অম্বেডকরের তাপমাত্রা এখন ঘোরাফেরা করছে দেড় থেকে দু’ডিগ্রির আশেপাশে। দিল্লির হাড়-কাঁপানো শীতে ঠকঠক করে কাঁপছে গোটা শহরবাসী। তাতে কী? সোমবার সাতসকালে শিশির ভেজা মাঠেই জোর কদমে অনুশীলন করল ট্রেভর মর্গ্যানের ইস্টবেঙ্গল। যতক্ষণ দৌড়াদৌড়ি চলছে, ততক্ষণ আরাম। দাঁড়িয়ে পড়লেই জমে যাচ্ছেন পেন-অর্ণবরা। মেহতাব হোসেন বলছিলেন, “অনুশীলন করছি বটে। তবে পেশী তো একেবারে জমে যাচ্ছে।”
মঙ্গলবার ওএনজিসির বিরুদ্ধে ম্যাচে মর্গ্যানের প্রথম বাধা দিল্লির ঠান্ডা হলে, দু’নম্বর জায়গা দখল করেছে অম্বেডকরের এবড়ো-খেবড়ো মাঠ। কোথাও ঘাস নেই তো কোথাও বিশাল গর্ত। বল গড়াচ্ছে না, লাফাচ্ছে। রক্ষানাবেক্ষণের অভাব স্পষ্ট। মজার ব্যাপার হল, অম্বেডকরের গায়ে ফিরোজ শাহ কোটলার পিচে ক্রিকেট কর্তারা জমজমাট ভারত-পাকিস্তান খেলা করলেও, আই লিগের পরিকাঠামো নিয়ে কোনও হেলদোলই নেই ফুটবল কর্তাদের। বিরক্ত মেহতাব বললেন “বিশ্বকাপের কোয়ালিফাইং রাউন্ডের সময়ও মাঠ ভাল ছিল। এখন তো আরও খারাপ হয়ে গিয়েছে। তবে পরিস্থিতি যাই হোক, আমাদের লক্ষ্য তিন পয়েন্ট।”
বারো বছরের খরা কাটিয়ে গোয়ায় সালগাওকরকে হারানোর পরে গোটা ইস্টবেঙ্গলের মনোবল এখন তুঙ্গে। বাধা-বিপত্তি থাকা সত্ত্বেও লাল-হলুদ কোচ মর্গান বললেন “আই-লিগ জিততে হলে কোনও অজুহাত দেখালে চলবে না। ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। ওএনজিসি ম্যাচ জিতেই কলকাতায় ফিরতে চাই।” চোটের জন্য হরমনজিৎ সিংহ খাবরা এবং সঞ্জু প্রধানকে পাওয়া যাবে না। পায়ে কাচ ঢুকে যাওয়ায় সেলাই নিয়ে গোয়া থেকেই কলকাতায় ফিরে গিয়েছেন খাবরা। আর হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট নিয়ে দলের সঙ্গে দিল্লিতে থাকলেও, পরের দুটো ম্যাচেও সম্ভবত মাঠের বাইরে থাকতে হবে সঞ্জুকে।
ইস্টবেঙ্গলের দুই ‘ইউটিলিটি’ ফুটবলারকে না পাওয়া গেলেও, মর্গ্যান আত্মবিশ্বাসী। এখনও পর্যন্ত যা ঠিক হয়েছে, তাতে গোয়ার দল থেকে তিনটে পরিবর্তন করছেন ব্রিটিশ কোচ। বহু দিন বাদে ফের এক সঙ্গে খেলতে দেখা যেতে পারে নওবা-ভাসুমকে। আর লেফট ব্যাকে রবার্টের জায়গায় খেলতে পারেন সৌমিক দে। বাকি দল অপরিবর্তিতই থাকছে। মর্গ্যান অবশ্য বললেন, “ম্যাচের আগেই প্রথম একাদশ ঠিক করব। আমার ধারণা, দিল্লির আবহাওয়ায় খেলতে খুব একটা অসুবিধা হবে না ফুটবলারদের। কারণ শিলং এবং গ্যাংটকেও আমরা এ রকম ঠান্ডায় খেলেছি।”
ওএনজিসি ম্যাচের পরে আর মাত্র দু’টো অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে হবে ইস্টবেঙ্গলকে। বাকি সব কলকাতায়। তবে আই লিগ জয়ের স্বপ্ন বাস্তবে পূরণ করতে হলে, ঘরে-বাইরের সব ম্যাচই সমান গুরুত্বপূর্ণ। মর্গ্যানের জন্য সুখবর হল, মেহতাব-পেন-চিডি তো বটেই, পরপর দু’টো ম্যাচে গোল করে দুরন্ত ফর্মে রয়েছেন রবিন সিংহও। মর্গ্যান বলছিলেন “অ্যারোজ আর সালগাওকর ম্যাচের পরে ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছে। তবে ওএনজিসি-কে হালকা ভাবে নিতে চাই না।” পরিসংখ্যান যা, তাতে মঙ্গলবারের ম্যাচ জিতলেই ফের এক নম্বরে উঠে আসবে ইস্টবেঙ্গল।
|
মঙ্গলবার আই লিগে
ইস্টবেঙ্গল : ওএনজিসি (দিল্লি, ২-০০)
|