নিহত হন ৯ গ্রামবাসী। আহত হন ২৮ জন। গুলিচালনায় অভিযুক্ত সিপিএম। গত দু’বছরে নিহতদের পরিজনেরা কয়েক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। নিহত আরতি মণ্ডলের দুই ছেলে জুনিয়র কনস্টেবলের চাকরি পেয়েছেন। বাকি ৮ নিহতের পরিবার পিছু এক জনকে পূর্ত সড়ক দফতরের জাতীয় সড়ক বিভাগে অস্থায়ী কর্মীর কাজ দেওয়া হচ্ছে। আহতেরা এককালীন ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা সাহায্য পান। কিন্তু বিকল্প জীবিকা বা নিয়মিত প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা না হলে, ক্ষতিপূরণের টাকায় কত দিন চলবে, সে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
গুলিতে যাঁরা শারীরিক ভাবে ‘অক্ষম’ হয়ে গিয়েছিলেন, সেই দিলীপ সেন, হংসধ্বজ রায়, তাপস মণ্ডলের মতো অনেকেই প্রতিবন্ধী ভাতাটুকুও পাচ্ছেন না। তাঁদের জন্য হাল্কা কাজ কিংবা পরিজনদের জন্য কর্মসংস্থান হয়নি। নেতাই শহিদ স্মৃতি রক্ষা কমিটি’র সভাপতি দ্বারিকানাথ পণ্ডা বলেন, “আহতদের অনেকেই পরিবারের মূল উপার্জনকারী। কর্মক্ষমতা হারিয়ে তাঁদের সংসারে বিপর্যয় নেমে এসেছে।”
গুলিতে বাঁ চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে সব্জি চাষি দিলীপ সেনের। গুলি লেগে তাঁর ডান হাতও অসাড়। দিলীপবাবু বলেন, “আমার মতো অনেকেই প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন না। চাকরি পেলে সংসারের অভাব মিটত।” গুলিতে জখম বৃদ্ধ শক্তিপদ সিংহও ভাতা পান না। বললেন, “এখনও সম্পূর্ণ সুস্থ হইনি। ক্ষতিপূরণের টাকায় কত দিন চলবে?” ডান বুকে লাগা গুলিতে জখম গণেশ আদকের খেদ, “সংসারে সাতটা পেট। আমাদের কথা কবে ভাবা হবে জানি না।”
জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত বলেন, “আহতেরা কেন ভাতা পাচ্ছেন না, আমি খোঁজ নিয়ে দেখব।”
উন্নয়নের কাজও তেমন হচ্ছে না বলে ক্ষোভ রয়েছে এলাকায়। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মতো নেতাইয়ের রাস্তা পাকা হতে এখন ঢের দেরি। সবে মাটি ফেলে রাস্তা চওড়া করা হচ্ছে। নেতাই-সহ চারটি মৌজার জন্য জল সরবরাহ প্রকল্পের কাজও শেষ হয়নি। স্থানীয় উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিরও হাল ফেরেনি। এ দিনের সভায় পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা অবশ্য বলেন, “চারদিকে উন্নয়ন-যজ্ঞ চলছে। আগামী দিনে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করব। আপনারা ধৈর্য ধরুন, আমাদের সঙ্গে থাকুন।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.