শ্যামপুকুরে প্রৌঢ় খুনের ঘটনায় তিন জন গ্রেফতার হলেও মূল অভিযুক্ত ছোটেলাল সাউ এখনও অধরা। ধৃতদের নাম গোপীনাথ সাউ, বিজয় সাউ ও সুলেখা সাউ। তাঁদের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু হয়েছে। এই ঘটনায় অভিযোগের তির স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর মঞ্জুশ্রী চৌধুরীর ছেলে বাপ্পার দিকেও। তবে পুলিশ ওই অভিযোগ মানতে চায়নি।
ডিসি (উত্তর) গৌরব শর্মা বলেন, “চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আমরা তিন জনকে গ্রেফতার করেছি।” পুলিশ জানায়, গোপীমোহন দত্ত লেনের বাসিন্দা শুভেন্দু দত্তের সঙ্গে তাঁর ভাড়াটে ছোটেলালের বিবাদ চলছিল। তার জেরে শনিবার সন্ধ্যায় শুভেন্দুবাবুর বড় মেয়ে শ্রীময়ীকে মারধর করেন ছোটেলাল ও সুলেখা। অভিযোগ, বিবাদ শুরু হলে শুভেন্দুবাবুকে মরাঠা ডিচ লেনে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে ডেকে পাঠানো হয়। শুভেন্দুবাবুর মেয়ে শ্রীপর্ণার অভিযোগ, দলীয় কার্যালয়ে গোপীনাথ, ছোটেলাল ও বিজয় তাঁর বাবাকে মারধর করেন। সেখানে বাপ্পা-সহ কয়েক জন ছিলেন বলেও অভিযোগ। কার্যালয়ে ডাকার কথা অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দলীয় কার্যালয় থেকে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় শুভেন্দুবাবুকে বাগবাজার স্ট্রিটে চিকিৎসক গৌতম দাসের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আরজিকরে মারা যান তিনি। রবিবার ওই চিকিৎসক গৌতমবাবু বলেন, “শুভেন্দুবাবুর শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। হৃদ্স্পন্দনও অনেক বেশি ছিল।”
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, শাসক দলের সঙ্গে জড়িত থাকার সুবিধা নিয়েই শুভেন্দুবাবুকে মারধর করেন ছোটেলালরা। তাঁকে বাঁচাতে আসেননি শাসক দলের কর্মীরাও। যদিও ঘটনার সঙ্গে তাঁর ছেলে ও দলের কর্মীরা কেউ জড়িত নয় বলে দাবি মঞ্জুশ্রীদেবীর। বাপ্পা বলেন, “শুভেন্দুবাবু বাড়িওয়ালা-ভাড়াটের ঝামেলায় সালিশি করার জন্য আমার কাছে আসেন। আমি বিষয়টি নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে নিতে বলি।” তাঁর সালিশি করার ক্ষমতা নেই বলেই তিনি করতে চাননি বলে জানান বাপ্পাবাবু। তবে ছোটেলালের সঙ্গে পরিচিতির কথা স্বীকার করেছেন তিনি।
স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, বাপ্পা ও শাগরেদরা এতে জড়িত। তাঁদের গ্রেফতারের দাবিতে থানায় বিক্ষোভ দেখান কিছু বাসিন্দা। দেওয়া হয় স্মারকলিপিও। পুলিশ অবশ্য কিছু বলতে চায়নি। বাসিন্দাদের একাংশের আরও অভিযোগ, বাপ্পাবাবু ও তাঁর দল তোলাবাজির সঙ্গে যুক্ত। মঞ্জুশ্রীদেবী বলেন, “আমার ছেলের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি।” |