বেমানান
বাঁশঝাড় ও কচুবন। শিলিগুড়ি শহরে।
বাঁশ নিয়ে প্রবাদ, গল্প কথা তো সেই আদিকাল থেকেই। সেই কারণেই এক বাঁশ ঝাড় নিয়েই কড়চায় নাতিদীর্ঘ লেখা পাঠানো বা তৈরি করা কি এক বেমানান কাজ নয়? চার তলা বাড়ির পাশে এক বাঁশঝাড় আজও যে টিকে আছে, জমি জল্লাদদের শ্যেন দৃষ্টি বাঁচিয়ে সেটাও কি কম আশ্চর্য? প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড কংক্রিটের চাদর দিয়ে মোড়া হর্ম্যরাজি এই বাঁশ ঝাড়ের এখনও শ্বাসরোধ করতে পারেনি। সেটা ভেবেও তো নিদারুণ ভাবেই অবাক হতে হয়! আশঙ্কা হয় জমি হাঙ্গররা ২৫ লক্ষ কী তারও বেশি কাঠা প্রতি দাম দিয়ে শাবল, গাইতি দিয়ে শিকড় সুদ্ধ উপড়ে ফেলতে সচেষ্ট না হয়। কাঠা বারো জমির দাম তিন কোটি টাকা গুণে দিতে জমির জল্লাদদের এক মুহূর্তও দেরি হবে না। মুম্বইয়ের মেরিনড্রাইভের সন্নিকটের এক ফ্ল্যাটের দাম উঠেছিল চৌত্রিশ কোটি টাকা। শিলিগুড়িতেও ২২ কাঠা জমিতে প্রায় ত্রিশটির মতো ফ্ল্যাট উঠে যাবে তরতর করে। পঞ্চাশ লাখ দিয়ে ফ্ল্যাট কিনে নেওয়ার লোকের অভাব নেই এলাকায়। সব ফ্ল্যাট এবং গ্যারেজ বিক্রি করার পর ১৫ থেকে ১৮ কোটি টাকার ব্যবসা কী খুব কঠিন? তা এই শিলিগুড়িতে একেবারেই কঠিন নয়।
হিমালয় প্রমাণ টাকার হাতছানি সত্ত্বেও জমি হাঙ্গরদের শ্যেন দৃষ্টিকে বাঁচিয়ে বাঁশগাছগুলো দাঁড়িয়ে থাকে কী ভাবে? এক দিকে পনেরো কোটি টাকার ব্যবসার জন্য জল্লাদ বাহিনীর জমায়েত অন্য দিকে বাঁশঝাড় কচুবনের এ চরম বৈপরীত্য কি আমাদের বিস্মিত করে না? এই আশঙ্কাই দৃঢ় হয় যে আর কত দিন এই সবুজের আয়ু?
শিলিগুড়ির জমির দালালদের সঙ্গে হাঙ্গরের তুলনাটা যুক্তিসম্মত। হাঙ্গররা, কোবরারা কী কথা বলতে পারে। শিলিগুড়িতে জমির দালালদের মুখের ভাষা সাপের বিষের চেয়েও খারাপ। প্রোমোটারের হাঁ হাঙ্গরদের চেয়েও গভীর। নিঃশ্বাসে বিষ কোবরার চেয়েও ভয়ানক। সম্প্রতি শিলিগুড়ি পুরসভা কর্তৃপক্ষ হিলকার্ট রোডে দশতলা বাড়ি প্ল্যানের অনুমোদন দিয়েছে। বিগত কুড়ি বছর ধরে শিলিগুড়িতে যে ভাবে জমির হস্তান্তর ঘটে, সে তুলনায় সিঙ্গুর বা নন্দীগ্রামের জমির আন্দোলনকেও নেহাত ছেলেমানুষি বলে মনে হয়। বহু আগে থেকে শিলিগুড়ি জমি কোটিপতি প্রোমোটারের হাতে। নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত শিলিগুড়ি থাকার কথা ভাবতে পারে না।

লেখা ও ছবি: শান্তনু বসু।
চালসা বাগানে প্রকৃতি শিবির
এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্নেহা’ (সোসাইটি ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন) -এর উদ্যোগে প্রকৃতিপাঠ শিবিরের আয়োজন করা হয়। শিবির বসেছিল আকর্ষণীয় এক প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে। সবুজের গালিচা পাতা সমান করে ছাঁটা চা-ক্ষেত্র চালসা চা-বাগান। দিগন্ত ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে আছে ভুটান পাহাড়। নদীর ও পাড়ে চাপরামারির জঙ্গলমহল। শিবিরে অংশ নিয়েছিল বিন্দু বিশ্ব, শ্রীবাস দাস, অতীন কুমার কুজ্জর, মহফুজ আলশা, সাধনা ইয়াসমিন, মমতা বেগম প্রমুখ। ওরা এসেছিল ওদলাবাড়ি, চালসা, মাল, রাজডাঙ্গা থেকে। প্রায় ৬০ জন উৎসাহী শিক্ষার্থী বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে শিখল প্রকৃতি পাঠের অ আ ক খ। শিবিরে স্বরূপ মিত্র হাতেকলমে শেখালেন নদী পারাপারের কৌশল, ট্রেকিংয়ে ব্যবহার্য দড়ির বাঁধন (নট), সাজসরঞ্জামের ব্যবহার। জঙ্গলে থাকাকালীন রান্নাবান্না করা, বন্যজন্তুর হাত থেকে রক্ষা ও শীত থেকে রেহাই পাবার জন্য যে আগুন অপরিহার্য, তা জোগাড় করতে হবে কীভাবে। শিক্ষার্থীদের জঙ্গলে আগুন ব্যবহারের প্রয়োগ-প্রণালীটিও শিখিয়ে দেওয়া হল। মাউন্টেনিয়ারিং ও অ্যাডভেঞ্চারার্স স্পোর্টস সম্পর্কে বলেন আসান লেপচা। অধ্যাপিকা তপতী সাহা প্রকৃতিপাঠ শিবিরে অংশ গ্রহণের মানসিকতা, শিবিরে যোগদানের জন্য উপযুক্ত পোশাক সম্পর্কে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন। বুঝিয়ে দেন নিজেদের অস্তিত্বকে বজায় রাখার জন্যই প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার প্রয়োজনীয়তা কতখানি। একদিনের এই শিবির শেষে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় শংসাপত্র। সংস্থার কর্ণধার প্রভাস দে জানান, আর্থিক সাহায্য পেলে এ ধরনের শিবির আমরা পরবর্তী কালে আরও করব।

চা বাগানে প্রকৃতি পাঠ। লেখা ও ছবি অনিতা দত্ত।

ওরা ৪ জন
ওরা চার জন, আকাশ পাখোয়ান, সৌরভ জোশী, দীপা জোশী, মেধা জোশী। আকাশ আর সৌরভ সোনাউল্লা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির ছাত্র। মাড়োয়ারি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী দীপা পড়ে অষ্টম শ্রেণিতে। আর মেধা সেন্ট্রাল গার্লস স্কুলে দশম শ্রেণিতে। এ বছর ডিসেম্বর মাসে অন্ধ্রপ্রদেশে অনুষ্ঠিত হল স্কুল ন্যাশনাল ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্ট। স্কুল ন্যাশনাল লেভেলে সাব-জুনিয়র বিভাগের চ্যাম্পিয়ন আকাশ, দীপা আর মেধা। ডিসেম্বরেই পটনায় অনুষ্ঠিত হয় ওপেন ন্যাশনাল ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্ট। সেই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় সৌরভ। দীর্ঘ দিন পর এই বিভাগে শহর জলপাগুড়ি সাফল্য পেল। ওরা চার জনই জলপাইগুড়ি ইন্ডোর গেমস প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের বাডমিন্টন শিক্ষার্থী। কী ভাবে এল এ সাফল্য? আকাশরা বলে, সারা বছরের অনুশীলন আর স্যারদের টিপস। স্যার অর্থাৎ মুখ্য প্রশিক্ষক রতন গুহ এবং তাঁর তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণের দায়িত্বে থাকা সোমনাথ সরকার এবং রিঙ্কি যাদব। তাঁরা জানান, সার বছর ধরেই এখানে অনুশীলন চলে। অনুশীলনই প্রথম ও শেষ কথা। বেঙ্গল লেভেলে লক্ষ্য থাকলেও ইন্ডিয়া লেভেলে জেতা চাই। সম্পাদক সুদীপ দেব বলেন, সংস্থা, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীএই তিনের সার্থক মেলবন্ধনে এই সাফল্য। এই মেলবন্ধন মেধাদের এক দিন নিশ্চয় লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে।

লেখা ও ছবি: সুদীপ দত্ত।

জয় বজরঙ্গবলী
এই ধরাধামে মানুষ জীবিকার টানে কত কী যে করে তার ইয়ত্তা নেই। এক অদ্ভুত জীবিকার মানুষকে পেয়েছিলাম কোচবিহার ভবানীগঞ্জ সংলগ্ন একটি স্থানে। সাজগোজের সরঞ্জাম সামনে নিয়ে করছিলেন মেকআপ। সাজবেন বজরংবলী। এই বজরংবলী সেজেই কোচবিহারের রাজপথে ঘুরে রুজির সন্ধান করবেন। তিনি সন্তোষপ্রসাদ শ্রীবাস্তব। বাড়ি ধূপগুড়িতে। প্রতিদিন কোচবিহারে এসে সেজে নেন বজরংবললী তার পর পথে পথে সারা দিন। যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চলে যায়। পড়াশুনা শেখেনি তাই আক্ষেপও রয়েছে। সন্তোষপ্রসাদের ইচ্ছে আছে বজরংবলি চরিত্রে অভিনয় করার। পথে যদি কারও নজর পড়ে যায়।

লেখা ও ছবি: শুভাশিস দাশ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.