মুখ্যমন্ত্রী নিজে এসে জমির পাট্টা বিলি করবেন। কিন্তু সেই জমি যে রানিগঞ্জ খনি এলাকার ধসপ্রবণ এলাকায়। যেখানে হয়তো মাটির নীচে হাঁ করা শূন্য গহ্বর বা ধিকিধিকি আগুন। কিছুটা আবার আদৌ খাসজমি নয়, বরং তাদের দখলে রয়েছে বলে দাবি করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ইসিএল।
এই নিয়ে আপত্তি তুলে সোমবার বর্ধমানের রানিগঞ্জ ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসী। দফতরের আধিকারিককে ঘেরাও করা হয়। নেতৃত্বে ছিল তৃণমূল। স্থানীয় তৃণমূল নেতা মধুসূদন ঘোষ বলেন, “১০ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসবেন বলে ঠিক আছে। কিন্তু তাঁর ‘নিজ ভূমে নিজ গৃহ প্রকল্প’ এখানে এসে ধাক্কা খাবে! যে সব কর্মী এই জমি চিহ্নিত করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।”
রানিগঞ্জ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দফায় মোট ১১৩ জনকে পাট্টা দেওয়ার কথা। এর মধ্যে বাঁশড়া এলাকায় ৩৬৫ নম্বর দাগে ১৭ জন ও ৬৪১ নম্বর দাগে ১৭ জনকে পাট্টা দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে। বিতর্ক এই ৩৪ জনের জমি নিয়েই। তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, ৩৬৫ নম্বর দাগে গত বছর দু’বার ধস নেমেছে। তাঁদের দাবি, ইসিএলের অফিসারেরাও ৩৬৫ নম্বর দাগের নকশা দেখিয়ে বলেছেন, এলাকাটি ধসপ্রবণ। এমনকী সেখানে অবৈধ খনিও রয়েছে। |
এ দিনই ৬৪১ নম্বর দাগ পরিদর্শন করে ইসিএলের বাঁশড়া কোলিয়ারির সমীক্ষক আদিত্য কর্মকার দাবি করেন, “এই জমির প্রায় ৭০% আমাদের। সংস্থার নানা কার্যালয় রয়েছে এখানে। তা সত্ত্বেও কী ভাবে পাট্টা দেওয়ার জন্য চিহ্নিত করা হল, জানি না।” রানিগঞ্জ ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক দেবদাস দত্তের দাবি, “সমস্ত বিষয় পর্যবেক্ষণ করেই জমি চিহ্নিত হয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েতও সহযোগিতা করেছে।” আমরাসোঁতা পঞ্চায়েতের প্রধান শিউলি গোস্বামী অবশ্য বলেন, “এ নিয়ে আমাদের কেউ কিছু জানায়নি।”
ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, “কেন এই সব জমি পাট্টা দেওয়ার জন্য চিহ্নিত হল, আমরা খোঁজ নিচ্ছি।” রাতে বর্ধমানের জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা দাবি করেন, “খনি এলাকায় ১৪১টি মৌজা ধসপ্রবণ চিহ্নিত হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জেনেছি, বাঁশড়ার ৩৬৫ নম্বর দাগের জমি তার মধ্যে পড়ে না। ৬৪১ নম্বর দাগের জমিও সরকারের খাসজমি। কেউ অভিযোগ করলে খতিয়ে দেখা হবে।” |