নিজস্ব সংবাদদাতা • নলহাটি |
শনিবার রামপুরহাট। রবিবার নলহাটি। বছরের শুরু থেকেই পরপর দু’টি থানা এলাকার মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটল। রবিবার নলহাটির তিনটি মন্দিরে চুরির চেষ্টা চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। যার মধ্যে দু’টিতেই তারা সফল। এক রাতে শহর জুড়ে তিনটি মন্দিরে চুরির ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলছেন পুলিশের ভূমিকা নিয়েই।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ২০১২ সালে নলহাটি থানার তেজহাটিতে রাধামোহন মন্দিরে বড় ধরনের চুরির ঘটনায় পুলিশ আজও অবধি চুরি যাওয়া সামগ্রী উদ্ধার বা চুরির ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করা— কোনওটিই করে উঠতে পারেনি। তার পরে বছরের শুরুতেই এক রাতে এলাকার তিনটি মন্দিরে এমন চুরির ঘটনায় এলাকাবাসী রীতি মতো ক্ষুব্ধ।
রবিবার গভীর রাতে নলহাটি পুরসভার নেতাজি রোডের উপর রক্ষাকালী মন্দিরে তালা ভেঙে বিগ্রহের প্রায় লক্ষাধিক টাকার গয়না চুরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্দির কমিটির সম্পাদক বিবেক মুখোপাধ্যায়। ওই একই রাতে নলহাটি পুর এলাকার করিমপুরে লোকনাথ মন্দিরেও চুরির ঘটনা ঘটে। অন্য দিকে, নলহাটি পুর এলাকার ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া বাসস্ট্যান্ডের কাছাকাছি সন্তোষী মাতার মন্দিরের দু’টি তালা ভেঙে চুরির চেষ্টা করছিল দুষ্কৃতীরা। কিন্তু আওয়াজে মন্দিরের সেবাইতের ঘুম ভেঙে যায়। তিনি চিৎকার জুড়ে দিলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায় বলে দাবি। সেবাইত গায়ত্রী পাঠক বলেন, “রাত একটা নাগাদ মন্দিরের গেটের লোহার শেকল পড়ে যাওয়ার শব্দ শুনতে পাই। কিছু ক্ষণ পরেই ঘণ্টা বাজার শব্দ শুনে বুঝতে পারি কিছু একটা ঘটেছে। চিৎকার করতে শুরু করলে দেখি দু’জন মন্দিরের পিছন দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে।”
অন্য দিকে, করিমপুর এলাকার লোকনাথ মন্দিরের সেবাইত বরুণ খামরু বলেন, “সোমবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা দেখতে পান, মন্দিরের লোহার গেট খোলা। সন্দেহ হওয়ায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এলে দেখা যায় মন্দিরের দানবাক্স নেই। লোকনাথবাবার দু’টি মূর্তির সোনার গয়নাও চুরি গিয়েছে।” বরুণ খামরু-সহ এলাকাবাসীর দাবি, পুলিশি টহলদারির অভাবে এলাকায় মন্দিরে চুরির ঘটনা রোখা যাচ্ছে না। এ দিকে, এ দিনই করিমপুর থেকে জগধারী যাওয়ার রাস্তায় ভাঙা দানবাক্স ও তালা পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে পুলিশ গিয়ে তা উদ্ধার করে। এলাকারই একটি ঝোঁপ থেকে নলহাটির নেতাজি রোডের রক্ষাকালী মন্দিরের একটি খাঁড়াটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত বছর সারা জেলা জুড়ে ৫০টিরও বেশি মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটেছে। নতুন বছরেও সেই চুরি থামছে না। বীরভূমের পুলিশ সুপার মুরলীধর শর্মা বলেন, “বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও বর্ধমান জেলায় মন্দিরে চুরির ঘটনাগুলিতে একটি আন্তঃ রাজ্য চক্র কাজ করছে বলে আমাদের অনুমান। লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের সঙ্গেও তাদের একটা যোগ আছে।” মুরলীধরবাবুর দাবি, “মন্দিরে চুরির ঘটনায় কাউকে ধরা হয়নি কথাটা ঠিক নয়। ধরপাকড় চালু আছে। তবে নলহাটির ঘটনাটি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।” |