কসবায় একটি শিশুকে ধর্ষণে অভিযুক্ত যুবককে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে বুধবার রাতে পথে নেমেছিলেন এলাকার লোকজন। সেই ঘটনায় রাস্তা অবরোধ ও পুলিশকে মারধরের অভিযোগে চার যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ক্ষিপ্ত জনতা রাসবিহারী কানেক্টর অবরোধ এবং কসবা থানা ঘেরাওয়ের সঙ্গে সঙ্গে থানায় ভাঙচুরও চালায় বলে অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার পুলিশ জানায়, চার বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় বুধবার রাতেই দেবব্রত দাস ওরফে টোটন নামে কসবা কুমোরপাড়া এলাকার এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেই যুবককে তাদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে জনতা কসবা থানা ঘেরাও এবং তার সামনের রাস্তা অবরোধ করে। ধৃতকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া যাবে না বলে জানানোয় জনতা দাবি তোলে, তাকে কী শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, পুলিশকে সেটা লিখিত ভাবে জানাতে হবে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দাবিতে কান না-দিয়ে থানা থেকে তাঁদের বার করে দেওয়া হয়। তার পরেই জনতা মারমুখী হয়ে ওঠে। সংবাদমাধ্যমের লোকজনকেও আক্রমণ করা হয়। পুলিশকে মারধর ও থানা ভাঙচুরের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের নাম বাবু হালদার, স্বরূপ প্রসাদ, সঞ্জিত হালদার ও অনির্বাণ ভাদুড়ী। তাঁরা কসবার কুমোরপাড়ারই বাসিন্দা।
পুলিশি সূত্রের খবর, কুমোরপাড়ায় একটি ভাড়া-বাড়িতে বাবা-মা ও দিদার সঙ্গে থাকে শিশুটি। তাদের বাড়ির পাশেই সুব্রত দাস নামে স্থানীয় এক যুবকের কোচিং সেন্টার আছে। সুব্রতর মাসতুতো ভাই দেবব্রত মাঝেমধ্যে ওই সেন্টারে আসত। শিশুটির পরিবারের অভিযোগ, বছর তিরিশের দেবব্রত ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় তাদের মেয়েকে কোচিং সেন্টারে ধর্ষণ করে। পরে শিশুটির মা বিষয়টি জানতে পারেন। সুব্রত শিশুটির চিকিৎসার জন্য
এক হাজার টাকা দিয়ে পুরো ব্যাপারটা ধামাচাপা দিতে চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ। এ দিকে ক্রমেই শিশুটির শরীর খারাপ হতে থাকায় বুধবার বিকেলে তার মা স্থানীয় বাসিন্দাদের সব জানান। তার পরে পাড়ারই কয়েক জনকে নিয়ে কসবা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
পুলিশ জানায়, বুধবার সন্ধ্যায় শিশুটির পরিবারের তরফে ধর্ষণের অভিযোগ পেয়েই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। তার পরেই অভিযুক্তকে জনতার হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে অবরোধ ও থানা ঘেরাও শুরু হয়। রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলে অবরোধ ও বিক্ষোভ। অবরোধের জেরে গড়িয়াহাট রোড, রাসবিহারী অ্যাভিনিউ এবং ইএম বাইপাসের একাংশে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। উত্তেজিত জনতার হাতে নিগৃহীত হন সাংবাদিকেরা। এক চিত্রসাংবাদিককে বেধড়ক পেটানো হয়। পুলিশ জানায়, বিক্ষোভকারীদের হামলায় কসবা থানার তিন পুলিশকর্মীও আহত হন।
কলকাতা পুলিশের ডিসি (সাউথ সুবার্বন) সুজয় চন্দ্র বলেন, “ধৃত চার জনের বিরুদ্ধে থানায় হামলা চালানো এবং পুলিশকে মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশি হাজতে নেওয়া হয়েছে ধর্ষণে অভিযুক্ত দেবব্রতকে।” |