|
|
|
|
ঝাড়খণ্ড |
সমর্থন তোলায় বিধায়কদের আপত্তি, সঙ্কটে জেএমএম |
প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায় • রাঁচি |
বাঘের পিঠে চড়ার অবস্থা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার। মুন্ডা সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নেওয়ার প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত জেএমএম নেতৃত্ব। একদল চাইছেন, দলের ভাবমূর্তি বজায় রাখতে বিজেপি নেতা তথা মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডার নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে সরকার থেকে জেএমএম বেরিয়ে আসুক। অন্য পক্ষ, বিশেষ করে অধিকাংশ জেএমএম বিধায়ক মনে করছেন, সরকার ফেলে দিলে অকাল ভোটে দলের ফল খারাপ হবে। ফলে তাঁরা সমর্থন তোলার বিরুদ্ধে।
২৮ মাস পরে মুখ্যমন্ত্রী বদল না করলে সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নেওয়া হবে বলে মোর্চা হুমকি দিয়েছিল বিজেপিকে। কিন্তু মোর্চার দাবি বিজেপি মানবে না বলে গত বৃহস্পতিবারই স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুণ্ডা। এই পরিস্থিতিতে জেএমএম পড়েছে শাঁখের করাতের মুখে। সরকার টিকিয়ে রেখে বিজেপি-র সঙ্গে থাকলে যেমন মুখ পুড়বে, তেমনই সরকার ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে পরিষদীয় দলে তৈরি হতে পারে ভাঙন। জেএমএম প্রধান শিবু সোরেনের বাড়িতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চললেও কোনও নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু এই মুহূর্তে মোর্চা নেতৃত্বকে যা সব চেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে, তা হল সরকার থেকে সমর্থন তোলার প্রশ্নে দলীয় বিধায়কদের সমর্থন না পাওয়া। আবার বিধায়কদের দাবি মেনে সমর্থন না তুললে, জনসমক্ষে দলের ভাবমূতি নষ্ট হবে বলেই মনে করছেন নেতৃত্ব। দলের এক নেতার কথায়, “আমরা এখন বাঘের পিঠে। যতটা উঁচু গলা করে সমর্থন তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল তা না করতে পারলে নিচু তলার কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়বেন। এই সুযোগে বিজেপি আমাদের গ্রাস করতে চাইবে।”
বিজেপি কে বিরোধীর আসনে পাঠিয়ে কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে সরকার তৈরি করলে তা দলের পক্ষে কতটা লাভজনক হবে তা নিয়েও চলছে হিসেব-নিকেষ। জেএমএম নেতাদের কথায়, এমনিতে ঝাড়খণ্ডে কংগ্রেসের জমি দুর্বল। ফলে লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে জেএমএমের সাহায্য নিতেই হবে। কারণ জেএমএমের সিংহভাগ ভোট রয়েছে আদিবাসী এলাকায়। গ্রামে বাঙালি ভোটাররাও সোরেনের সঙ্গেই। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের পর ঝাড়খণ্ড সরকারের ওপরে সমর্থন বজায় রাখতে কংগ্রেস অন্য ধরনের দরকষাকষিও শুরু করতে পারে। তখন তা মেনে নেওয়া মোর্চার পক্ষে সম্ভব হবে কিনা সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। তবে মোর্চার পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের সঙ্গে সংযোগ করা হয়েছে। তবে মোর্চা সরকারের উপর থেকে সমর্থন না তোলা পর্যন্ত কংগ্রেস এই নিয়ে কিছু ভাববে না বলেই জেএমএম নেতাদের জানান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ বালমুচু। এই অবস্থায় খানিকটা দিশেহারা পরিস্থিতিতেই, কাল শিবু সোরেনের বাড়িতে দলের কোর-কমিটি কমিটির নেতারা বৈঠকে বসছেন। ১০ তারিখ সরকারকে সমর্থন দেওয়ার প্রশ্নে চূড়ান্ত মত জানানোর কথা জেএমএমের। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “রাজনীতিতে অনেক হিসেব করেই চলতে হয়। পরস্পর বিরোধী মতামত তো থাকবেই। তবে আমরা তুরুপের তাস এখনও আস্তিনের তলা থেকে বার করিনি। সময় মতো খেলব।” |
|
|
|
|
|