কামান দেগে বর্গি হামলা থেকে রক্ষা করা হয়েছিল মল্লরাজাদের রাজধানী বিষ্ণুপুরকে। সেই প্রচলিত কাহিনিই এ বার উঠে আসছে বিষ্ণুপুর মেলায়। রবিবার জাঁকজমক করেই শুরু হতে যাচ্ছে বিষ্ণুপুর মেলা। জাতীয় মেলার স্বীকৃতি পাওয়া বিষ্ণুপুর মেলা এ বার রজতজয়ন্তী বর্ষে পড়ল।
রাত ফুরোলেই শুরু হচ্ছে এই মেলা। তাই মেলা চত্বরে শুক্রবার থেকেই সাজ সাজ চেহারা দেখা গিয়েছে। কথিত রয়েছে মল্ল রাজধানী বিষ্ণুপুরে ভাস্কর পণ্ডিতের নেতৃত্বে বর্গি আক্রমণ হয়েছিল। কামান দেগে সেই হামলা প্রতিহত করেছিলেন বিষ্ণুপুরবাসীর আরাধ্য দেবতা মদনমোহন। পিছু হটেছিলেন ভাস্কর পণ্ডিত। মেলার প্রধান তোরণ দ্বারে এ বার শিল্পী অশোক সূত্রধরের তুলিতে চিত্রিত হয়েছে সেই কামান দাগার দৃশ্য। ভিতরে থাকছে যদুভট্ট, রামানন্দ, গোপেশ্বর এবং গীতাঞ্জলি নামাঙ্কিত চারটি মঞ্চ। এলাকার সম্ভ্রান্ত হস্তশিল্প বালুচরী, দশাবতার তাস, শঙ্খ, লন্ঠন, কাঁসা-পিতল, বিষ্ণুপুরী ধ্রুপদ, সাহিত্য-সংস্কৃতি, লোকগান এবং টেরাকোটা— বিষ্ণুপুরের সব সম্পদই থাকছে মেলায়। |
এমনই নানা ঐশ্বর্যে সমৃদ্ধ মন্দিরময় বিষ্ণুপুরকে তুলে ধরতে ২৪ বছর আগে সরকারি উদ্যোগে শুরু হয়েছিল বিষ্ণুপুর মেলা। এ বার সেই মেলা ২৫ বর্ষে পড়ছে। তাই প্রশাসনিক ভবন থেকে মেলা প্রাঙ্গণ, আলোকমালায় সেজে উঠেছে বিষ্ণুপুর। মেলা কমিটির সচিব তথা বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক অদীপকুমার রায় বলেন, “এ বারও স্থানীয় শিল্পীদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া বাপি লাহিড়ী, বিনোদ রাঠোর, অমিত কুমার, স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, লোপামুদ্রা মিত্র, শিবাজী চট্টোপাধ্যায়, অরুন্ধতী মুখোপাধ্যায় প্রমুখ শিল্পীও অনুষ্ঠান করবেন। তিনি জানান, মেলায় ২৬০টি স্টল থাকছে। তার মধ্যে ১২০টি স্টলে হস্তশিল্প সামগ্রী থাকবে। বিষ্ণুপুরের হস্তশিল্পীদের সঙ্গে মেলায় যোগ দিচ্ছেন পাঁচমুড়ার মৃৎশিল্পী, শুশুনিয়ার পাথর ও বিকনার ডোকরা শিল্পীরাও।” মেলা চলবে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। |