|
|
|
|
গোঘাটে অভিযুক্ত তৃণমূল |
ধর্ষণের মামলা তুলতে বধূকে অপহরণের নালিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গোঘাট |
ধর্ষণের মামলা প্রত্যাহার করতে হবে, এই দাবিতে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছিল অভিযুক্তেরা। আতঙ্কে গোঘাটের গ্রাম ছেড়ে আরামবাগের ঘিয়া গ্রামে আশ্রয় নেন সিপিএম সমর্থক ধর্ষিতা ওই বধূ ও তাঁর স্বামী। রবিবার ভোরে ওই গ্রাম থেকেই ভাসুর ও জা’কে মারধর করে ধর্ষিতা ও তাঁর স্বামীকে ফের তাঁদের নিজের গ্রামে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
অন্য দিকে, অপহরণের অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। গোঘাটের তৃণমূল নেতা আতাউল হক বলেন, “আমার উদ্যোগেই ওই বধূ থানায় অভিযোগ দায়ের করতে পেরেছিলেন। মামলা তোলার জন্য ওঁদের কেউ চাপ দেয়নি। ওঁরা ববার ভিটেয় থাকতেন। বাবার উপরে রাগ করেই ভিটে ছেড়ে যান। পরে বাবাই ওঁদের ফিরিয়ে এনেছেন। এর সঙ্গে তৃণমূলের কেউ জড়িত নন।”
এসডিপিও (আরামবাগ) শিবপ্রসাদ পাত্র বলেন, “এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ২০১১ সালের ২৪ মে ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে গোঘাটের ওই গ্রামে। অভিযোগ, পেশায় দিনমজুর ওই ব্যক্তির বাড়িতে চড়াও হয় দুই তৃণমূল সমর্থক জাহাঙ্গির খান ও দুলাল গায়েন। সেখানে ওই ব্যক্তিকে ঘরে আটকে রেখে তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণ করে তারা। ঘটনার পর ওই বধূকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কয়েক মাস পরে গ্রেফতার হয় জাহাঙ্গির ও দুলাল। পরে তারা জামিনে ছাড়া পায়। সিপিএমের অভিযোগ, তারপর থেকেই অভিযুক্তেরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য ওই বধূর বাড়িতে ক্রমাগত হামলা চালাচ্ছিল। দলের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগও করা হয়েছে যে, বধূর বাবাকেও তুলে এনে ভয় দেখিয়ে আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করা হয়। তাঁর মেয়েকে মানসিক ভারসাম্যহীন হিসাবে প্রতিপন্ন করে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিল অভিযুক্তেরা।
এরপরেই ওই বধূ তাঁর স্বামীকে নিয়ে ঘিয়া গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে চলে আসেন। রবিবার সেখান থেকে ওই বধূ ও তাঁর স্বামীকে অপহরণের পিছনেও জাহাঙ্গির ও দুলালের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ সিপিএমের। যদিও ওই বধূকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “আমাকে কেউ জোর করে তুলে আনেনি। পুলিশকেও একই কথা বলেছি।” বধূ এমন কথা বললেও সিপিএমের দাবি, গ্রামে থাকার জন্যই ভয়ে ওই বধূ এমনটা বলতে বাধ্য হয়েছেন।
বধূর ভাসুর এ দিন হাসপাতালে বলেন, “জনা দশেক ছেলে গাড়ি করে ভাইয়ের শ্বশুরকে ধরে এনেছিল। মামলা তোলার হুমকি দিয়ে ভাই ও তাঁর স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে দেখে আমি ও আমার স্ত্রী বাধা দিলে আমাদের মারধর করে ওদের নিয়ে চলে যায়।” আরামবাগের সাংসদ সিপিএমের শক্তিমোহন মালিক বলেন, “দলীয় কর্মীদের এই জঘন্য অপরাধ ঢাকতে তৃণমূল কতটা নীচে নামতে পারে এতেই তার প্রমাণ। ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা করছি। সমস্ত বিষয়টি আরামবাগ থানা ও গোঘাট থানায় জানিয়েছি।” |
|
|
|
|
|