পূর্ব কলকাতা
শিল্পতালুক
বিবর্ণ মুখ
থ্যপ্রযুক্তি শিল্পতালুক। রাজ্যের শিল্পে অগ্রগতির ‘মুখ’। সেই তালুক জুড়েই ছড়িয়ে থাকে প্লাস্টিক, জঞ্জাল। রয়েছে রাবিশের স্তূপ। এতে শিল্পতালুকের ভাবমূর্তি নষ্টের পাশাপাশি পরিবেশও অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ উঠছে।
আইটি কর্মী ও নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, শিল্পতালুকের নানা জায়গায় আবর্জনা জমে থাকে। অনেক জায়গায় নির্মীয়মাণ ভবনের পাশে রাবিশ পড়ে থাকে। নিয়মিত সাফ করা হয় না। এ ছাড়া খাবারের দোকানের একাংশ যত্রতত্র আবর্জনা ফেলে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে পাঁচ নম্বর সেক্টরের দায়িত্বে থাকা নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষের দাবি, জঞ্জাল অপসারণের দায়িত্ব একটি বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে। প্রতি দিন নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিটি ভবন থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করা হয়। তবে, এই অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাসও দেওয়া হয়ছে।
ওয়েবেল ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্সে যাওয়ার রাস্তায় একাধিক খাবারের দোকানে দিনভর অসংখ্য মানুষ খান। সেই আবর্জনা নির্দিষ্ট পাত্রে ফেলার কথা। অভিযোগ, দোকানদারদের একাংশ তা করেন না। ফলে আবর্জনা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে। নিয়মিত সাফও হয় না। যদিও দোকানদারদের দাবি, তাঁরা নির্দিষ্ট জায়গায় জঞ্জাল জমিয়ে রাখেন। সেই জঞ্জাল সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তা ছাড়া নবদিগন্ত কর্তৃপক্ষ জঞ্জাল ফেলার বড় পাত্র দিলে সমস্যা কমতে পারে।নবদিগন্ত সূত্রের খবর, জঞ্জাল অপসারণের জন্য দরপত্র ডেকে একটি বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই সংস্থার কর্মীরা প্রাথমিক ভাবে প্রতিটি অফিস থেকে দৈনন্দিন আবর্জনা সংগ্রহ করেন। পরে সংগৃহীত আবর্জনা ওজন করে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে পাঠানো হয়। এই শিল্পতালুক থেকে দৈনিক গড়ে ১৫-২০ মেট্রিক টন আবর্জনা সংগ্রহ করা হয়। যদিও টেকনোপলিস মোড় থেকে কলেজ মোড় পর্যন্ত বিভিন্ন গলির ধারে, কলেজ মোড় থেকে ভেড়ির পাড় এলাকার একাধিক গলিতে, পাশাপাশি ওয়েবেল, এসডিএফ বিল্ডিং এলাকা, দমকল কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকার বেশ কয়েকটি গলিতে যত্রতত্র জঞ্জাল পড়ে থাকতে দেখা যায়।
শিল্পতালুকের নিত্যযাত্রী দমদমের স্বপন সরকারের কথায়: “শিল্পতালুকের অনেক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু খাবারের দোকানের আবর্জনার পাশাপাশি রাবিশও পড়ে থাকে। প্রশাসনের অবিলম্বে নজর দেওয়া প্রয়োজন। প্রয়োজন সচেতনতারও।” এই এলাকায় একাধিক প্লটে চলছে নির্মাণ কাজ। বেশ কয়েকটি জায়গায় রাবিশও পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। এখানে ফুডকোর্ট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজও হয়নি। সাফাইকর্মীদের একাংশের দাবি, নির্দিষ্ট সময়ে জঞ্জাল সংগ্রহ করা হলেও তার পরেও জঞ্জাল ফেলা হয়। সেগুলি পরের দিন সংগ্রহ করা হয়। নবদিগন্তের বোর্ড সদস্য তথা ন্যাসকম-এর পূর্বাঞ্চলের অধিকর্তা সুপর্ণ মৈত্র বলেন, “নজরদারি আরও বাড়াতে হবে।”
আইটি কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, অফিস থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করা হলেও রাস্তার জঞ্জাল নিয়মিত সাফ হচ্ছে না। নবদিগন্তের এগ্জিকিউটিভ অফিসার বদ্রিনারায়ণ কর বলেন, “জঞ্জালমুক্ত করতে একটি বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নিয়মিত জঞ্জাল সাফাই হয়। প্রতিটি অফিস থেকে আবর্জনা নেওয়া হয়। রাস্তার ধারে দোকানের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা হয়। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পাশাপাশি তাঁর দাবি, সচেতনতার অভাব রয়েছে। সচেতনতা প্রসারে প্রচার কর্মসূচির ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি।

ছবি: শৌভিক দে




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.