ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেটার এবং দু’দেশের দর্শকদের ধন্যবাদ দিয়ে এই লেখাটা শুরু করতে চাই। তাপমাত্রা ১.৯ ডিগ্রিতে নেমে গিয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে সারা দিন ধরে খেলা খুব কঠিন। দর্শকদেরও কাজটা সহজ ছিল না। হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় গ্যালারিতে বসে থাকা! বিশেষ করে যেখানে ভারত সিরিজটা হেরে গিয়েছে। তবে দিল্লির দর্শক অন্তত ম্যাচ শেষে খুশি মনে ঘরে ফিরতে পেরেছে।
ওই পরিবেশে পেসাররা সারাক্ষণ সাহায্য পেয়ে এসেছে। আইসিসি-র নতুন নিয়মটাও পেসারদের সাহায্য করছে। দু’প্রান্ত থেকে দুটো নতুন বল মানে পালিশটা অনেক বেশি সময় টিকে থাকবে। এই সুযোগটা দারুণ ভাবে কাজে লাগাল ইশান্ত, ভুবনেশ্বর আর আমাদের বাংলার সামি। সামির কথায় আগে আসি। ছেলেটাকে দেখে খুব ভাল লাগল। জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমেছে। তাও কিনা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। কিন্তু নার্ভের চাপে একদমই ভোগেনি। ভুবনেশ্বরও শুরুতে উইকেট তুলে নিয়ে পাকিস্তান ব্যাটিংয়ে ধাক্কাটা দিয়ে গেল। খুব অল্প স্কোর বাঁচাতে গেলে যেটার খুব দরকার আছে।
ভারতের এই তরুণ বোলিং আক্রমণকে, যার মধ্যে দিন্দাও থাকবে, কিন্তু খুব সতর্ক ভাবে নাড়াচাড়া করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে এই বোলিং আক্রমণই ভারতের তূণে একটা শক্তিশালী অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে। এদের সঙ্গে উমেশ যাদব আছে। তার উপর জাহির আর শ্রীসন্থ যোগ দিলে আমরা কিন্তু একটা ভাল বোলিং লাইন আপ পেয়ে যাব। এর পরেই কিন্তু বোলিং কোচ আর ট্রেনারের আসল কাজটা শুরু হবে। বোলারদের ফিট রাখা এবং ওদের পারফরম্যান্সের রেখচিত্রকে উপর দিকে নিয়ে যাওয়া এটাই হবে ওদের কাজ।
রবীন্দ্র জাডেজাও খুব ভাল বল করল কোটলায়। ওর ব্যাটিংটা আর একটু ভাল করতে হবে। তা হলে ভারত একই সঙ্গে পাঁচ বোলার খেলাতে পারবে, আবার ব্যাটিং গভীরতাটাও ঠিক রাখতে পারবে। ভারতীয় ব্যাটিং কিন্তু আবার কঠিন পরিস্থিতিতে ব্যর্থ হল। শুরুটা ভাল না হওয়ায় মিডল অর্ডারের উপর চাপটা পড়ে যাচ্ছে বারবার। তবে ভারতের ফিল্ডিংটা কিন্তু দুর্ধর্ষ হল। ফিল্ডাররাই অনেক সময় চাপে ফেলে দিল পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের। ইউনিস খানের আউটটাই ধরুন না। তিনটে দুর্দান্ত শট খেলেছিল ইউনিস। কিন্তু বিরাট, রাহানে, জাডেজা তিন বারই বল আটকে দেয়। এর পরেই ভুবির একটা সুপার্ব বলে স্টাম্পটা চলে যায় ইউনিসের।
ভারত সিরিজটা হারল ঠিকই, কিন্তু আমি বলব, ২-১ হারাটা ৩-০ হারের থেকে ভাল। শেষ ম্যাচ জেতাটা দলের মধ্যে একটা ‘ফিল গুড ফ্যাক্টর’ এনে দেবে যা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে কাজে দেবে।
পাকিস্তানের কথায় আসি। ওদের সহজেই ম্যাচটা জেতা উচিত ছিল। গোটা পঞ্চাশেক রান বাকি, হাতে সাতটা উইকেট। এই অবস্থায় ওদের ব্যাটসম্যানরা নিজেদের প্রয়োগ করতে পারল না। তবে পাকিস্তানের খুশি মনেই দেশে ফেরা উচিত। ওরা দুটো ম্যাচ হেরেছে ঠিকই, কিন্তু কোনও সিরিজই হারেনি। পাকিস্তানের এই দলটাকে যথেষ্ট প্রতিভাবান দেখিয়েছে। ঠিকমতো দেখভাল করতে পারলে ভবিষ্যতে এরাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাকিস্তানকে পুরনো জায়গায় নিয়ে যাবে।
পাকিস্তানের বোলিং নিয়ে কোনও সমস্য নেই। ওদের বোলাররা দারুণ প্রতিভাবান। কিন্তু মিডল অডার্র ব্যাটিংয়ে কিছু তরুণ মুখ চাই। নাসির জামশেদকে গোটা সিরিজেই দুর্দান্ত লেগেছে। তবে পাকিস্তানকে ধারাবাহিক ভাবে সফল হতে গেলে মিডল অর্ডারে জামশেদকে সাহায্য করার লোক দরকার।
|
নেটে নামলেন গম্ভীর |
আগের দিন রাত আটটা নাগাদ ম্যাচ শেষ হয়েছে। আর সোমবার দুপুর দুপুরই রাজ্য দলের নেটে দেখা গেল তাঁকে। পাকিস্তান সিরিজে রান পাননি গৌতম গম্ভীর। ইংল্যান্ড সিরিজের আগে তাই প্র্যাক্টিসের সামান্যতম সুযোগ ছাড়তে চান না। মঙ্গলবার ইংল্যান্ড দলের বিরুদ্ধে প্র্যাক্টিস ম্যাচ খেলবে দিল্লি। তারই প্র্যাক্টিসে কোটলায় এ দিন হঠাৎ হাজির গম্ভীর। তবে কালকের ম্যাচে তিনি খেলবেন না। দিল্লির কোচ বিজয় দাহিয়া বলেছেন, “গম্ভীর নেট প্র্যাক্টিস করার জন্যই এসেছিল।” নেটে অবশ্য প্রদীপ সাঙ্গোয়ানের বলও বেশ কয়েক বার সমস্যায় ফেলে দেয় গম্ভীরকে।
|
বদলা দেখছেন যুবরাজ |
টেস্ট সিরিজে হারের বদলা এক দিনের সিরিজ জিতে নিতে চান যুবরাজ সিংহ। পাকিস্তানকে হারানোর ২৪ ঘণ্টা পর যুবরাজের মাথায় এখন শুধুই ইংল্যান্ড। বলছিলেন, “ইংল্যান্ড টেস্টে আমাদের হারিয়ে গিয়েছে। এ বার ওয়ান ডে সিরিজটা জিতে সেই হারের বদলা নিতে হবে। তবে জানি কাজটা শক্ত। ইংল্যান্ড যথেষ্ট ভাল দল।” নিজের ফর্মে অবশ্য খুশি এই বাঁ-হাতি। “আমি বল ভালই হিট করছি। তবে ধারাবাহিকতাটা এখনও সে ভাবে দেখাতে পারছি না। টি-টোয়েন্টিতে ভাল রানই আসছে। সেই ছন্দটা এ বার ৫০ ওভারের ম্যাচেও দেখাতে হবে,” আত্মবিশ্বাসী শোনায় যুবরাজকে। |
|