পুলিশের উর্দি পরা কয়েকজন দুষ্কৃতী এক যুবককে তাঁর বাড়ি থেকে অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ উঠছিল শুক্রবার গভীর রাতে। শনিবার সকালে ওই যুবকের পরিজনেরা পুলিশের কাছে অপহরণের অভিযোগও দায়ের করেন। কিন্তু এর কয়েক ঘণ্টা পরেই হাওড়া সিটি পুলিশ জানতে পারে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে বর্ধমানের মেমারি থানার পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার মালিপাঁচঘড়ার নস্করপাড়া লেনে। হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তাদের দাবি, এটা কোনও অপহরণের ঘটনা নয়। কোনও দুষ্কৃতী তাঁকে নিয়ে যায়নি। হাওড়া সিটি পুলিশের এডিসি (নর্থ) রশিদ মুনির খান বলেন, “বর্ধমানে একটা খুনের মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওই যুবককে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে স্থানীয় থানাকে তা না জানানোর জন্যই এই সমস্যা হয়েছে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, বছর ছাব্বিশের ওই যুবকের নাম বীরবল চৌধুরি। তিনি স্থানীয় হনুমান জুটমিলের কর্মী। শুক্রবার রাত ১টা নাগাদ হঠাৎ বীরবলের বাড়ির দরজায় তাঁর নাম করে ধাক্কা দেন কয়েকজন। দরজা না খুলেই ওই যুবকের স্ত্রী রুনু চৌধুরী জানতে চান, কারা, কেন তাঁর স্বামীকে ডাকছেন। তখন বাইরে থাকা লোকজন নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে জানান, বীরবলের কারখানায় একজনের দুর্ঘটনা হয়েছে। তিনি না গেলে হাসপাতালে ভর্তি করা যাবে না। তাই যেন দরজা খোলা হয়।
রুনুদেবী বলেন, “দরজা খুলতেই পুলিশের পোশাক পরা তিনজন কোনও কিছু না বলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে একপ্রকার জোর করে ওঁকে নিয়ে চলে যায়।” দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পরেও স্বামী ফিরছেন না দেখে ওই রাতেই এক আত্মীয়কে নিয়ে প্রথমে জয়সোয়াল হাসপাতালে যান রুনুদেবী। সেখানে স্বামীকে না পেয়ে থানায় গিয়ে জানতে পারেন, হাওড়ার কোনও থানা থেকেই তাঁদের বাড়িতে যাওয়া হয়নি। পরে শনিবার সকালে মালিপাঁচঘড়া থানায় তিনি অভিযোগ দায়ের করেন। শনিবার সকালে পুলিশের পোশাক পরে এই ভাবে অপহরণের ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। নস্কর পাড়া লেনে ওই যুবকের বাড়ির সামনে ভিড় জমে যায়। যদিও বিকেলের দিকে আসল ঘটনাটি জানা যায়। বর্ধমান পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর মেমারিতে একটি লরির খালাসিকে খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বীরবলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্ধমান পুলিশের এক অফিসারের কথায়, “পুলিশ পরিচয় দিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা দেখানো হয়েছিল। তার পরেই নিয়ে আসা হয়েছে।” |