নিজস্ব সংবাদদাতা • জয়পুর ও শ্রীরামপুর |
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র তোলাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও ছাত্র পরিষদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল হাওড়ার জয়পুর পঞ্চানন রায় কলেজ চত্বরের বাইরে। সোমবার এই ঘটনায় দু’জন ছাত্র ও দু’জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কলেজ ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার থেকে কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র দেওয়া শুরু হয়েছে। আজ, মঙ্গলবার পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দেওয়া হবে। দু’টি ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বই পরস্পরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছেন।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অনুপম ঘোষ বলেন, “গত বছর থেকেই এই কলেজে টিএমসিপির সংগঠন মজবুত। ছাত্র পরিষদের সংগঠন নেই বললেই চলে। সেই পরিস্থিতি মানতে না পেরেই বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে আমাদের দলের কর্মীদের উপর হামলা চালায় ছাত্র পরিষদ সমর্থকেরা। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের কলেজে আসতে বাধা দেওয়ার জন্যই এই হামলা।”
অন্য দিকে, ছাত্র পরিষদের পক্ষে সুপ্রিয় ঘোষের পাল্টা অভিযোগ, তাঁদের সংগঠনের সদস্যেরা যখন মনোনয়নপত্র তুলে বেরিয়ে আসছিলেন, তখন টিএমসিপির সমর্থকেরা হামলা চালায়।
গোলমালের খবর পেয়ে পুলিশ আসে। উলুবেড়িয়ার এসডিপিও শ্যামলকুমার সামন্ত বলেন, “মনোনয়নপত্র তোলাকে কেন্দ্র করে দু’টি ছাত্র সংগঠনের মধ্যে মারপিট হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে পুলিশের দিকেও ইট ছোড়া হয়। দু’জন পুলিশ কর্মী সহ চার জন আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।”
কলেজের অধ্যক্ষ সৌমিত্র সরকার বলেন, “মনোনয়নপত্র বিলির কাজ এ দিন সুষ্ঠু ভাবেই হয়েছে। কলেজের বাইরে একটা গোলমাল হয়েছে। মঙ্গলবারও মনোনয়ন পত্র বিলির কাজ হবে।”
অন্য একটি ঘটনায় মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে কলেজ থেকে বেরিয়েই প্রহৃত হয়েছেন ডিএসও-র দুই প্রার্থী। অভিযোগের তির টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে। সোমবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে শ্রীরামপুর কলেজে। আহতদের শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। টিএমসিপি নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ মানেননি।
ওই কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আগামী ২২ জানুয়ারি। সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত মনোনয়নপত্র তোলা এবং দাখিল করার কথা। ডিএসও-র অভিযোগ, বেশ কয়েক দিন ধরেই তাঁদের সমর্থকদের হুমকি দিচ্ছে টিএমসিপি-র ছেলেরা। তা সত্ত্বেও তাঁরা এ দিন কলেজে আসেন।
সংগঠনের দুই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র এবং পরিচয়পত্র কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সংগঠনের জেলা সম্পাদক দীপঙ্কর মণ্ডলের অভিযোগ, “সুমন সাহা এবং প্রসেনজিৎ বর্মন নামে দুই ছাত্র মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে বেরোতেই টিএমসিপি-র ছেলেরা ওঁদের উপরে চড়াও হয়। পুলিশের সামনেই ওঁদের মাটিতে ফেলে মারধর করা হয়। পরে অবশ্য পুলিশই হামলাকারীদের নিরস্ত করে। আমাদের মাত্র ৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন।” টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি শুভজিৎ সাউয়ের বক্তব্য, “ওখানে মারধরের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা নেই। ছাত্র পরিষদ, ডিএসও ওখানে মনোনয়ন জমা দিয়েছে। কেউ বাধা দেয়নি।” প্রসঙ্গত, গত বছর ছাত্র পরিষদ এবং টিএমসিপি জোট এখানে জিতেছিল। এ বার অবশ্য তারা আলাদা ভাবে লড়াই করছে। |