|
|
|
|
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি |
জন্মস্থানে একশো
পেরোচ্ছে বিজ্ঞান কংগ্রেস
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
|
|
১৯১৪ সালের ১৪ জানুয়ারি ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশন হয়েছিল কলকাতায়। এশিয়াটিক সোসাইটির ওই অধিবেশনের সভাপতি ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য আশুতোষ মুখোপাধ্যায়।
তার পর থেকে দেশের নানা জায়গায় বিজ্ঞান কংগ্রেসের আসর বসেছে। আজ, বৃহস্পতিবার বিজ্ঞান কংগ্রেসের শততম অধিবেশন শুরু হচ্ছে কলকাতাতে। এ বারেও বিজ্ঞান কংগ্রেসের উদ্যোক্তা সেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। তবে উপাচার্য নন, অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। প্রতি বার তিনিই উদ্বোধন করেন অধিবেশনের। শতবর্ষে সেই জায়গা নিচ্ছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। |
বিমানবন্দরে রাষ্ট্রপতি প্রণব
মুখোপাধ্যায়।—নিজস্ব চিত্র |
শহরে এলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন
সিংহ। বুধবার।—নিজস্ব চিত্র |
|
পাঁচ নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বিজ্ঞানীও পাঁচ দিনের ওই বিজ্ঞান-সম্মেলনে উপস্থিত থাকছেন। তাঁরা এ দিনই চলে এসেছেন শহরে। এসেছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীও। বৃহস্পতিবার উদ্বোধনী মঞ্চে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থাকবেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। প্রধানমন্ত্রীর বাচনভঙ্গি নকল করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন মমতা। পরবর্তী কালে ছিন্ন হয়েছে কংগ্রেস-তৃণমূলের জোটও। ওই জোড়া ঘটনার পর দু’জনের আর দেখা হয়নি। বৃহস্পতিবার একই মঞ্চে থাকবেন মনমোহন-মমতা। সেখানে বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে মহিলাদের অবদান শীর্ষক বই-ও উদ্বোধনও করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ বারই প্রথম বিজ্ঞান কংগ্রেসে ভারতের অগ্রগতিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হবে। দেশের অন্তত ১০ জন উপাচার্য এবং সহ-উপাচার্য ওই সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন। বিজ্ঞান কংগ্রেসের সংগঠকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের সর্বোচ্চ বিজ্ঞান সম্মান ভাটনগর পুরস্কার পাওয়া অন্তত ১২ জন বিজ্ঞানীর কথা এবার শুনতে পারবেন বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ ও ছাত্রছাত্রীরা।
গত ৩০ বছর ধরেই বিজ্ঞান কংগ্রেসের মূল ভিত্তি শিল্পের সঙ্গে বিজ্ঞান গবেষণার মেলবন্ধন। এ বারেও বিজ্ঞান কংগ্রেসের মূল সুরটি অনেকটা একই রকম। শুধু বদলেছে ভাষাটা। কিন্তু শিল্পের সঙ্গে বিজ্ঞান গবেষণার মেলবন্ধ কতটা সফল হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিজ্ঞানী মহলেই। বিজ্ঞানের এই সম্মেলনে কেনই বা বাণিজ্য ও শিল্প মহলকে আমন্ত্রণ জানানো হয় না উঠেছে সেই প্রশ্নও। |
|
বিজ্ঞান কংগ্রেসের মশাল নিয়ে মিছিলের সূচনা।—নিজস্ব চিত্র |
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের সচিব টি রামস্বামী এ ব্যাপারে বলেন, “বিজ্ঞান গবেষণাকে উৎসাহিত করতে প্রধানমন্ত্রী স্কলারশিপ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। ইতিমধ্যে ১৩০টি শিল্পসংস্থা ওই স্কলারশিপে অর্থমূল্য দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দিয়ে এগিয়ে এসেছে।” তাঁর দাবি, বিজ্ঞান ও শিল্পসংস্থার মধ্যে যোগাযোগ নিবিড় করতে বিশেষ আলোচনাচক্রের আয়োজনও করেছেন বিজ্ঞান কংগ্রেসের কর্তারা।
কিন্তু বিশেষ আলোচনাচক্রের বাইরে ছবিটা কিন্তু ভিন্ন। সাধারণ অধিবেশনে ৮ থেকে ১০ মিনিটের বেশি গবেষণাপত্র পাঠ করার সুযোগই পান না কোনও গবেষক। বেশি গবেষণাপত্র থাকার জন্য কোনও গবেষণাপত্র নিয়েই বিজ্ঞান কংগ্রেসে আলোচনার সুযোগ মেলে না বলে তরুণ গবেষকদের আক্ষেপ। যাঁরা আমন্ত্রণী নিবন্ধ পাঠ করেন, তাঁদের জন্য বরাদ্দ ২০-২৫ মিনিট। কোনও আলোচনার সুযোগ নেই সে ক্ষেত্রেও। |
নিয়ন্ত্রণে পথ |
রাষ্ট্রপতি
• রেড রোড, ক্যাসুরিনা অ্যাভিনিউ, হসপিটাল রোড (পূর্ব), এজেসি বোস উড়ালপুল, পার্ক সার্কাস সাত মাথা মোড়, পার্ক সার্কাস কানেক্টর, পরমা আইল্যান্ড, ই এম বাইপাস, চিংড়িহাটা, সল্টলেক সেক্টর ফাইভ, নিক্কোপার্ক, রাজারহাট-নিউটাউন
• বেলা ১০টা ২০ মিনিটে বেরোবেন রাজভবন থেকে
• বিমানবন্দরে পৌঁছবেন বেলা পৌনে ১টায় |
প্রধানমন্ত্রী
• ই এম বাইপাস, চিংড়িহাটা, সল্টলেক সেক্টর ফাইভ, নিক্কোপার্ক, রাজারহাট-নিউটাউন
• বেলা পৌনে ১১ টায় বেরোবেন হোটেল থেকে
•বিমানবন্দরে পৌঁছবেন বেলা দেড়টায় |
|
দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ২০টি বিজ্ঞান কংগ্রেসের অধিবেশনে যোগ দেওয়া কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক বলেন, “বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণাপত্র পাঠ করার সুযোগ থাকলেও অনেক সময়েই দেখা যায় শ্রোতা প্রায় কেউ নেই। তাই নিজেদের ভাল গবেষণাপত্র কেউ পাঠ করেন না বিজ্ঞান কংগ্রেসে। কোথাও পড়া যাবে না এমন গবেষণাপত্রই তাই অনেক ক্ষেত্রে জমা পড়ে বিজ্ঞান কংগ্রেসে। অনেকে বলছেন, এই কারণেই সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা বিজ্ঞান কংগ্রেসে আগ্রহ হারাচ্ছেন। বিজ্ঞান কংগ্রসের শততম অধিবেশনে যাতে খালি প্রেক্ষাগৃহ চোখে না পড়ে তার জন্য স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের আরও বেশি করে এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন এ বারের বিজ্ঞান কংগ্রেসের আয়োজক কমিটির প্রধান রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন।
এ দিন স্টেডিয়ামের ভিতরে গিয়ে দেখা গেল, মঞ্চে শেষ লগ্নের কাজ চলছে। স্টেডিয়াম চত্বরে বিরাট প্যাভিলিয়ন গড়া হয়েছে। ভিতরে রয়েছে দেশের বিভিন্ন মন্ত্রক ও নানা সরকারি-বেসরকারি সংস্থার স্টল। প্যাভিলিয়নের বাইরে খোলা চত্বরে দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার (ডিআরডিও) তৈরি করা নানা ক্ষেপণাস্ত্রের মডেল। মাঠে গর্ত থাকায় ওই মডেল নিয়ে নাজেহাল হচ্ছিলেন ডিআরডিও-র কর্মীরা। |
|
|
|
|
|