|
|
|
|
|
|
|
ছবি: বেরবেরিয়ান সাউন্ড স্টুডিয়ো
দেশ: ইংল্যান্ড
পরিচালক: পিটার স্ট্রিকল্যান্ড
সাল: ২০১১
শ্যামল দাসরায় |
|
ইতালিতে কাজ করার এত বখেড়া জানলে, গিল্ডেরয় থোড়ি লন্ডন ছেড়ে এই বিদেশ বিভুঁইয়ে মরতে আসতেন! তিনি রীতিমত পোড় খাওয়া এক জন শব্দযন্ত্রী। দেশে তাঁর হাতে কতকগুলি ছবির কাজ পড়ে আছে। আর সে সব ছেড়ে স্রেফ দুটো বাড়তি পয়সার লোভে তিনি এই ইতালিয়ান ‘জিয়ালো’, মানে উদ্ভুতুড়ে হরর-থ্রিলারের বরাতটা নিয়ে নিলেন! ইউনিট-ও তেমন। প্রযোজক আর পরিচালক সব সময় এ-ওর বিরুদ্ধে প্যাঁচ কষছে। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মধ্যেও গ্রুপবাজির চূড়ান্ত! সবাই সবার নামে চুকলি কাটছে! ও দিকে বেচারা গিল্ডেরয়ের টি-এ বিলগুলো পড়েই থাকে। প্লেনের টিকিটের টাকাটা অবধি মেলে না!
বছর ৬-৭ আগে তাঁর প্রথম ছবি ‘ক্যাটালিন ভার্গা’ বানাতে গিয়ে প্রায় একই রকম সমস্যায় পড়েছিলেন পরিচালক পিটার স্ট্রিকল্যান্ড। গ্রিক মা, ইংরেজ বাবার ছেলে পিটার তখন দেশ ছেড়ে অনেক দূরে হাঙ্গেরির বুডাপেস্টে বিদেশি ভাষা শেখানোর ইস্কুলে ইংরেজির মাস্টারমশাই। বার্লিন উৎসবে হইচই ফেলা ‘ক্যাটালিন ভার্গা’-র পটভূমি ছিল রোমানিয়ার গ্রাম। ভিন দেশে, অন্য ভাষায়, অচেনা ইউনিটের সঙ্গে নিজের গাঁটের কড়ি খরচ করে ছবি বানানো যে কী ঝকমারি, পিটার সে বার হাড়ে-হাড়েই টের পেয়েছিলেন। তবে স্ট্রিকল্যান্ডের দু’নম্বর ছবিটি শুধুই ইতালিতে ছবি করতে এসে এক ব্রিটিশ শব্দযন্ত্রীর ঝামেলা-ঝক্কির গপ্প হয়ে থাকে না। বরং সিনেমার সাউন্ডট্র্যাকের অন্দরে ঘাপটি মেরে থাকা অন্য এক রিয়েলিটি-র খোঁজে নেমে পড়ে।
স্ট্রিকল্যান্ডের ছোটবেলায় ওঁর দাদা আর তার বন্ধুরা মিলে ভিডিয়ো-তে ‘বড়দের’ ছবি দেখত। পিটারকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হত না। পিটার বন্ধ দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে শুধু সাউন্ডট্র্যাকটাই শুনতে পেতেন। চিৎকার, আর্তনাদ, মারামারি, কান্না, আরও কত রকম সাউন্ড এফেক্ট! শুধু কানে শোনা শব্দ জুড়ে জুড়ে ছোট্ট পিটার মনে মনে নিজের মতো একটা ন্যারেটিভ বানিয়ে নিতেন। এ ছবিতেও গিল্ডেরয় ‘দ্য ইকুয়েস্ট্রিয়ান ভোর্টেক্স’ নামে সত্তর দশকের যে তুমুল ভায়োলেন্স-ভরা ইতালিয়ান ‘হরর’ সিনেমার সাউন্ড ডিজাইন করতে আসেন, দর্শক সে ছবির একটা ফ্রেমও দেখতে পান না। যে ছবি তৈরি করা নিয়ে এত কিছু ঘটে যাচ্ছে, প্রযোজক-পরিচালক পারস্পরিক ল্যাং-মারামারি চলছে, প্রযোজকদের সঙ্গে ঝগড়া করে নায়িকা মাঝপথে ছবি ছেড়ে চলে যাচ্ছে, আর যাওয়ার আগে তার অভিনয় করা অংশের টেপ-টা নষ্ট করে দিচ্ছে দর্শকের সঙ্গে সেই ‘সিনেমা উইদিন সিনেমা’র ‘দেখা’-শোনা সবটাই ওই সাউন্ড স্টুডিয়ো-র ঘরের মধ্যে, গিল্ডেরয়ের মাথায় আঁটা ওই হেডফোনের মাধ্যমে। |
|
ছবির শুরুতেই আমরা গিল্ডেরয়কে দেখি সাউন্ড স্টুডিয়োর রিসেপশনে। তো তাঁর সঙ্গে সঙ্গে ওই যে ছবিটা সাউন্ড স্টুডিয়োর গর্তে ঢুকে পড়ল, তার পর আর বেরলো না। পুরো ছবিটা জুড়েই তাই সাউন্ড স্টুডিয়োর ছায়া-ছায়া লম্বা-লম্বা করিডোর, রেকর্ডিং রুম, সেখানে ছড়ানো সত্তরের দশকের সেই ‘অ্যানালগ’ শব্দযুগের যন্ত্রপাতি, টেপরেকর্ডার, হেডফোন! এমনিতে আমাদের ধারণা: ফিল্মে ইমেজ প্রধান, শব্দ তার সহকারী। সম্পর্কটা এই ছবিতে পুরোপুরি উল্টে যায়। এখানে মূলত শব্দ দিয়ে বাস্তব বুঝে নেওয়ার, ইমেজ ভেবে নেওয়ার চালচিত্র। ওই সাউন্ড স্টুডিয়ো, আর লাগোয়া গিল্ডেরয়ের এক চিলতে ফ্ল্যাটেই নায়ক ও দর্শকের ঘোরাফেরা। এ ছবিতে বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ বলতে দেশ থেকে আসা গিল্ডেরয়ের মায়ের চিঠি আর ইংল্যান্ডে তাঁর বাড়ির পেছনের ছোট্ট বাগানের একটা ছবি।
বাদবাকি সময়টায় গিল্ডেরয় হরর-ছবিটার জন্য হাড়-কাঁপানো, রক্ত-মাখানো সব শব্দ তৈরি করেন। ডাইনিদের মায়া-জাদুর শব্দ, মরা ভূতের রেগে ওঠার শব্দ, ভয়ানক যন্ত্রণায় একটি মেয়ের ককিয়ে ওঠার শব্দ। নিজেরই তৈরি করা এই সব শব্দের জালে গিল্ডেরয় নিজেই একটু একটু করে বাঁধা পড়ে যান। স্টুডিয়ো সহকারীরা টেবিলের ওপর তরমুজ রেখে ভারী-ভারী ক্যারিবিয়ান ছুরি দিয়ে তাতে কোপ মারে। মানুষের নরম শরীরে তলোয়ারের কোপ পড়ার সাউন্ড-এফেক্ট! রক্তাক্ত নাড়িভুঁড়ির মতোই টেবিলময় ছড়িয়ে থাকে কাটা তরমুজের শাঁস-জল! ‘জিয়ালো’ ছবির বিদঘুটে, হাস্যকর ফর্মুলা পেরিয়ে এক অচেনা-অধরা ‘ভার্চুয়াল’ হিংস্রতা আর আতঙ্কের অনুভব ছড়িয়ে পড়ে হেডফোনের ভেতর আর হেডফোন উপচে সেই অনুভূতি দর্শকদের মধ্যেও শিরশিরিয়ে যায়। তাই এটা আর ‘হরর’ ছবি থাকে না, হয়ে ওঠে হরর-সিনেমার মনস্তাত্ত্বিক মানচিত্র। |
|
২২ অক্টোবর ২০৫৮ |
ইভি এম মেশিনের মাধ্যমে ভোট আর নেওয়া হবে না। ভারতের নির্বাচন কমিশনের প্রধান আজ জানিয়েছেন, লোকসভা এবং বিধানসভার ভোটপর্ব সম্পন্ন করতে প্রায় কুড়ি হাজার কোটি টাকা খরচ হয়ে থাকে। এই বিপুল খরচ বন্ধের জন্য, এ বছর থেকে এস এম এস-এর মাধ্যমে ভোট নেওয়া হবে। এতে কাজের দিনও নষ্ট হবে না।
বিশাল লাইন নেই, রোদে ভাজা হওয়া নেই, বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রে বাড়িতে বসেই নিজের মোবাইল থেকে ভোট দিয়ে মুহূর্তে কর্তব্য পালন করবেন ভোটাররা। শুধু ভোটার আই-ডি কার্ডের নম্বর উল্লেখ করে, প্রার্থীর নাম লিখে, কমিশনের বক্স নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। যে ০.২৩% মানুষের এখনও মোবাইল নেই (কলকাতা শহরে শুধু অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়), তাঁরা পঞ্চায়েত বা পুরসভায় গিয়ে কমিশনের দেওয়া মোবাইলে ভোট দেবেন।
দেশের সব রাজনৈতিক দলই প্রচণ্ড প্রতিবাদ করেছে। ‘এতে ভোটে হিউম্যান টাচ কমে যাবে’, ‘ভোটের উৎসব-উৎসব ব্যাপারটা চলে গেলে আসমুদ্রহিমাচল জনগণের ফেলো-ফিলিং উবে যাবে’, ‘বাথরুমে বসে ভোট দেওয়া চলছে না চলবে না’, ‘রিগিং না থাকলে ভোট কীসের’, নানা আওয়াজ উঠেছে। তবে সরকারি কর্মীরা হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছেন। গত বছর এই রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ২০১৬ জন সরকারি ভোটকর্মীকে মার খেতে হয়েছিল। এ বার তার আশঙ্কা নেই দেখে তাঁরা অনেকেই ভোটের দিন দিঘা যাচ্ছেন।
তুষার ভট্টাচার্য, কাশিমবাজার, বহরমপুর |
|
|
|
|
নতুন বছরের দশটা
রমরমে রেজোলিউশন
উপল সেনগুপ্ত |
|
১ সরস্বতীকে অঞ্জলি দেব না।
বিদ্যার অন্যত্র বিয়ে হয়েছে। |
২ বউয়ের দেওয়া টিফিন এত দিন
কুকুরদের দিতাম। এ বছর বেড়ালদের দেব।
|
৩ অফিসের কম্পিউটারে পর্নো
দেখার সময় বস-কে ডেকে নেব।
|
|
|
৪ বুড়ো বাবার বাঁধানো দাঁতের
পাটি দিয়ে আখরোট ভাঙব।
|
|
|
৫ ক্লাবে ক্যারম খেলে রাত করে
বাড়ি
ফেরার আগে ঘড়ি সাড়ে
তিন ঘণ্টা পিছিয়ে দেব। |
৬ বাড়িতে মজুত মদে জল
মিশিয়ে
রাখব, যাতে বন্ধুদের
শরীর খারাপ না হয়।
|
৭ বউয়ের প্রিয় সিরিয়াল
শুরুর
আগে রিমোট
বাথরুমে লুকিয়ে রাখব। |
|
|
৮ বান্ধবীকে নিয়ে লং ড্রাইভে
যাওয়ার
সময় হৃতিক
রোশনের মুখোশ পরে নেব। |
৯ ছেলের পাওয়া প্রেমপত্র লুকিয়ে
পড়ব এবং অসভ্য লাইনগুলো
আন্ডারলাইন করে ফেরত দেব। |
|
|
১০ প্রতিবেশীর মোরগের মুখে সেলোটেপ এঁটে দেব। ভোরে ওঠার হাঙ্গাম বাতিল।
|
|
|
|
|
• বছরের শেষ দিনে হিন্দি ছবি ‘নেশা’-র শুটিং করছিলেন মডেল-অভিনেত্রী পুনম পান্ডে, ছবিতে তাঁর অভিনীত চরিত্রটির নেশা করার দৃশ্যগ্রহণ-মুহূর্তে নায়িকার উৎসাহের প্রাবল্যে ও পরিচালকের সম্মতিতে শুটিং সেটেই হল নিউ ইয়ার ইভ পার্টি, নায়িকা ঢালাও মদ খেলেন আর সে দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি হল। রথ দেখা-কাম-কলা বেচার আধুনিকতম ভার্সান: সেলিব্রেশনও হল, কাজও উতরে উল্লুস। পুনম উবাচ: সত্যি সত্যি মাতাল হয়ে শট দেওয়াটাই সবচেয়ে ‘রিয়েলিস্টিক’, এর কাছে তুখড় অভিনয় কখনওই পাত্তা পাবে না। রুশ মঞ্চাভিনেতা-নির্দেশক স্তানিস্লাভস্কি সেই কবে বলে গেছেন ‘মেথড অ্যাকটিং’-এর কথা, অভিনয়-মুহূর্তে বিশেষ একটি আবেগকে ফুটিয়ে তুলতে অভিনেতা কখনও স্মৃতির গহনে ডুব দিয়ে নিজের জীবন থেকেই তুলে আনবেন দুঃখরাগশোকঈর্ষার চরমতম অভিব্যক্তি, বা অচিন অনুভূতিকে শিখতে-জানতে চলে যাবেন হাসপাতাল-শুঁড়িখানা-গোরস্থান-পতিতালয়েই। এ জিনিস অভিনয়ের মোক্ষম হাতিয়ার কি না, তর্ক বিস্তর, প্লটে ভয়াবহ খুন-জখম-ধর্ষণ আছে বলেই কি অভিনেতা নিজে ও সব করতে ছুটবেন, যৌন দৃশ্যে কি অর্গ্যাজ্ম না ঘটলে টেক ও.কে. হবে না?! ক্যাজুয়াল আমোদী পুনম-কীর্তি অভিনয়তত্ত্বের বহুচর্চিত এক প্রশ্নকেই উসকে দিল অজান্তে।
• নতুন বছরে পয়সাওলা চিনেদের স্টেটাস-সিম্বল হয়ে আবির্ভূত হল হাই-এন্ড বাইক। রাজকীয় হার্লে ডেভিডসন নয়, বাইক মানে বাইসাইকেলই, তবে বিশ্ববিখ্যাত ইতালিয়ান-ফ্রেঞ্চ সাইকেল কোম্পানিগুলোর দামি যন্ত্রাংশ কিনে চিনে স্বাদ-রুচি-মর্জিমাফিক ‘কাস্টমাইজ’ করে নেওয়া ব্যাপক কেতাদুরস্ত দ্বিচক্রযান, এক একটার দর গড়পড়তা চিনে নাগরিকের তিন বছরের রোজগারের সমান। হালে ধনী চিনেম্যানরা মজেছেন এই ‘বাইক কালচার’-এ, ঝাঁ-চকচকে ব্র্যান্ডেড গাড়ি বা আইপ্যাড-আইফোন চাই না, বাইকই কাম্য। অভিনবত্বের রেলাও নেওয়া গেল, সঙ্গে দূষণবিরোধী, পরিবেশবান্ধব হাততালি ফ্রি। উপরি: ফিরে এল শৈশবে বাপ-ঠাকুরদার সঙ্গে দু’চাকায় চেপে বেড়ানোর সুখস্মৃতি। একাধারে ফ্যাশন স্টেটমেন্ট, আবার নিতান্ত পার্সোনাল, নস্টালজিক ঘনঘটা। তাই গ্যারেজে পড়ে থাকা চার-চাকায় মরচে ধরছে, বাজারহাট-নেমন্তন্নরক্ষা-আউটিং-বিজনেস ট্রিপ সব হচ্ছে বাইকে চেপে, বছর-শেষের বোনাস হিসেবে কোম্পানি-মালিকরাও কর্মীদের মন ভোলাচ্ছেন বাহারি বাইক জুগিয়ে। ফি-বছর আটাশ মিলিয়ন অর্ডারি নবজাতকের ক্রিংক্রিংয়ে চিনে-আকাশ চমকিত। |
|
|
হারাধনের দশটি ছেলে করতে গেল পিক
নিক আর সেই মেয়েকে দেখে সব্বারই ঝিকমিক।
মহাভারত ইন্টু টু-য়ে মেয়ে বলিল: আমি
more: merrier যাপন করি, দশ জনই হোক স্বামী! |
একটা খাব দুটো খাব
সব ব্যাটাকেই চিবিয়ে খাব
দিল্লি-লাড্ডু ফুরিয়ে গেলে
পরোয়া নেই, বম্বে যাব! |
|
|
|
• বহুবিবাহকে সমাজ দু’চক্ষে দেখতে পারে না। প্রতিকার হল, বহু ডিভোর্স করুন! অ্যান্টনি বার্জেস
• বহুবিবাহ মানে হল প্রায়শ্চিত্তের ঘরে অনুতাপের অনেকগুলো চেয়ার। একটা বিবাহ মানে, একটা চেয়ার। অ্যামব্রোস বিয়ার্স
• বহুবিবাহ: জীবনের ভাঁড়ারে যা নেই, প্রাণপণে তা টেনে বের করার চেষ্টা।
এলবার্ট হাবার্ড
• এক যে ছিলেন সাধ্বী সতী, পতির সংখ্যা পাঁচ।
দোষের মধ্যে সহবাসের বিচার কিংবা বাছ
ছিল না তাঁর, ছিল না মোটেও—
চুমো খেতেন আপন ঠোঁটেও,
বাদ একমাত্র একাদশীতে মুখচুম্বন ও মাছ।
জগন্নাথ চক্রবর্তী
(দেবীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘বাংলা লিমেরিক সংগ্রহ’ থেকে) |
|
|
|
আপনিও লিখে পাঠাতে চান ভবিষ্যতের একটা রিপোর্ট? ঠিকানা:
টাইম মেশিন,
রবিবাসরীয়,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০ ০০১ |
|
|
|
|
|
|
|