স্কুলে না গিয়ে সই, শো-কজ ১৫ জন শিক্ষককে
হাজিরা খাতায় শিক্ষকের সই রয়েছে। কিন্তু যাঁর সই, তিনি নেই। তাই স্কুল থাকলেও পড়া নেই।
প্রাথমিক স্কুলে এমন অভিযোগ নতুন কিছু নয়। তবে জলপাইগুড়িতে অভিভাবকদের টনক নড়ায় সে খবর পৌঁছে যায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান ধর্তিমোহন রায়ের কানে। তিনি নিজেই স্কুলে স্কুলে গিয়ে দেখেন, অভিযোগ সত্যি। আর তারপরেই জেলার বিভিন্ন স্কুলের ১৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ‘কারণ দর্শানোর’ নোটিস পাঠিয়েছেন। তাঁর কথায়, “অনেক স্কুলে নিজেই গিয়েছিলাম। সেখানে হাজিরায় কারচুপি দেখে চমকে গিয়েছি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখেছি, হাজিরা খাতায় সই আছে। অথচ সংশ্লিষ্ট শিক্ষক স্কুলে নেই। প্রথম পর্যায়ে ১৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার কাছ থেকে জানতে চেয়েছি, কেন তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?” পাশাপাশি, দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে গরহাজির থাকার জন্য ৫ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে জলপাইগুড়ি প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ।
স্কুলে শিক্ষক থাকেন না, পড়ুয়ারা সারা দিন খেলাধুলো করে বাড়ি চলে যায় এমন অভিযোগ অন্য স্কুলেও রয়েছে। কিন্তু শিক্ষকেরা কী করে এই ভাবে ফাঁকি দিতে পারেন? অভিযোগ, কিছু স্কুলের প্রধান শিক্ষকের প্রশ্রয়েই এই কাণ্ড ঘটে। আবার প্রধান শিক্ষকদের দাবি, বেশিরভাগ স্কুলেই যত জন দরকার, তত জন শিক্ষক নেই। তাই স্কুলেরই নানা কাজে তাঁদের বাইরে থাকতে হয়। তাতে পড়ানো ব্যাহত হয় ঠিকই, তবে তাঁরা কোনও কারচুপি করছেন না। সেবাগ্রাম আর আর প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক নির্মলকুমার মিত্র বলেন, “অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। কিন্তু অনেক সময়ে স্কুলের কাজেই বাইরে থাকতে হয়। মিড ডে মিলের বাজারও আমাকেই করতে হয়। তাই নিয়মিত ক্লাস নিতে পারি না।” নিউ টাউনপাড়ার এক প্রাথমিক শিক্ষককে শো-কজ করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমি স্কুলে সই করে ক্লাস শুরু করেছিলাম। জরুরি কাজ পড়ায় একটু বাইরে যাই। তখনই চেয়ারম্যান গিয়েছিলেন। শো-কজ না-করে আমাকে মুখে বললেই হত।”
তবে সব ক্ষেত্রে পরিস্থিতি এমন নয়। জলপাইগুড়িতে ২০২৯টি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, অনেক স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে হাজিরা খাতায় সই করে নানা ব্যক্তিগত কাজ করে থাকেন। পাহাড়পুর এলাকার বাসিন্দা অমল রায় বলেন, “আমার ছেলে স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলে পড়ে। বেশির ভাগ দিনই দেখি, স্কুল তড়িঘড়ি ছুটি হয়ে যায়। মাস্টারমশায় হাজিরা খাতায় সই করে ‘তোমরা নিজেরা পড়ে মিড ডে মিল খেয়ে বাড়ি যেও’ বলে চলে গিয়েছেন। সে কথা নতুন চেয়ারম্যানকে বলেছিলাম। উনি যে ভাবে চেষ্টা করছেন তাতে আশার আলো দেখছি।” ধতির্র্মোহনবাবু অবশ্য আরও অনেক অভিযোগ পেয়েছেন। তাঁর কথায়, “একজন শিক্ষক অন্য জনের হয়ে সই করে দেন। এ ভাবে অনেক স্কুলে পালা করে গরহাজির থাকেন অনেক শিক্ষক। কেউ সই করে ব্যবসা করতে চলে যান। এ সব বরদাস্ত হবে না।” তিনি পাশে পেয়েছেন ডান-বাম বেশির ভাগ সংগঠনের নেতাই। সিপিএম প্রভাবিত এবিপিটিএ-র জেলা সম্পাদক বীরেশ সিকদার এবং তৃণমূলের শিক্ষা সেলের জেলা আহ্বায়ক জয়ন্ত কর জানান, খুবই সদর্থক উদ্যোগ নিয়েছে সংসদ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.