ক্রিকেটে ভারসাম্য খুব জরুরি। যেটা এই মুহূর্তে ভারতে নেই। আমি আইপিএল বা টি-টোয়েন্টির বিরোধী নই। কিন্তু কুড়ি ওভারের ক্রিকেট বোলারদের কোনও ভাবেই ওয়ান ডে বা টেস্টের চ্যালেঞ্জের জন্য তৈরি করে না। টেস্টে ভারতের পারফরম্যান্সের রেখচিত্রটা দেখুন। আইপিএল কী ভাবে ভারতের সাপ্লাই লাইনে ভাগ বসিয়েছে! বিশেষ করে বোলিং বিভাগে। চার ওভার বল করলে যদি এত টাকা পাওয়া যায়, তা হলে কোনও বোলার কেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা খাটতে চাইবে?
ইংল্যান্ডে ০-৪-এর পর থেকেই বিপদের ঘণ্টা বাজা শুরু হয়েছিল। দুর্বল অস্ট্রেলিয়ার কাছেও ০-৪ হারের পর বাজনাটা আরও জোরালো হয়। আর ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের কাছে সিরিজ হারের পর কিন্তু বিপদের ঘণ্টা শোনার সময় এসে গিয়েছে।
আমি বলছি না এখনই বিরাট কোনও বদলের দরকার আছে। এই যে দেশ জুড়ে অধিনায়ক বদলের আওয়াজ উঠেছে, আমি মনে করি না সেটা খুব ন্যায্য। ধোনি এমন একজন অধিনায়ক যাকে সত্যিই ‘লিডার’ বলা যায়। সব সময় ঠান্ডা থাকে। হার-জিত যা-ই আসুক, সেটা নিয়ে পড়ে থাকে না। ওকে নিয়ে আমার একটাই অভিযোগ ধোনি বড্ড নীচের দিকে ব্যাট করতে নামে। ইডেনে যেমন ওর উচিত ছিল তিন বা চারে নামা। বিশেষ করে চেন্নাইয়ে দুর্দান্ত সেঞ্চুরিটার পরে।
হাতে ভাল বোলার না থাকাটা কি ধোনির দোষ? ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি, ভারতে বছরে আট সপ্তাহ মতো বল ‘মুভ’ করে। এই সময়টায় ভারত এমন দুটো দলের বিরুদ্ধে খেলছে যাদের পেস আক্রমণ ভাল। পাকিস্তানের পেস ব্যাটারি তো অসাধারণ। ভারতের দুর্ভাগ্য, এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগাতে পারে, এমন কোনও পেসার ওদের সাপ্লাই লাইনে নেই।
অসাধারণ ব্যাটসম্যান এবং ভবিষ্যতের অধিনায়ক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিরাট কোহলির মধ্যে। কিন্তু ওকে কাজটার জন্য তৈরি করতে হবে। গম্ভীর আর সহবাগকে ছাঁটাই করার দাবি উঠছে। দয়া করে মনে রাখুন যে ওরা দারুণ ব্যাটসম্যান, যারা অসাধারণ একটা বোলিং আক্রমণের সামনে পড়েছে। বিশেষ করে এই পরিবেশে তো জুনায়েদ খানকে খেলাই যাচ্ছে না। গম্ভীর-সহবাগের বদলি আনলে সে বেশি সফল হবে কি না, তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
খুব সহজে, ভারতের সমস্যা ওদের বোলিং। দুটো নতুন বলে ওরা পাক বোলারদের মতো সাফল্য পাচ্ছে না। ভারতীয় পেসারদের বিরুদ্ধে নাসির জামশেদ আর মহম্মদ হাফিজ দারুণ খেলেছে। ভুবনেশ্বর কুমার আর ইশান্ত শর্মা দু’জনেই পিচ থেকে কিছু সাহায্য পাচ্ছে। কিন্তু পাক পেসারদের মতো সেটাকে ব্যবহার করতে পারছে না।
এই মুহূর্তে দিল্লিতে প্রচণ্ড ঠান্ডা। যার জন্য পাকিস্তানি বোলিং আবার সাহায্য পাবে। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ যেহেতু, আমার মনে হয় না এটাকে পাকিস্তান ‘মরা ম্যাচ’ হিসেবে দেখবে। |