|
|
|
|
ফের শালীনতার গণ্ডি ছাড়ালেন জ্যোতিপ্রিয়
সীমান্ত মৈত্র • হাবরা |
দলের এক মন্ত্রী বলেছেন ‘রাজনৈতিক সৌজন্যের’ কথা। একই দিনে সেই দলেরই আর এক মন্ত্রী বিরোধী দলের নেতাদের নাম ধরে ধরে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন। যা শালীনতার ‘গণ্ডি ছাড়িয়েছে’ বলেই মনে করছে বিভিন্ন মহল। প্রাক্তন এক সিপিএম মন্ত্রীকে রাস্তায় দেখতে পেলে ‘জুতোর মালা’ পরানোরও ‘পরামর্শ’ দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের ওই মন্ত্রী।
প্রথম জন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নন মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম। অন্য জন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
রেজ্জাক মোল্লার উপরে হামলার ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ফিরহাদ বলেন, “আমাদের মিছিলের মাঝে সিপিএমের সভা পড়লে, মিছিল ঘুরিয়ে দিই। বা আমাদের মাইক বন্ধ করে দিই। সেটাই তো রাজনৈতিক সৌজন্য।”
সেই ‘সৌজন্যের’ তোয়াক্কা না করেই জ্যোতিপ্রিয়বাবু এ দিন হাবরায় এক অনুষ্ঠানে সিপিএম নেতা গৌতম দেব, অমিতাভ নন্দী, তড়িৎবরণ তোপদার, রেজ্জাক মোল্লা, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সম্পর্কে নানা কটূক্তি করেন। দিন কয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে ‘কুরুচিকর’ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছিল প্রাক্তন মন্ত্রী সিপিএমের আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে। পরে ক্ষমাও চেয়ে নেন আনিসুর। জ্যোতিপ্রিয়বাবু সেই প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “মায়েদের অনুরোধ, আনিসুরকে যেখানে পাবেন জুতোর মালা পরিয়ে দেবেন।” একই মঞ্চ থেকে বনগাঁয় দলের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেন, “আনিসুরকে বিধানসভায় হাত দিয়ে নয়, জুতো মারা উচিত।” রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে ছাড়েননি জ্যোতিপ্রিয়বাবু।
সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে মেলামেশা না করার পরামর্শ দিয়ে আগে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয়বাবু। এ দিন হাবরার বেড়গুমে দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধনে এসে ফের তিনি একই পরামর্শ দিলেন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “সিপিএমকে ঘৃণা করতে শিখুন। ওদের পাশে বসে চা-ও খাবেন না। তা হলে দুর্বল হয়ে পড়বেন। ওদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিশোধ নিতে পারবেন না।” তাঁর আরও বক্তব্য, “সকালে সিপিএমের কারও মুখ দেখে বেরোবেন না। সারাটা দিন বিষিয়ে যাবে।” তাঁর কথায়, “শপথ করুন, ওদের (সিপিএম) সঙ্গে কথা বলবেন না।” নিজের রাজনৈতিক জীবনের উদাহরণ তুলে বলেন, “আমার রাজনৈতিক জীবনে পাঁচ মিনিটের বেশি ওদের সঙ্গে কথা বলিনি। বিধানসভায় ওদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিই।” রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল সম্পর্কে ক্ষমতাসীন দলের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর মন্তব্য, “অসভ্য, বর্বর, গুণ্ডা, চোর, চিটিংবাজদের দল সিপিএম। ওদের দলের বিভিন্ন রকম জোকার আছে।”
হাবরায় তৃণমূলের সভা উপলক্ষে যে তোরণ করা হয়েছিল, শনিবার রাতে তার একাংশ আগুনে পোড়ে। সিপিএমই এতে জড়িত বলে অভিযোগ জ্যোতিপ্রিয়র। সমাজবিরোধী বুল্টন হাবরা পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা সিপিএমের অসীম ঘোষের ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ। অসীমবাবুকে জুতোপেটা করে ‘এলাকা ছাড়া’ করতে হবে বলে দলের কর্মী-সমর্থকদের ‘চাঙ্গা’ করেছেন জ্যোতিপ্রিয়বাবু। সেই জুতোপেটা যেন ‘রাজনৈতিক ভাবে’ হয়, সেই পরামর্শও দেন তিনি! |
|
|
|
|
|