ভরা মরসুমে আবাসিক শিবিরে চলল করিম বেঞ্চারিফার মোহনবাগান!
আড়াই বছরের নির্বাসন ঘোষণার পর সবুজ-মেরুন ফুটবলারদের উপর তীব্র চাপের মধ্যেই নেমে এল নতুন আর এক সমস্যাতিন-চার মাস নাকি অনেক ফুটবলারেরই মাইনে বাকি!
ওডাফা-টোলগে-নবিদের নিয়ে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠার আগেই অবশ্য মাঠে নেমে পড়লেন ক্লাব কর্তারা। ফেডারেশন নির্বাসন ঘোষণার পর বিক্ষোভের ভয়ে কারফিউ জারি করে ক্লাবে আসা বন্ধ করে দিয়েছিলেন কর্তারা। শনিবার সকালে অবশ্য স্পনসর ইউ বি-র প্রতিনিধিকে নিয়ে মাঠে হাজির হয়ে যান ক্লাব সচিব অঞ্জন মিত্র এবং অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত। আশ্বাস দেওয়া হল, এ মাসের মধ্যেই কয়েক কিস্তিতে বাকি মাইনে দিয়ে দেওয়া হবে টোলগে-নবি- স্নেহাশিসদের। ইউ বি-প্রতিনিধি অলোকেশ বন্দ্যোপাধ্যায় সে রকই বলে গেলেন সাংবাদিকদের। “সব ঠিকঠাক হয়ে গেছে। আর কোনও সংশয় নেই।” ক্লাব কর্তারা অবশ্য বলছেন, “অগ্রিম ধরলে কারও এক মাসের বেশি মাইনে বাকি নেই।” ফুটবলাররা অবশ্য কর্তাদের দেওয়া হিসাব মানতে রাজি নন।
অন্য ক্লাবগুলি যখন আই লিগ খেলতে খেলতে রাজ্যে রাজ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তখন মোহনবাগানে শুধুই অন্ধকার। ডার্বি ম্যাচে দল তুলে নিয়ে ‘চমক’ দিয়েছিলেন কর্তারা। ভরা মরসুমে আবাসিক শিবির করে তারা আরও একটি ‘চমক’ দিলেন। যা সত্যিই হাস্যকর। কিন্তু এ ছাড়া কোনও উপায় ছিল না জানাচ্ছেন কর্তারা।
আসলে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে পাড়ায় পাড়ায়। বাগানের জন্ম যেখানে সেই আহিরীটোলা অঞ্চলে এ দিন বিশাল মিছিল বেরোয় কর্তাদের পদত্যাগ দাবি করে। এই অবস্থায় বিক্ষোভের আঁচ থেকে বাঁচাতে সোমবার থেকে দুর্গাপুরে শুরু হচ্ছে করিমের পাঁচ দিনের আবাসিক শিবির। মোহনবাগান সচিব অঞ্জন মিত্র স্বীকার করে নিলেন ঝামেলার আঁচ থেকে বাঁচাতে ওডাফাদের পাঠানো হচ্ছে শিবিরে। বললেন, “ফুটবলাররা যাতে কলকাতা থেকে দূরে গিয়ে সব ভুলে শুধু ফুটবলে মন দিতে পারে সে কারণেই এই শিবিরের ব্যবস্থা।” কোচ করিমও বললেন, “ফুটবলারদের ফোকাস ঠিক রাখতেই পাঁচ দিনের জন্য দুর্গাপুরে যাচ্ছি।” এ দিন অবশ্য কালীঘাট এম এসের সঙ্গে অনুশীলন ম্যাচে ২-১-এ জিতল মোহনবাগান। ওডাফা ও টোলগে দু’জনেই গোল পেয়েছেন।
ক্লাবের নির্বাসন কতখানি কমবে তা নিয়ে এমনিতেই চাপে রয়েছেন কর্তারা। তাদের মতোই তীব্র চাপে ওডাফাও। রেফারির সঙ্গে গণ্ডগোলে জড়িয়ে ফুটবলার জীবনই অনিশ্চিত নাইজিরিয়ান গোল মেশিনের। বড় শাস্তির সামনে তিনি। মোহন-অধিনায়ক বললেন, “রেফারি-সহ তিন চারটে রিপোর্ট চেয়েছি। ওগুলো ফেডারেশন পাঠালে বুঝতে পারব আমার দোষটা কী?” ফেডারেশন কর্তারা অবশ্য এই চিঠিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। সম্ভবত ১৫ জানুয়ারি কর্মসমিতির সভায় ওডাফার শাস্তির ঘোষণা করে দেওয়া হবে। কোনও কোনও কর্তা অবশ্য চাইছেন, পুরো বিষয়টি শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সভায় পাঠাতে। |