নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
কলকাতা, বারাসত ছিটকে গিয়েছে। তাই দায়িত্ব আগেই বেড়ে গিয়েছিল। সেমিফাইনালে অমৃতসরের গুরু নানকদেব বিশ্ববিদ্যালয়কে হারিয়ে প্রত্যাশাও বাড়িয়ে দিল বর্ধমান। সোমবার বর্ধমানের মোহনবাগান মাঠে ১-০ গোলে জিতে ফাইনালে গেল তারা। আজ, মঙ্গলবার কেরল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে স্যার আশুতোষ কাপের চূড়ান্ত খেলায় বর্ধমানের দিকে তাকিয়ে থাকবে গোটা রাজ্যই।
অমৃতসরের সঙ্গে দৌড়ে এঁটে ওঠা যাবে কি না, সে নিয়ে চিন্তা ছিল। তাই শুরুতেই গোল তুলে নির্ধারিত সময়ে খেলা শেষ করার ছক কষেছিল বর্ধমান। তাড়াতাড়ি গোল আসেনি। খেলা গড়ায় নির্ধারিত সময়ে। তবু দমে যায়নি বর্ধমানের ছেলেরা। অতিরিক্ত সময়ে ৯ মিনিটে পেনাল্টি বক্স থেকে কয়েক ফুট দূরে ফ্রি-কিক পায় তারা। সেই শট গিয়ে বক্সের মধ্যে ওয়াল করে দাঁড়ানো এক অমৃতসর ফুটবলারের হাতে। রেফারি পেনাল্টি দিতেই অবশ্য ধুন্ধুমার শুরু হয়ে যায়। রেফারি অমর দাসকে তাড়া করেন অমৃতসর দলের খেলোয়াড়েরা। তাড়া খেয়ে মাঠের বাইরেও চলে যেতে হয় অমরবাবুকে। মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান অমৃতসরের খেলোয়াড়েরাও। |
বিদায় অমৃতসর
গুরু নানকদেব বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলে হানা বর্ধমানের। |
মাঠে হাজির দর্শকেরা যখন মাসখানেক আগে ঘটে যাওয়া ডার্বি-কাণ্ডের এক রকম পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে বলে ধরে নিয়েছেন, তখনই কোচ প্রদীপকুমার রানে জোর করে মাঠে ফেরত পাঠান ফুটবলারদের। মাঠ জুড়ে হাততালির ঝড় ওঠে অমৃতসরের কোচের জন্য।
পেনাল্টি থেকে গোল করেন বর্ধমানের দীপায়ন। তা আর শোধ হয়নি। গত বার এই দলটির কাছে ৩-০ গোলে হেরে প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নেওয়ার প্রতিশোধও নিল তারা। তবে এ দিন বর্ধমানের খেলা বিশেষ মন ভরাতে পারেনি দর্শকদের। প্রথম কুড়ি মিনিট ভাল খেললেও তার পরে ম্যাচ থেকে হারিয়ে যায় তারা। খেলা শেষে ক্ষুব্ধ দেখাল বর্ধমানের টিডি রথীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ও ম্যানেজার রঘুনাথ ঘোষকেও। রথীনবাবু মেনে নেন, “আজ ওরা অনেক ভাল খেলেছে। আমরা মাটিতে বল রেখে বিশেষ খেলতে পারিনি। তাই ম্যাচ থেকে হারিয়ে যাচ্ছিল ফুটবলারেরা।”
অমৃতসরের খেলোয়াড়দের দৌড়ের সামনে দমে ঘাটতি হচ্ছিল অনিল কিস্কু-অভিষেক দেবনাথদের। দুই স্টপার বাপ্পা চৌধুরী ও সঞ্জীব ঘোষ এব গোলকিপার চিরদীপের দৃঢ়তা টিকিয়ে রাখে দলকে। শেষে কালনা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র, সেখানকার কাঁসারিপট্টির বাসিন্দা দীপায়ন পেনাল্টিতে ঠান্ডা মাথায় বল জালে রাখায় প্রতিযোগিতায় জেগে রইল বর্ধমান। রথীনবাবু বললেন, “শেষ দিকে ওদের যশবীর সিংহের শট চিরদীপ উড়ে গিয়ে না বাঁচালে তো ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ায়।”
|
পেনাল্টির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রেফারিকে তাড়া
অমৃতসরের খেলোয়াড়দের। সোমবার উদিত সিংহের তোলা ছবি। |
তবে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষুব্ধ অমৃতসরের খেলোয়াড়েরা। দলের কোচ বলেন, “আমাদের বলজিন্দারের বুকের বাঁ দিকে বল লাগে। তার পরে তা হাতে লেগেছিল। কিন্তু তা অনিচ্ছাকৃত। এ ক্ষেত্রে পেনাল্টি হয় না। তবে আমাদের খেলা দর্শকেরা যে ভাবে অভিনন্দন জানিয়েছেন, আমরা খুশি।”
এ দিনই আন্নামালাইকে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হারিয়ে ফাইনালে গেল কেরল। মঙ্গলবার সকালে প্রথমে তৃতীয় স্থান নির্ণায়ক ম্যাচে খেলবে আন্নামালই ও গুরু নানকদেব বিশ্ববিদ্যালয়। তার পরে ফাইনালে কেরলের সামনে বর্ধমান। রথীনবাবু বলেন, “কেরলের ফুটবলারদের স্বাস্থ্য ভাল। আমাদের ফুটবলারেরা আজকের মতো প্রচুর মিসপাস করলে কিন্তু সমস্যা। তা না হলে আশা তো রয়েছেই।” ১৮ বছর পরে স্যার আশুতোষ কাপ বর্ধমানে এল কি না, আজ দুপুরে উত্তর মিলবে মোহনবাগান মাঠে। |