আজ মিছিলে নেই শরিকরা
সিপিএমের দাদাগিরি বন্ধের দাবি ফ্রন্টে
ঞ্চায়েত ভোটে সার্বিক ঐক্য গড়ার প্রসঙ্গে শুক্রবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল বামফ্রন্টের বৈঠক। সার্বিক ঐক্য গড়তে হলে সিপিএমকে ‘দাদাগিরি’ ছাড়তে হবে বলে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুর মুখের উপরেই জানিয়ে দিলেন আরএসপি-র ক্ষিতি গোস্বামী ও সিপিআইয়ের মঞ্জুকুমার মজুমদার। এই ভাষায় সম্প্রতি শরিকরা বামফ্রন্টের বৈঠকে মুখ খোলেননি।
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরেও সিপিএমের জেলা নেতারা একতরফা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন এবং দাদাগিরি চালিয়ে যাচ্ছেন এই অভিযোগ তুলে শরিক নেতারা জানান, তাঁরা আজ, শনিবার উত্তর ২৪ পরগনার মহামিছিল বয়কট করছেন। সিপিএম নেতা গৌতম দেব ঘোষণা করেছিলেন, বারাসত, লেক টাউন, ব্যারাকপুর ও কাঁচরাপাড়ায় চারটি মহামিছিল করা হবে। শরিকদের অভিযোগ, ওই মিছিল ফ্রন্টের বলে প্রচার হচ্ছে। কিন্তু জেলা স্তরে তাঁরা কিছুই জানেন না। প্রশ্ন হচ্ছে, সিপিএমের এহেন দাদাগিরি সত্ত্বেও কেন তাঁরা ফ্রন্ট ছাড়ছেন না? জবাবে মঞ্জু-ক্ষিতি জানান, সার্বিক বাম ঐক্যের স্বার্থে তাঁরা ফ্রন্টে থেকে সিপিএমকে সতর্ক করতে চান। অতীতেও তাই করেছেন। তাঁদের দাবি, তৃণমূল, কংগ্রেস, বিজেপি কোনও শক্তিই মেহনতি মানুষের স্বার্থের কথা ভাবে না। একমাত্র বামফ্রন্টই তা ভাবে।
এ দিনের বৈঠকে শরিকদের চাপে আসন বণ্টন নিয়ে সিপিএম নমনীয় মনোভাবের সিদ্ধান্ত নেয়। সাংবাদিক বৈঠকে বিমানবাবু বলেন, “অতীতের অনৈক্য থেকে শিক্ষা নিয়ে পথ চলতে হবে। অতীতে পঞ্চায়েত ভোটে অনৈক্যের জন্য সিপিএমেরও ত্রুটি ছিল। এ বার যে বামফ্রন্টের ঐক্যই শেষ কথা, সিপিএমের জেলা নেতাদের সেই বার্তা দেওয়া হচ্ছে।”
২০০৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটে কংগ্রেস দু’টি ও তৃণমূল দু’টি জেলা পরিষদ দখল করে। সেইসঙ্গে বহু পঞ্চায়েত সমিতিও তাদের দখলে যায়। পরে সমীক্ষা করতে গিয়ে সিপিএম দেখে, অনৈক্যের কারণে বেশ কিছু আসনে পরাজয় ঘটেছে। প্রায় ৬ হাজার আসনে শরিকদের সঙ্গে সিপিএমের ঐক্য হয়নি। সেইসঙ্গে আরও কয়েক হাজার আসনে গোঁজ প্রার্থী ছিল। বিমানবাবু জানান, গত পঞ্চায়েত ভোটের ফল দেখে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। শুক্রবার বিমানবাবু বলেন, “জ্যোতিবাবুর কথা থেকে শিক্ষা নিয়েই এ বার যে কোনও মূল্যে প্রত্যেক জেলায় সার্বিক ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। এক বার বৈঠকে তা না হলে বার বার বৈঠক করতে হবে। অতীতে না হলেও এ বার সার্বিক ঐক্য গড়ে তোলা সম্ভব।”
বৈঠকে বিমানবাবু সার্বিক ঐক্যের কথা বলতেই ক্ষিতিবাবু বলেন, শরিকদের এ কথা বলে কী হবে? ভোটে পরাজয়ের পরেও সিপিএমের জেলা নেতারা শিক্ষা নেননি। তাঁরা ভাবছেন, মানুষ মমতা-সরকারের নানা কাজে ক্ষুব্ধ। ক’দিনের মধ্যেই আবার বামেরা ক্ষমতায় ফিরবে। এখনও তাঁরা দাদাগিগির মনোভাব এবং ঔদ্ধত্য ত্যাগ করতে পারেননি। সার্বিক ঐক্য গড়তে জেলার সিপিএম নেতারা শরিকদের আসন ছাড়বেন, তার নিশ্চয়তা কোথায়? সেক্ষেত্রে আরএসপির রাজ্য নেতারা কর্মীদের কাছে মুখ দেখাবেন কি করে? গত ভোটে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী-গোসাবা ছাড়াও জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুরের জেলায় বহু আসনেই আরএসপি-র সঙ্গে সিপিএমের ঐক্য হয়নি।
এই সময়ে ফব-র হাফিজ আলম সৈরানি কিছু বলতে গেলে বিমানবাবু থামিয়ে দেন। সেই সূত্র তুলে ধরে সিপিআইয়ের মঞ্জুবাবু বলেন, সিপিএম নেতৃত্ব কোনও ব্যাপারেই ধৈর্য দেখাতে পারেন না। তাঁর অভিযোগ, ঐক্য সত্ত্বেও গত ভোটে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সিপিএম নেতারা সিপিআইয়ের বহু আসনে প্রতীক চিহ্নে গোঁজ প্রার্থী দিয়েছিলেন। ফরওয়ার্ড ব্লক নেতারা কোচবিহার জেলায় সিপিএম নেতাদের দাদাগিরির বিরুদ্ধে সরব হন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.