বারাসতে ময়না-তদন্ত
ভোঁতা, ধারালো অস্ত্রের আঘাত মহিলার মাথায়
মাথার সামনে ভোঁতা অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। মাথার পিছনে আর পিঠে রয়েছে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের চিহ্ন। ছড়ে যাওয়ার চিহ্ন রয়েছে পশ্চাদ্দেশের অনেকটা অংশে। বারাসতের নিগৃহীত ও নিহত মহিলার দেহে এই তিন ধরনের আঘাতের চিহ্ন পেয়েছেন ময়না-তদন্তকারীরা।
ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট দেখে সিআইডি-র গোয়েন্দারা মনে করছেন, ভোঁতা অস্ত্রটি হাতুড়ি। সেটি ইতিমধ্যেই উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু ধারালো অস্ত্রটি কী, তা এখনও জানতে পারেনি পুলিশ। শনিবার যে-পুকুরের ধারে মহিলার মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল, বুধবার পাম্প করে তার জল তুলেও কোনও অস্ত্র মেলেনি।
মহিলাকে শ্বাসরোধ করে মারা হয়েছে বলে এর আগে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল পুলিশ। ঘটনার দিন তাঁর স্বামীর গলায় অ্যাসিড ঢেলে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। তবে সেই ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। উল্টে সন্দেহের আঙুল ঘুরে গিয়েছে স্বামীর দিকেও। তদন্তকারীরা জানান, সে-দিন নিহতের স্বামীর পরনে ছিল একটি গেঞ্জি, সোয়েটার এবং জ্যাকেট। স্বামীর সোয়েটারটি মহিলার বাড়ি থেকেই উদ্ধার করা করা হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, ওই সোয়েটারে রক্তের দাগ ছিল। তদন্তকারীরা জানান, স্বামীর জ্যাকেটটি মহিলার মৃতদেহের পাশে পাওয়া গিয়েছে এবং তাতেও রক্তের দাগ ছিল। ওই রক্ত নিহত মহিলার, নাকি তাঁর স্বামীর, তা পরীক্ষা করা হচ্ছে। মহিলার স্বামী আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তদন্তকারীরা এ দিন সেখানে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন। অ্যাসিডে তাঁর খাদ্যনালীর কতটা ক্ষতি হয়েছে, চিকিৎসকেরা অবশ্য তা জানাননি।
মহিলার মৃত্যুর সময় তাঁর স্বামী ঠিক কোথায় ছিলেন, তা নিয়ে ধন্দে রয়েছে পুলিশ। সিআইডি সূত্রের খবর, যে-ইটভাটায় স্বামী-স্ত্রী কাজ করতেন, সেখানে ছুটি হয় সন্ধ্যা পৌনে ৬টায়।
এই পুকুরেই ফেলা হয়েছিল মহিলার দেহ। জল ছেঁচে চলছে সিআইডির অনুসন্ধান। বুধবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ
গোয়েন্দাদের দাবি, ঘটনার দিন ছুটির পরেও দু’জনকে একসঙ্গে ইটভাটায় দেখা গিয়েছিল। অথচ স্বামী বাড়িতে ফিরে দেখেন, তখনও স্ত্রী পৌঁছননি। তাঁকে খুঁজতে স্বামী ফের রাস্তায় বেরোন। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে স্বামী-স্ত্রী কখন, কোথায় এবং কী ভাবে তাঁরা আলাদা হয়ে গিয়েছিলেন? স্বামীর বাড়ি ফেরা এবং স্ত্রীকে ফের খুঁজতে বেরিয়ে রাস্তার এক জায়গায় তাঁকে দেখতে পাওয়ার মধ্যে সময়ের ব্যবধান কতটা? উত্তর খুঁজছেন গোয়েন্দারা।
তদন্তকারীরা এ দিন মৃতার বড় ছেলেকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাঁর কথায়, “আমি সিআইডি-কে বলেছি, মাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে ইটভাটা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেই আশঙ্কাতেই ইটভাটার মালিক ঘটনাটি ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। পুলিশও একই কাজ করছে।” মায়ের মৃতদেহের কাছে গিয়ে তিনি ঠিক কী দেখেছিলেন, কোন পথে পুকুরপাড়ে মৃতদেহের কাছে পৌঁছেছিলেন মৃতার বড় ছেলে এ দিন ‘রি-কনস্ট্রাকশন’ বা পুনর্নির্মাণ করে পুরোটাই দেখান গোয়েন্দাদের। বড় ছেলের স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন গোয়েন্দারা। ওই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এ দিন বারাসতের শেঠপুকুর থেকে বিক্ষোভ-মিছিল করে কংগ্রেস। মিছিল থানা হয়ে জেলাশাসকের ভবনে যায়। সেখানে বিক্ষোভ দেখানো হয়। পরে কাছারি ময়দানে এক সভায় জেলা কংগ্রেস সভাপতি দেবী ঘোষাল বলেন, “বারাসতে একের পর এক হিংসার ঘটনা ঘটছে। কিন্তু পুলিশ তদন্ত অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.