ম্যাচ শেষ হওয়ার পর পরই বেশ কয়েকটা ফোন পেলাম। অনেকেই জিজ্ঞেস করছেন, অশোক দিন্দা আরও একটা চেতন শর্মা হয়ে গেল কি না?
প্রথমেই বলে রাখি, আমি সেটা মনে করি না। চেতন শর্মার শেষ বলে ছয় খাওয়ার সঙ্গে যদি দিন্দার তুলনা হয়, অত্যন্ত অন্যায় হবে। আরে, ও তো ম্যাচটা প্রায় জিতিয়েই দিয়েছিল ভারতকে। প্রথম পাঁচটা বল ভাবুন। ধোনি নিজে কী করল? শেষ ওভারে ইয়ন মর্গ্যানের রান আউট মিসের সাফাই আছে ওর কাছে? ম্যাচটার টার্নিং পয়েন্ট তো ওটাই। মর্গ্যান তখন আউট হয়ে গেলে কে ছয় মারত দিন্দাকে?
আমি আরও একটা ব্যাপার বুঝতে পারলাম না। দিন্দা যখন প্রথম পাঁচটা বল অত ভাল করল, কোন যুক্তিতে শেষ বলের আগে ও রকম আলোচনার ক্লাস বসাল ধোনি? এটা তো পরিষ্কার পেসারকে বুঝিয়ে দেওয়া যে, তোমার উপর বিশেষ আস্থা নেই। ধোনির এ সব না করে উচিত, দিন্দাকে টেস্ট দলে রাখা। দু’টো টি-টোয়েন্টি খেলিয়ে বসিয়ে রাখাটা কোনও পেসারের পক্ষে ভাল হতে পারে না।
আর ধোনি নিজের স্বজনপোষণটাও ছাড়ুক। নিজের অধিনায়কত্ব, কিপিংয়ে মন দিক। আজ ম্যাচটা ধোনি অনেক আগেই হেরে যেত, দিন্দা না থাকলে। শেষ বলের নাটক পর্যন্ত ম্যাচটা যেতই না। পরিষ্কার বলে রাখি, দিন্দা এই মুহূর্তে দেশের সেরা পেসারদের একজন শুধু নয়। ওর ভয়ডর বলেও কোনও ব্যাপার নেই। ‘ডেথ’-এ বল করতে ও এতটুকু ঘাবড়ায় না। পুণে-তেও ‘ডেথ’-এ বল করতে এসে দু’রান দিয়ে দু’উইকেট পেয়েছিল। |
শেষ রক্ষা হল না। শনিবার মুম্বইয়ে ম্যাচ শেষে দিন্দা। ছবি: পিটিআই |
ধোনি বরং ভাবুক, অশ্বিনের অবস্থা নিয়ে। সত্যি, ওকে দেখে আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি। যুবরাজ সিংহ যেখানে পরপর উইকেট পাচ্ছে, সেখানে অশ্বিন স্রেফ ‘খুন’ হয়ে যাচ্ছে। অশ্বিনের মুশকিল হল, যে পিচে বল ঘুরবে না, সেখানে ও কিছুই করতে পারবে না। না টার্ন পাবে, না ‘ক্যারম বল’ কাজ করবে। যুবরাজের মতো পাটা পিচে কী ভাবে গতির হেরফের ঘটিয়ে উইকেট তুলতে হয়, সেটাও ওর জানা নেই। আর টিমে পীযুষ চাওলা কী করছে, জানতে পারি কি? রঞ্জিতে ক’টা উইকেট আছে ওর? আমি যত দূর জানি ন’টা। ও কোন যুক্তিতে খেলছে? ক্যাপ্টেনের কাছের লোক বলে?
সোজাসাপ্টা বলি, ধোনির রান আউট মিস, অশ্বিনের জঘন্য পারফরম্যান্সের জন্যই আজ ম্যাচটা হেরে গেল ভারত। অনেকে বলবেন, গৌতম গম্ভীর স্লো খেলেছে। ঠিকই। কিন্তু রানটা তাতেও যথেষ্ট উঠেছিল। এক সময় ধোনিকে দেখতাম, এই সব টেনশনের ম্যাচ অনায়াসে বার করে ফেলতে। আজ সেটাও পারছে না। আমার তো মনে হয়, ধোনির টি-টোয়েন্টির ক্যাপ্টেন্সি কেড়ে নেওয়া উচিত। টেস্ট, টি-টোয়েন্টির দায়িত্ব বিরাট কোহলির মতো কাউকে দেওয়া হোক। ভাবতে পারেন, ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি টিমে একজনও তারকা নেই। মাঝারি একটা টিম। তা-ও কি না আমরা ছ’উইকেটে ম্যাচ হারছি! |