অনিয়মে ভরা ত্রিফলার বরাত,
জানাল পুর অডিট
হরে ত্রিফলা আলো লাগাতে ছোট ছোট বরাত দেওয়ায় পুরসভাকে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরসভার অভ্যন্তরীণ অডিটের চূড়ান্ত রিপোর্ট কিন্তু স্পষ্ট জানিয়ে দিল, দরপত্র এড়িয়ে এ ভাবে বরাত দেওয়ার কাজ বেআইনি এবং এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট অনিয়ম হয়েছে। শনিবার পুর কমিশনারের কাছে এই অডিট রিপোর্ট জমা পড়েছে। খসড়া রিপোর্ট দেওয়ার এক মাসের মধ্যে জমা পড়ল এই চূড়ান্ত রিপোর্ট ।
পুর সচিবালয় সূত্রের খবর, দীর্ঘ রিপোর্টে বহু ক্ষেত্রেই অনিয়মের উল্লেখ করা হয়েছে। চূড়ান্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে পুর প্রশাসন কী ব্যবস্থা নেবে তা নিয়ে আগামী মেয়র পারিষদের বৈঠকে আলোচনা হবে। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এ দিন পুরসভায় আসেননি। তবে রিপোর্ট দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। কাল, সোমবার এ নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসবে পুর প্রশাসন।
কলকাতার সৌন্দর্যায়নে প্রায় ২০ হাজার ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ লাগিয়েছে পুরসভা। এই কাজে খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। অভিযোগ, টেন্ডার প্রক্রিয়া এড়িয়ে পছন্দের লোককে বরাত দিতে সম্পূর্ণ কাজটিকে ছোট ছোট ভাগ করে পাঁচ লক্ষ টাকার নীচে বরাত দেওয়া হয়েছে। এ জন্য তৈরি হয়েছে ৬০০টি ফাইল। কলকাতা পুরসভার এই কাজে গোটা রাজ্যে হইচই পড়ে যায়। চাপে পড়ে মেয়র জানান, পুরসভার অভ্যন্তরীণ অডিট এই অভিযোগের তদন্ত করবে। পুরসভার অনুমোদিত একটি বেসরকারি সংস্থাকে অডিটের দায়িত্ব দেওয়া হয়। গত ১ ডিসেম্বর সংস্থাটি অডিটের খসড়া রিপোর্ট জমা দেয়। সেখানেই অনিয়মের কথা বলা হয়। এরই মধ্যে রবীন্দ্র সরোবরে এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলে দেন, “কাজের সুবিধার জন্যই বড় কাজকে ছোট ছোট করে ভাঙা হয়েছে। এতে কাজও তাড়াতাড়ি হয়।” পুরসভার এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, “খসড়ার সঙ্গে মূল রিপোর্টের বিশেষ পার্থক্য নেই। অর্থাৎ, ত্রিফলা-কাণ্ড নিয়ে অনিয়ম হয়েছে বলে জানিয়ে দিল পুরসভারই অভ্যন্তরীণ অডিট রিপোর্ট।” ওই অফিসারের কথায়, “খসড়া রিপোর্টে যে সব প্রশ্ন উঠেছিল, পুর-কর্তৃপক্ষ তা খণ্ডনের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু প্রামাণ্য নথি হাতে না থাকায় সে সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি তাঁরা।”
চূড়ান্ত অডিট রিপোর্টে কী রয়েছে?
পুর সচিবালয় সূত্রের খবর, ৩০ পাতার ওই রিপোর্টের সঙ্গে বেশ কিছু নথিও যুক্ত করা হয়েছে। দরপত্র এড়িয়ে কেন কাজকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। আর এটা যে পুরোপুরি বেআইনি, রিপোর্টে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তা বলা হয়েছে। একই বাতিস্তম্ভ যে নানা রকম দামে কেনা হয়েছে, তার নথিও রিপোর্টের সঙ্গে দেওয়া হয়েছে। পুরসভা অনুমোদিত আলোর সরঞ্জাম সরবরাহকারী সংস্থাকে বাদ দিয়ে কেন অনুমোদনহীন সংস্থাকে মাল সরবরাহের বরাত দেওয়া হয়েছে, সে প্রশ্নও তোলা হয়েছে।
খসড়া রিপোর্টের মতো মূল রিপোর্টেও আরও কয়েকটি গুরুতর অনিয়মের উল্লেখ রয়েছে। যেমন, বরাত পাওয়ার আগেই কিছু ঠিকাদার সংস্থার রাস্তায় ত্রিফলা লাগিয়ে দেওয়া, একই কাজের জন্য এক এক ঠিকাদারের এক এক রকম পেমেন্ট পাওয়া, পুরসভার স্টোরে ৩৮ হাজার মিটার পাইপ থাকা সত্ত্বেও বাইরে থেকে পাইপ কিনে বাতিস্তম্ভ বানানো, ইত্যাদি।
মূল অডিট রিপোর্ট হাতে পেয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে পুর প্রশাসন। পুরসভার একাধিক কাউন্সিলরের বক্তব্য, পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন মেয়র। এখন প্রশাসন কী পদক্ষেপ করে, দেখা যাক। মেয়র অবশ্য এ দিনও আশ্বাস দিয়েছেন, “আগে রিপোর্ট দেখে নিই। তার পর যা প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার নেব।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.