কালনায় প্রৌঢ়া খুন
ধন্দে ফেলতেই জিনিসপত্র তছনছ, অনুমান পুলিশের
খুনের কারণ সম্পর্কে ধন্দে ফেলতেই বাড়ির জিনিসপত্র লণ্ডভণ্ড করে দেয় আততায়ী, কালনায় প্রৌঢ়া খুনের ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই মনে করছে পুলিশ। বুধবার রাত পর্যন্ত অবশ্য পুলিশ এই ঘটনার কারণ সম্পর্কে অন্ধকারেই। কাউকে গ্রেফতারও করতে পারেনি তারা।
মঙ্গলবার নিজের বাড়িতেই খুন হন কালনার ধাত্রীগ্রামের বধূ পূর্ণিমা গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর স্বামী লক্ষ্মীবাবু পুলিশকে জানান, তাঁদের এক মাত্র ছেলে ও পুত্রবধূ বাড়িতে ছিলেন না। তিনি নিজে বিকেলে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে দেখেন, স্ত্রীর রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। জিনিসপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। লক্ষ্মীবাবু বিষয়টি প্রতিবেশীদের জানান। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কালনা থানার পুলিশ। যান এসডিপিও (কালনা) ইন্দ্রজিৎ সরকারও।
পুলিশ জানায়, ওই বধূর গলার নলি কাটা ছিল। মুখের একাংশ আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছিল। তাঁর গলায় একটি শক্ত শিকল পেঁচানো অবস্থায় পাওয়া যায়। কাছের একটি ঘরে আলমারি খোলা। তার জিনিসপত্র বাইরে ছড়ানো। মৃতার কানের সোনার দুলের খোঁজ নেই। পুলিশ জেনেছে, ঘটনার দু’দিন আগে স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যান পূর্ণিমাদেবীর ছেলে। হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভোগা লক্ষ্মীবাবু অন্য দিনের মতো মঙ্গলবারও হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। বাড়ির পিছনের দরজার কাছে রাতের রান্নার জন্য কাঠ কাটছিলেন পূর্ণিমাদেবী। সামনের দরজা বন্ধ ছিল। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ বাড়ি ফেরেন লক্ষ্মীবাবু।
ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে সামগ্রী। —নিজস্ব চিত্র।
বাড়ির পরিস্থিতি দেখে প্রথমে পুলিশ ডাকাতি করতে এসে খুনের ঘটনা বলে মনে করলেও পরে ধারণা পাল্টায়। পুলিশ জানতে পারে, লক্ষ্মীবাবুর ডেকরেটিং জিনিসপত্রের ব্যবসা ছিল। কিন্তু এখন পরিবারটির আর্থিক অবস্থা বিশেষ ভাল নয়। বাড়িতে কোনও দামি জিনিসপত্রও ছিল না। তা ছাড়া এলাকাটি জনবহুল। বিকেল বা সন্ধ্যায় ডাকাত দল ঢুকলে এলাকাবাসী টের পেতেন। পুলিশের দাবি, তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই সময়ে কোনও অপরিচিত লোকজন বা গাড়ি এলাকায় দেখেননি আশপাশের বাসিন্দারা। পূর্ণিমাদেবীর গলায় পেঁচানো শিকল দেখে পুলিশের অনুমান, খুনের উদ্দেশ্য নিয়েই বাড়িতে ঢুকেছিল আততায়ী। পূর্ণিমাদেবীও তাঁকে বা তাঁদের চিনতেন। তাই বাড়ির মধ্যে ঢুকতে দিয়েছিলেন। লক্ষ্মীবাবুর বিকেলে হাঁটতে যাওয়া ও তাঁদের ছেলের বাড়িতে না থাকার বিষয়টিও খুনির জানা ছিল। পুলিশের ধারণা, খুনের পরে ঘটনাটিকে আদতে ডাকাতি বলে প্রমাণ করতেই প্রৌঢ়ার কান থেকে দুল খুলে নেয় ও জিনিসপত্র ছড়িয়ে দিয়ে যায় দুষ্কৃতী।
পূর্ণিমাদেবীর ভাই পরেশনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “জামাইবাবুর যখন ব্যবসার রমরমা ছিল তখন এমন ঘটলে বুঝতাম, ডাকাত এসেছিল। কিন্তু ইদানীং দিদির সংসার চলত বেশ কষ্টে। এখন ডাকাতেরা এসে দিদিকে খুন করে গিয়েছে, এ কথা আমরা মানতে পারছি না। পুলিশের কাছে ঘটনার দ্রুত কিনারার দাবি জানাচ্ছি।”
ওই রাতে ঘটনাস্থলে তদন্তে থাকা এক পুলিশ অফিসার বলেন, “ডাকাতিই উদ্দেশ্য হলে ওই মহিলার হাত, পা ও মুখ বেঁধে দুষ্কৃতীরা কাজ সারতে পারত। পুরো ঘটনা নিয়ে আমরা মৃতার পরিচিতদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।” মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিক বুধবার বলেন, “খুনের ঘটনায় কিছু তথ্য মিলেছে। দোষীদের শীঘ্র গ্রেফতার করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.