সুচিত্রা মাহাতো-সহ রাজ্যের ৩২ জন আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীর সঙ্গে শনিবার দুপুরে মহাকরণে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেমন আছেন তাঁরা, প্রতিশ্রুত সুযোগ-সুবিধার কতটা কী পাচ্ছেন, এই সব জানতেই এই বৈঠক। এ দিনই বাঁকুড়ায় তিন মাওবাদী স্কোয়াড সদস্য আত্মসমর্পণ করেছে বলে জেলা পুলিশ সূত্রের খবর।
আগামী ৫ জানুয়ারি মেদিনীপুরের কলেজ মাঠে যুব উৎসবের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিত থাকার কথা। ওই অনুষ্ঠান মঞ্চে আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের হাজির করানো এবং রাজ্য সরকারের পুনর্বাসন প্যাকেজ পেয়ে তাঁরা কী রকম রয়েছেন, সে কথা তাঁদের দিয়েই বলাতে উদ্যোগী হয়েছে পুলিশ-প্রশাসনের একাংশ। মহাকরণের বৈঠকটিকে তারই প্রস্তুতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে আইবি সূত্রের খবর, জঙ্গলমহলের কিছু কিছু এলাকায় মাওবাদীরা ইদানীং নতুন করে সংগঠিত হচ্ছে এবং পঞ্চায়েত ভোটের মুখে তারা বড়সড় কোনও হামলার ছক কষছে বলে গোয়েন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী এই ব্যাপারে সুচিত্রাদের সহযোগিতা চান।
এ দিনের বৈঠকটি নিয়ে যথাসম্ভব গোপনীয়তা অবলম্বন করেছিল প্রশাসন। রাজ্য গোয়েন্দা শাখার (আইবি) অফিসাররা তিনটি গাড়িতে ওই আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের মহাকরণে নিয়ে আসেন। সরকার ঘোষিত প্যাকেজ তাঁদের কাছে ঠিক মতো পৌঁছচ্ছে কি না, সেই সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী। শোনেন তাঁদের অভাব-অভিযোগও। প্রতি মাসে নগদ দু’হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য পেলেও চাকরি না-হওয়া নিয়ে প্রায় প্রত্যেকেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে মহাকরণ সূত্রে জানা গিয়েছে।
মাস আড়াই আগে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দুই আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী জেলার পুলিশ সুপারকে কিছু না-জানিয়ে হঠাৎই মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চলে আসেন। অভিযোগ ছিল, নিয়মিত পুনর্বাসন প্যাকেজের টাকা ও প্রতিশ্রুতি মতো চাকরিও পাননি তাঁরা। এ দিকে, বাঁকুড়া পুলিশ জানিয়েছে শনিবার এক মহিলা-সহ তিন মাওবাদী স্কোয়াড সদস্য আত্মসমর্পণ করেছেন। জেলার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারের দাবি, “এঁরা হলেন বাসন্তী টুডু ওরফে মালতি, বুদ্ধদেব মান্ডি ওরফে মন্ত্রী এবং সুখদেব সিং সর্দার ওরফে দামু। বাসন্তীর কাছে শিলদায় ইএফআর ক্যাম্প থেকে লুঠ হওয়া একটি ইনসাস মিলেছে। বাকিরা দু’টি দোনলা বন্দুক জমা দিয়েছে।” ওই তিন জনকে নিয়ে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের মোট সংখ্যা দাঁড়াল ৩৬। |