বিধায়কের কাছে ক্ষমা চাইলেন মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী
বিধায়কের মোবাইলে এক মহিলা ফোন করে অশালীন কথা বলেছেন বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তার প্রেক্ষিতে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করল পুলিশ। তবে যাঁর নাম জড়িয়েছে এই ঘটনায়, তিনি ইতিমধ্যেই বিধায়কের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
পুরুলিয়ার কাশীপুর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া সোমবার রাতে আদ্রা তদন্তকেন্দ্রে লিখিত অভিযোগে জানান, একটি মোবাইল নম্বর থেকে এক মহিলা তাঁকে ফোনে ‘জুতোর মালা পরাবেন’ বলে হুমকি দিয়েছেন। এর পরেই ঘটনার খোঁজ শুরু করে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। ওই নম্বরের ফোনটি এক স্কুলশিক্ষকের হলেও তাঁর স্ত্রী বিধায়ককে ফোন করেননি বলে পুলিশের কাছে লিখিত ভাবে জানান।
এসডিপিও (রঘুনাথপুর) কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিধায়কের দায়ের করা অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তে কিছু বিষয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে। তাই এ ব্যাপারে আমাদের কী করণীয়, তা জানতে বুধবার রঘুনাথপুর আদালতে আমরা আর্জি জানিয়েছি।”
বিধায়কের অভিযোগ, “সোমবার বিধানসভায় আমার মোবাইলে এক মহিলা ফোন করে হুমকি দেয় আমাকে জুতোর মালা পরানো হবে। তাঁকে আমি বলি, আপনি সম্ভবত ভুল নম্বরে ফোন করেছেন। আমার পরিচয়ও দিই। ফোন কেটে যায়। আবার ওই নম্বর থেকে ফোন আসে। ফের সেই নারী কণ্ঠ বলেন, আমাকেই তিনি ফোন করছেন। তিনি জানান আদ্রার পলাশকোলা থেকে ফোন করছেন। তখন তাঁকে জানাই কলকাতায় আমি বৈঠকে রয়েছি। কাশীপুরে ফেরার পর আপনি কী করবেন, দেখা যাবে। এর পরেই ফোন কেটে যায়।” বিধায়ক জানান, বৈঠক থেকে বেরিয়ে দলের কর্মীদের ওই নম্বরটি দিয়ে সেটি কার, তা খোঁজ নিতে বলেছিলেন। রাতে জেলায় ফিরে আদ্রা তদন্তকেন্দ্রে ওই ফোন নম্বরটি দিয়ে অজ্ঞাতপরিচয় মহিলার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, ওই ফোন নম্বরটি আদ্রার পলাশকোলার বাসিন্দা, এক স্কুল শিক্ষকের। ওই শিক্ষক পুলিশের কাছে দাবি করেন, ফোনটি সেই সময় তাঁর স্ত্রী, পেশায় আশাকর্মীর কাছে ছিল। শিক্ষকের স্ত্রী পুলিশের কাছে লিখিত ভাবে জানান, সোমবার পলাশকোলা উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পুরুষ কর্মী লক্ষ্মী বন্দ্যোপাধ্যায় ও মহিলা কর্মী মণিমালা প্রসাদ তাঁর কাছে এসেছিলেন। মণিমালাদেবীই তাঁর কাছ থেকে ফোনটি নিয়ে এক জনকে ফোন করেন। তবে ওই ফোন বিধায়ককে করা হয়েছে, তা তিনি জানতেন না।
বিধায়কের দাবি, “পদাধিকার বলে আমি কাশীপুর রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান। কিন্তু আমি ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিদর্শনেও কোনও দিন যাইনি বা ওই স্বাস্থ্যকর্মীর ক্ষতি করিনি। ওঁকে চিনিও না। খোঁজ নিয়ে জেনেছি, লক্ষ্মী বন্দ্যোপাধ্যায় সিপিএমের লোক। তিনিই আমাকে অপদস্থ করার জন্য চক্রান্ত করে এই কাজ করিয়েছেন।” লক্ষ্মীবাবুর পাল্টা দাবি, “আমি সরকারি কর্মী। বিধি মোতাবেক কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে পারি না। যে দলেরই সমর্থক হই না, কেন, কোনও বিধায়ককে ও কথা বলতে পারি না।”
মণিমালাদেবীর দাবি, “সোমবার আমি স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই যাইনি। বাইরে কাজে ছিলাম। দুপুরে একটি বিমা অফিসে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে বাড়ি ফিরি। ঘটনার কথা পরে শুনে আকাশ থেকে পড়েছি। বিধায়কের ফোন নম্বর আমার কাছে নেই। এক জন বিধায়ককে এ সব বলতে যাব কেন?” তাঁর অভিযোগ, চক্রান্ত করে তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। ওই ফোনের ভয়েস রেকর্ড পরীক্ষা করে দেখলেই সত্য প্রকাশ পাবে।
তিনি জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আদ্রা তদন্তকেন্দ্রে পুলিশ তাঁকে ডেকে পাঠায়। সেখানে বিধায়ক এবং ওই স্কুলশিক্ষকের স্ত্রী ছিলেন। মণিমালাদেবীর কথায়, “বিধায়ককে বলি বিশ্বাস করুন, আমি আপনাকে ফোন করিনি। কিন্তু অন্যরা চাপাচাপি করায় আমি শেষ পর্যন্ত বিধায়কের কাছে ক্ষমাও চাই।” বিধায়ক বলেন, “উনি ক্ষমা চেয়েছেন ঠিকই, তবে আমি পুলিশকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে বলেছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.