|
|
|
|
ফের বিক্ষোভ এনভিএফদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
কাজ চেয়ে জাতীয় স্বেচ্ছাসেবী বাহিনীর (এনভিএফ) বিক্ষোভ চলছেই পশ্চিম মেদিনীপুরে।
সরকার অনুমোদিত যত পদ রয়েছে, তার তুলনায় অনেক বেশি এনভিএফ নিয়োগ করার ফলে কাজ দেওয়া নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। কাজের দাবিতে এনভিএফদের বিক্ষোভ প্রথম শুরু হয়েছিল মাস তিনেক আগে। তারপরে প্রথম দফায় প্রশিক্ষণ নিয়ে আসা ৯১৭ জনকে কাজের ব্যবস্থা করে প্রশাসন। জটিলতা দেখা দেয়, প্রশিক্ষণ নিয়ে দ্বিতীয় দফায় আরও ১১৯৭ জন আসার পর। তাঁদের কাজ দেওয়ার জন্য প্রথম দফার ৯১৭ জনকে তিন মাস বসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে সোমবার তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। প্রশাসনিক কর্তারা বুঝিয়ে বিক্ষোভ সামাল দিয়েছিলেন বটে, কিন্তু ক্ষোভের আগুন নেভাতে পারেননি। এনভিএফদের বক্তব্য, শুধু মুখের কথায় কাজ হবে না। প্রশাসনকে লিখিত ভাবে কাজ দেওয়ার কথা জানাতে হবে। এই দাবিতেই স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে বুধবার ফের জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভের পর অতিরিক্ত জেলাশাসক রজত সাইনি (সাধারণ) ও অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সুমন ঘোষ বৈঠক করেন। |
 |
বিক্ষোভে এনভিএফ কর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র। |
৫ জন বিক্ষোভকারীর সঙ্গেও কথা বলেন তাঁরা। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে বেরিয়ে আসার পর ওই ৫ জন প্রতিনিধি বলেন, “প্রশাসন জানিয়েছে, আমাদের দাবি উধ্বর্র্তন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবেন। এই বিষয়ে জেলা প্রশাসন কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। তাই আমরা সবাই মিলে আলোচনা করে কলকাতায় বিক্ষোভ দেখাতে যাব।” অনেকে আবার তার মধ্যেই চিৎকার করে বলেন, “৫ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী আসছেন। ওই দিনই সকলে পুলিশের পোশাক পরে বিক্ষোভ দেখাব।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সরকার অনুমোদিত এনভিএফ পদ রয়েছে প্রায় ১২০০টি। কাজ করলেই টাকা মিলবে এই শর্তেই চাকরি দেওয়া হয়। ওই পদে আগেই কিছু লোক কাজ করছিলেন। পরবর্তী কালে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী জঙ্গলমহলের ৩টি জেলা থেকে ৫ হাজার এনভিএফ নিয়োগ করা হয়। তার মধ্যে প্রশিক্ষণ নিয়ে দু’দফায় প্রায় ২১০০ জন এনভিএফ জেলায় এসেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই কর্মী সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু কাজের জায়গা কমেছে। আরও কিছু এনভিএফের প্রশিক্ষণ চলছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। যাঁদের এই জেলাতেই পাঠানোর কথা। তখন এই সংখ্যাটা আরও বাড়বে। এনভিএফদের আশঙ্কা, এই ভাবে সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে-সঙ্গে কাজ কমবে সকলের। সকলকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কাজ দিতে হলে এক জন বছরে ৩ মাসও কাজ পাবেন কি না আশঙ্কা। তাই বর্তমানে যাঁরা কাজ পেয়েছেন এবং যাঁদের বসিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁরা যৌথ ভাবেই আন্দোলন শুরু করেছেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ ব্যাপারে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা রাজ্য সরকারকেই নিতে হবে। যদি এই খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে বেশি পদ সৃষ্টি করা হয় তবেই এনভিএফদের বেশি কাজ দেওয়া যাবে। নতুবা যে ক’জন রয়েছেন তাঁদের এই ভাবেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কাজ দিতে হবে। এর বাইরে জেলা প্রশাসনের কিছুই করার নেই। অতিরিক্ত জেলাশাসক রজত সাইনি বলেন, “আমরা এনভিএফদের দাবিগুলি রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। এ বার সরকার যা সিদ্ধান্ত নেবে সেই মতোই আমরা পদক্ষেপ করব।” |
|
|
 |
|
|